৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ১০:৩১

মেঘের রাজ্য নীলাচল

বান্দরবান প্রতিনিধি

মেঘের রাজ্য নীলাচল

শীত আর বর্ষা; এই দুই মৌসুমে বান্দরবান এক অপরূপ সৌন্দর্য ধারণ করে। আর সেই প্রকৃতির বৈচিত্র্যময় ভ্রমণ স্থান নীলাচল। যা শীতে কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে আর বর্ষার মেঘ হাতছানি দেয়। দৃষ্টিনন্দন নীলাচল যেন বান্দরবানের অপরূপ এক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। দুই দিকে উঁচু পাহাড় আর হরেক রকমের গাছগাছালি। পাহাড়ের নিচে আঁকাবাঁকা সড়ক। সড়কের কোথাও ঢালু, কোথাও উঁচু। যেন দেশের ভিতরে অন্যরকম দেশ। নয়নাভিরাম এ শহর দেখতে যাওয়া মানুষ আপন মহিমায় মুগ্ধ না হয়ে যেন পারেন না। সৃষ্টির এ যেন অন্যরকম প্রয়াস।

মেঘের রাজ্যে হারিয়ে যেতে চান, তাহলে আপনাকে আসতে হবে নীলাচলে। মেঘ স্বমহিমায় আপনাকে ভিজিয়ে দিয়ে যাবে। এখানে পাহাড়চূড়ায় আপনি মেঘও ছুঁয়ে দেখতে পারেন। বান্দরবান শহরের সবচেয়ে সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র সম্ভবত নীলাচল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ হাজার ৬০০ ফুট উঁচু এ জায়গায় বর্ষা, শরৎ কী হেমন্ত তিন ঋতুতে ছোঁয়া যায় মেঘ। এ ছাড়া এখানে দাঁড়িয়ে দূর থেকে দেখা যায় বান্দরবান শহর আর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সাঙ্গু নদী। বান্দরবান জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গড়ে তোলা মনোরম এ পর্যটন কেন্দ্রে সম্প্রতি নতুন যোগ করা হয়েছে একটি রিসোর্ট। তাই এখানে বেড়ানোর পাশাপাশি পর্যটকরা রাতযাপনের সুযোগ পাবেন। বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে টাইগারপাড়া এলাকা। সেখানকার পাহাড়ের চূড়ায় বান্দরবান জেলা প্রশাসন গড়ে তোলে আকর্ষণীয় এ পর্যটন কেন্দ্র। নাম দেয় নীলাচল পর্যটক কমপ্লেক্স। এখানে পাহাড়ের গায়ে গায়ে পর্যটকদের জন্য আছে নানা ধরনের ব্যবস্থা।

শহর ছেড়ে চট্টগ্রামের পথে প্রায় তিন কিলোমিটার চলার পরেই হাতের বাঁ-দিকে ছোট একটি সড়ক এঁকেবেঁকে চলে গেছে নীলাচলে। এ পথে প্রায় তিন কিলোমিটার পাহাড় বেয়ে পৌঁছতে হয়। মাঝে পথের দুই পাশে ছোট একটি পাড়ায় দেখা যাবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের বসবাস। নীলাচলে সম্প্রতি নতুন কয়েকটি জায়গা তৈরি করা হয়েছে পর্যটকদের জন্য। এখানকার টিকিট ঘরের পাশে ‘ঝুলন্ত নীলা’ থেকে শুরু করে ক্রমশ নিচের দিকে আরও কয়েকটি বিশ্রামাগার তৈরি করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ‘নীহারিকা’ এবং ‘ভ্যালেন্টাইন’ পয়েন্ট। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সাজানো হয়েছে এ জায়গাগুলো। একটি থেকে আরেকটি একেবারেই আলাদা। একেক জায়গা থেকে সামনের পাহাড়ের দৃশ্যও একেক রকম। তবে মূল নীলাচলের সৌন্দর্য অনেক বেশি। এখান থেকে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় আরও ভালোভাবে। নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের একেবারে চূড়ায় পর্যটকদের জন্য আছে কয়েকটি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। নীলাচলের মূল পাহাড়ের শিখরের চারপাশেই মনোরম স্থাপনা শৈলীতে নির্মাণ করা হয়েছে এসব কেন্দ্র। একটি থেকে আরেকটি একেবারেই আলাদা। আর একেক দিক থেকে পাহাড়ের দৃশ্যও একেক রকম। বর্ষা এবং বর্ষা পরবর্তী সময়ে এখানে চলে মেঘের খেলা। কিছুক্ষণ পরপরই দূর পাহাড় থেকে মেঘের ভেলা ভেসে আসে নীলাচলের চূড়ায়। চারপাশ ঢেকে ফেলে শীতল নরম পরশে। নীলাচলে বাড়তি আকর্ষণ হলো এখানকার রিসোর্ট। নাম  নীলাচল স্কেপ রিসোর্ট।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর