সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি কমলেও দুর্ভোগ কমেনি। বর্তমানে যমুনার নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ৩৮ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদী ভাঙ্গন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছে। কেউ বসতভিটা হারিয়ে আবার কেউ বসতবাড়িতে পানি ওঠায় ওয়াপদা বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। নিজস্ব জমি না থাকায় ঘরবাড়িগুলো বাঁধের উপর স্তুপ করে রেখেছে। কেউ অন্যের জমি ভাড়া করে ঘর তুলছে। এ অবস্থায় সরকারের কাছে থাকার জন্য জমি ও ঘর তোলার জন্য আর্থিক সহায়তা দাবি করেছেন।
অন্যদিকে টিউবওয়েল ও ল্যাটিনের ব্যবস্থা না থাকায় আর বসতভিটায় পানি ওঠায় বাঁধের ধারে আশ্রয় নেয়া মানুষগুলোও চরম বিপাকে পড়েছে। খোলা আকাশের নীচে রান্না করছে। বৃষ্টি হলে তাদের দুর্ভোগের মাত্রা বেড়ে যায়। পলিথিন-টিনের চালার চারিদিকে বেড়া না থাকায় জড়োসড়ে হয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। রান্না না হওয়ায় না খেয়ে থাকতে হয়। দুর্বিসহ জীবনযাপন করলেও কেউ তাদের পাশে দাঁড়ায়নি।
জানা যায়, এবারের বন্যায় জেলার ৫০টি ইউনিয়নের ২৪৭ গ্রাম, ৫০ হাজার পরিবারের আড়াই লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নদী ভাঙ্গন ও বন্যায় ইতোমধ্যে ২৫ শতাধিক বসতভিটা সম্পন্ন ও ত্রিশ হাজার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এছাড়াও ১৬ হাজার হেক্টর ফসলী জমি, নয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পন্ন এবং ৩৭৬টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৬টি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। তবে এবার জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দিকার নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা সার্বক্ষনিক বন্যার্তদের পাশে থেকে সহায়তা প্রদান করেছেন। ইতোমধ্যে ৩৭২ মেট্টিক টন চাল নগদ নয় লক্ষ টাকা ও ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরন করা হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আর পানি নেমে গেলে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে পুনর্বাসনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে পুনর্বাসনের জন্য ৫শ’ বান্ডিল টিন ও নগদ ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার