লাইলি-মজনু, শিরি-ফরহাদকেও ছাড়িয়ে যাবে তাদের প্রেম কাহিনী। একে অন্যের ছাঁয়া হয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন ৭৫টি বছর। এ সময়ে ক্ষণিকের জন্যও কেউ কাউকে ছেড়ে থাকেননি। শেষে অন্তিমশয্যাও নিলেন একসঙ্গেই।
জ্যানেট ও আলেক্সান্ডার সাধারণ দুটি নাম। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা এই যুগলের প্রেম কাহিনী অনন্য। মাত্র আট বছর বয়সে তাদের চেনা পরিচয় ও প্রেম। দু'জনের বয়সের মাঝে শুধু এক বছরের ব্যবধান।
১৯৪০ সালে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর কেটে যায় মধুর ৭৫ বছরের যৌথজীবন। পাঁচ সন্তানের সুখী বাবা-মা হয়ে তারা বাস করতেন ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগোতে।
একই সঙ্গে বার্ধক্যে উপনীত হওয়া এই দম্পতি একে অপরকে ছাড়া থাকতে পারতেন না। দীর্ঘ সংসার জীবনেও তারা কখনোই আলাদা থাকেননি। এমনকি কর্মজীবনে আলেক্সান্ডার যখন মার্কিন নৌবাহিনীর টেলিগ্রাফ অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন তখনও তারা একসঙ্গে থাকতেন, একসঙ্গে বেরুতেন যে কোন ভ্রমণে।
তারা ভাবতেন কেবল মৃত্যুই হয়তো তাদের বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে পারে। তাই তারা সিদ্ধান্ত নেন, অন্তত মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত এক সঙ্গেই থাকবেন। একে অপরের হাতে হাত রেখে, আলিঙ্গনাবদ্ধ অবস্থায় জানাবেন অন্তিম বিদায়।
এ বছরের জুনে অসুস্থ হয়ে স্ত্রীর পাশেই শয্যাশায়ী হন আলেক্সান্ডার। ১৭ জুন প্রিয়তমা জ্যানেটকে বাহুবন্ধনে নেওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আলেক্সান্ডার।
তাদের মেয়ে এমী তোজকো কাশম্যান বলেন, ''শেষ মুহূর্তে মা, বাবাকে উদ্দেশ্য করে বলছিলেন, দেখো, এটাই চেয়েছিলে তুমি। আমার বাহুবন্ধনেই বিদায় জানালে তুমি। আমি তোমাকে ভালবাসি। অপেক্ষা করো, খুব শিগগির আমিও আসছি তোমার কাছে।''
প্রিয়তম আলেক্সান্ডারের দেহত্যাগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মারা যান জ্যানেট তোজকো। সান দিয়েগোর মিরামারের একটি সমাধিস্থলে পাশাপাশি সমাহিত করা হয়েছে তাদের।
বিডি-প্রতিদিন/০৪ জুলাই ২০১৫/ এস আহমেদ