মুখরোচক খাবারের চাহিদা যেমন আছে তেমনি এসব খাবারের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু দিনাজপুর শহরের চকবাজার এলাকায় দীর্ঘ ২৫ বছর যাবত মুখরোচক খাবার শিঙাড়া বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১ টাকায়। এরপরেও আজও এর চাহিদা কমেনি। এমনকি চাহিদা বাড়লেও বাড়েনি দাম। শহরের আরও কয়েকটি এলাকায় এই দামেই শিঙ্গাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তবে চকবাজারের শিঙাড়া বিক্রেতা সচিন কুমার ঘোষের দোকানের শিঙাড়া যেন একটু আলাদা স্বাদ। একই এলাকায় সুরেন সাহা নামে আরেকজন এই ১ টাকার শিঙারা ও নিমকি বিক্রি করে আসছেন।
সবার ক্রয়ের নাগালে রাখতে এখনও এই শিঙাড়া ও নিমকি বিক্রি হচ্ছে ১ টাকায়। উত্তপ্ত কড়াই থেকে নামানোর সাথে সাথেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে এই গরম শিঙাড়া। প্রতিদিন ২০-৩০টি শিঙ্গাড়ার অর্ডার দিয়ে দোকানের সামনে অপেক্ষা করতে দেখা যায় ক্রেতাদের। বিক্রেতাও যেন হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে।
দিনাজপুর শহরের চকবাজার এলাকার সচিন কুমার ঘোষ ও সুরেন সাহার দোকানে এমন চিত্র দেখা যায়। এই শিঙ্গাড়ার বিশেষত্ব হলো আকারে ছোটো ও দামে কম।
জানা যায়, প্রায় ২৫ বছর আগে এই দোকান শুরু করেন সচিন কুমার ঘোষ। তখন থেকেই ১ টাকায় শিঙাড়া বিক্রি হয়ে আসছেন। তাকে সহযোগিতা করেন তার স্ত্রী। এরপরে প্রায় ৮বছর থেকে একই এলাকায় ১ টাকার শিঙারা ও নিমকি বিক্রি করে আসছেন সুরেন সাহা। তাকে সহযোগিতা করেন তার ছেলে শাওন সাহা। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি থাকলেও বাড়েনি সচিনের এ শিঙাড়ার দাম। তাই দোকানে ভিড় থাকেই। প্রতিদিন বিক্রি হয় ৫ হাজারের বেশি পিস শিঙাড়া ও নিমকি। শুধু এলাকাবাসী নয়, দূর-দূরান্ত থেকেও অনেকে আসেন দোকানে। শখের বসে কেউ আবার নিয়ে যান বাড়িতেও।
আলাপ চারিতায় সুরেন সাহার ছেলে শাওন সাহা জানায়, প্রতিদিন এ দোকানে আড়াই হাজেরর বেশী ১ টাকার মূল্যের শিঙারা ও নিমকি বিক্রি করি।
অপরদিকে, সচিন কুমার ঘোষ আলাপ চারিতায় জানায়, যাদের পাঁচ টাকা দামের শিঙাড়া কেনার সামর্থ্য নেই, কিন্তু মুখরোচক এই খাবারটি খেতে মন চায় আমি তাদের জন্যই বানাই। ছোটবেলায় এক টাকায় চারটি শিঙ্গাড়া কিনেছি। সেখানে এখন একটির দাম ৫ টাকা থেকে ১০টাকা। তবে সব ধরনের ক্রেতাই তার দোকানে আসেন বলে তিনি জানান।
দোকানে শিঙাড়া খেতে আসা রাকিবুল, রফিকুল ইসলামসহ অনেকে জানান, অনেক দিন ধরেই সচিন কাকার দোকানের শিঙাড়া খাই। এই দোকান ছাড়া অন্য কোনো দোকানের শিঙাড়া খাই না এবং এর মতো স্বাদও হয় না। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেলেও বর্তমানেও ১ টাকায় শিঙাড়া পাওয়া যাচ্ছে এটাই অকল্পনীয়।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল