মুঠোফোন এখন আমাদের একটি অতি প্রয়োজনীয় একটি ডিভাইস। এটি ছাড়া আমাদের এক মুহূর্তও এখন আর চলে না। তবে মুঠোফোন নিয়ে আমাদের বিড়ম্বনারও শেষ নেই। দেখেশুনে এবং বুঝে না কিনলে এটি প্রয়োজনীয় না হয়ে বিরক্তির কারণ হতে পারে। মুঠোফোন কেনার সময় যেসব বিষয় লক্ষ্য রাখা উচিত সেগুলো নিয়ে আজ আলোচনা করা হলো :
ডিসপ্লে: মুঠোফোন কেনার সময় অনেকে ডিসপ্লে নিয়ে চিন্তায় থাকেন। এক্ষেত্রে নজর রাখতে হবে বড় আকারের ছবি মনিটরে প্রদর্শন করছে কিনা। রেজুলেশন এবং ছবির মধ্যে মিল আছে কিনা। এটি পরীক্ষার জন্য কম্পিউটার থেকে হাই রেজুলেশনের একটি ছবি নামিয়ে তা মোবাইলে দেখুন। যদি পরিষ্কার ভাবে দেখায় তাহলে ডিসপ্লেটি ভাল। অতঃপর লক্ষ্য করুন ছবির রঙের উজ্জ্বলতা ঠিক আছে কিনা। এবার আপনার মুঠোফোন ব্রাউজার বা নেট ওপেন করুন। তার পর সেখানে কিছু টাইপ করে দেখুন যে মুঠোফোনের ফন্ট বা লেখার আকৃতি কীরূপ। পরিষ্কার নাকি ঝাপসা?
টাচস্ক্রীন: জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে এখন কী প্যাডের চেয়ে টাচ বেশি এগিয়ে। টাচ স্ক্রীনের কিছু খারাপ দিকও আছে। এটি যখন তখন নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা থাকে। তাই অবশ্যই টাচ স্ক্রীন কেনার সময় সতর্ক হোন। পছন্দের মুঠোফোন থেকে মেসেজ বা নোটপ্যাড ওপেন করুন। এবার কিছু কথা চিন্তা করে নিন যা ৩০ সেকেন্ড বা এক মিনিটের মধ্যে লিখে ফেলা যায়। এবার সময় ধরে লিখতে শুরু করে দিন এবং নির্দিষ্ট সময়ে থেমে যান। দেখুন আপনার লেখাগুলো সঠিকভাবে টাইপ হয়েছে কিনা। যদি হয়ে থাকে তাহলে টাচপ্যাড ভাল আছে আর যদি না হয়ে থাকে তাহলে বুঝতে হবে প্যাডে সমস্যা আছে।
ক্যামেরা: হঠাৎ কোন মধুর মুহূর্তকে স্মৃতির পাতায় ধরে রাখতে আজকাল ক্যামেরা খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তাই মুঠোফোন কেনার সময় ক্যামেরা টা একটু পরীক্ষা করে নিন।
মুঠোফোনটির ক্যামেরা দিয়ে কিছু ছবি তুলুন। ছবিগুলো যেন আবশ্যই ফুল সাইজের হয়। তোলার সময় অপশন থেকে কালার ঠিক করে নেয়াও জরুরি। এবার তোলা ছবিগুলো ভাল করে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখুন। যদি ছবিগুলো পরিষ্কার এবং রঙ ঠিক থাকে তাহলে বুঝতে হবে ক্যামেরা ঠিক আছে। এবার কিছু ভিডিও করে দেখুন যদি ভিডিওটি ভাল দেখা যায় তাহলে মুঠোফোনের ক্যামেরা ভালো আছে বুঝতে হবে। আর কেনার সময় অবশ্যই পিকজেল দেখে নিবেন। অনেক মুঠোফোনে বড় আকারের পিক্সেল লেখা থাকলেও বাস্তবে তা থাকে না।
ডিজাইন: বর্তমান সময়ে মুঠোফোন মানুষের ব্যক্তিত্ব প্রকাশের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে। আর তাই মুঠোফোন কেনার সময় এর ডিজাইন সম্পর্কে অবশ্যই সতর্ক হোন। ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানানসই এবং বহনে সহজ কেনার সময় এমন মুঠোফোনই বেছে নিতে হবে।
ক্ষমতা: মুঠোফোন কেনার সময় এর কার্যক্ষমতা দেখে নিন। প্যাকেটের কথার সাথে মুঠোফোনের কার্যক্ষমতার মিল আছে কিনা তা ভাল করে যাচাই করে নিন। সকল প্রকার রিসিট, ওয়ারেন্টি, গ্যারান্টি, ব্যাটারী চার্জ কতক্ষণ থাকবে এসব দেখে কিনুন।
নেটওয়ার্ক: কেনার সময় ভালো মানের এবং শক্তিশালী নেটওয়ার্কের মোবাইল কিনুন। মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক ভালো না থাকলে এটা সারাজীবন জ্বালাবে। মুঠোফোনের ইন্টারনেট ও সিমের নেটওয়ার্ক ঠিক আছে কিনা বা পরবর্তীতে সমস্যা দেখা দিতে পারে কিনা তা দেখে নিন।
প্রসেসর: মুঠোফোনের কার্যক্ষমতার ক্ষেত্রে প্রসেসর গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে সুতরাং প্রসেসরের কার্যক্ষমতা দেখে নিন।
মুঠোফোন থেকে একটি ভালো মানের ভিডিও প্লে করুন। যদি ভিডিওটি ভালো করে চলতে থাকে এবং কোনো সমস্যা না দেখা দেয় তাহলে তা বন্ধ করুন। এবার খেয়াল করুন ভিডিওটি ওপেন হয়ে প্লে হতে কত সময় নিচ্ছে। মূলত এটার ওপরই নির্ভর করে বুঝা যায় প্রসেসরের ক্ষমতা কম না বেশি। এবার মুঠোফোনে সেটআপ থাকা কিছু এপ্লিকেশন ওপেন করুন এবং ভিডিও ক্যামেরা অন করে ভিডিও করতে থাকুন। যদি প্রসেসর থেমে যায় বা মুঠোফোন কাজ না করে কিছুক্ষণ অফ হয়ে থাকে তবে বুঝতে হবে প্রসেসরটি ভালো মানের নয়।
সাউন্ড: মুঠোফোন কেনার সময় এর সাউন্ড বা স্পিকারের কোয়ালিটি দেখে কিনুন। মুঠোফোনের এমপিথ্রি প্লেয়ার ওপেন করে গান ছেড়ে দিন ফুল ভলিউমে। এবার নিজেই বুঝতে পারবেন এর সাউন্ড এবং স্পিকার ভালোমানের কিনা। একইভাবে হেডফোনও চেক করে নিন।
বিডি-প্রতিদিন/১৪ জুলাই ২০১৫/শরীফ