ফরিদপুর জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। গত ১২ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর পানি ২৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে এখন তা বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানিতে ফরিদপুর সদর উপজেলার নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বেশ কয়েকটি গ্রাম। তলিয়ে গেছে কয়েকশ হেক্টর জমির নানা প্রজাতির ধানসহ সবজির ক্ষেত। বেশ কয়েকটি স্কুল-মাদ্রাসায় পানি উঠায় সেগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ফরিদপুর শহররক্ষা বাঁধের মোহাম্মদপুর বাজারের কাছে বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দেয়ায় শহরজুড়ে আতংকের সৃষ্টি হয়। রাতেই স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নির্দেশে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাঁধটি মেরামতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান মোস্তাক জানান, দ্রুত পানি বৃদ্ধির ফলে তার ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রামই প্লাবিত হয়েছে। এদিকে, চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নে ভাঙ্গনের তীব্রতা কমেছে, কিন্তু ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে গাজিরটেক ইউনিয়নের হাজিগঞ্জ বাজার। পদ্মার পানি বৃদ্ধির কারণে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। চার ইউনিয়নে প্রায় ৯শ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
গাজীরটেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইয়াকুব আলী জানান, গত কয়েকদিনের পানি বৃদ্ধির কারণে দশ গ্রামের প্রায় তিন শতাধিক পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। এ ছাড়া তীব্র পানির স্রোতের কারণে হুমকির মুখে রয়েছে হাজিগঞ্জ বাজার। ভাঙ্গনের কবলে পরলে যেকোন মূহুর্তে বিলীন হয়ে যেতে পারে প্রায় ৩শ দোকান ঘরসহ হাজিগঞ্জ বাজার। হরিরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমীর হোসেন জানান, ইউনিয়নের চারটি গ্রামের ২শ পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। এছাড়া দুটি কালভার্টসহ কাচাঁ পাকা ১০টি রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সদর ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ খান জানান, আট গ্রামের ২শ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বেড়ি বাঁধের বাইরে থাকা মানুষ খুবই মানবেতর জীবন যাপন করছে। চর ঝাউকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ হোসেন জানান, ইউনিয়নের ৭ গ্রামের প্রায় ৩শ পরিবার পানিবন্দী রয়েছে।
ফরিদপুর সদরের চার ইউনিয়নে বন্যা কবলিতদের চুড়ান্ত তালিকা তৈরির কাজ চলছে বলে জানান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মানোস বোস।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার