শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
সংক্ষিপ্ত

আজ পবিত্র শবেমেরাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ হিজরি সনের ২৬ রজব মোতাবেক ১৮ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত পবিত্র শবেমেরাজ। আরবিতে লাইলাতুল মেরাজ। অর্থ ঊর্ধ্বগমনের রাত। ফারসি শবেমেরাজ অর্থও একই। এই রাতে আল্লাহর প্রিয় হাবিব, নবী ও রসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.) ঊর্ধ্বাকাশ ভ্রমণের পর আল্লাহর দিদার লাভ করেছিলেন। তাই মুসলিম উম্মাহ এই রাতের বরকত পাওয়ার আশায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পালন করে থাকেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ উপলক্ষে আজ শনিবার বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ‘পবিত্র শবেমেরাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভা, দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করেছে। এ ছাড়া আজ দেশের বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা-খানকা, দরগাহসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন শবেমেরাজ উপলক্ষে ওয়াজ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে।

গতকাল বায়তুল মোকাররম মসজিদসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদে শবেমেরাজের তাৎপর্য তুলে ধরে খতিবরা বয়ান করেছেন। মেরাজের রাতকে আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতার প্রকাশ হিসেবে বয়ানে উল্লেখ করা হয়। পবিত্র কোরআন থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বয়ানে জগৎসমূহের মালিক ও সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহ রব্বুল আলামিন কীভাবে পবিত্র এই রাতকে বরকতময় ঘোষণা দিয়ে আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে বিশেষ মর্যাদায় আসীন করেছেন এবং আরশে আজিমে নিয়ে গিয়ে নিজ দিদারে ধন্য করেছেন তা তুলে ধরা হয়। এই মেরাজের অসিলায় উম্মতে মুহাম্মদী দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সওগাত এবং নামাজে দিদারে ইলাহির সওয়াব লাভের সুসংবাদ পান।

পবিত্র এই রাতে আল্লাহর প্রিয় হাবিব প্রথমে মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত ভ্রমণ করেন। পবিত্র কোরআনে একে ইসরা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ জন্য সুরা বনি ইসরাইলের আরেক নাম সুরা ইসরা। সেখান থেকে সাত আসমান পেরিয়ে বায়তুল মামুর ও সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত  ভ্রমণে নবীজির সঙ্গী ছিলেন হজরত জিবরাইল (আ.)। এরপর সিদরাতুল মুনতাহা থেকে আরশে আজিম পর্যন্ত একাকী ভ্রমণ ও আল্লাহর দিদারের অনুমোদন পান তাঁর প্রিয় হাবিব হজরত মুহাম্মদ (সা.)। পবিত্র কোরআনের সুরা আন নজমে আল্লাহ সুবহান ওয়াতায়ালা নিজেই মুহাম্মদ (সা.)-এর মেরাজ সম্পর্কে সাক্ষ্য প্রদান করেন।

১৪০০ বছরেরও আগে আখেরি নবী ও রসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.) মানুষকে আলোর পথ দেখাতে ইসলামের প্রচার শুরু করেন। ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন তিনি। নবুয়ত প্রাপ্তির একাদশ বছরে অর্থাৎ ৫১ বছর বয়সে আরবি রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে পবিত্র মহান আল্লাহতায়ালার বিশেষ মেহমান হিসেবে তিনি ফেরেশতাদের সরদার হজরত জিবরাইলের (আ.) সঙ্গে প্রথম মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস মসজিদ পর্যন্ত ও পরে সেখান থেকে সাত আসমান পেরিয়ে আল্লাহর দিদারে আরশে আজিম পর্যন্ত গমনের সৌভাগ্য লাভ করেন। আল্লাহর দিদার লাভের এ রজনীকে মেরাজ বলা হয়। আল্লাহ উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য এ সময় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান প্রদান করেন। মেরাজ থেকে ফিরে তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য উম্মতে মুহাম্মদীকে নিয়ে ব্যক্তি ও সামাজিকভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর থেকে মুসলমানদের কাছে রাতটি বরকতময় রাত হিসেবে পরিচিত। এই রাতে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, জিকির আসকার ও নফল ইবাদতে মশগুল থাকেন।

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর