সিডলেস-এলাচি লেবু চাষে সহজে লাভ আসে

বাজারে চাহিদা ভাল, ফলনও ভাল, বারো মাসই ফলন দেয় সিডলেস ও এলাচি জাতের লেবু। অল্প সময়ে স্বল্প খরচে অধিক লাভবান এবং স্বাবলম্বী হওয়া যায় এই জাতীয় লেবু চাষে। 

এই লেবু চাষে সহজেই বেকারত্ব দূর করা সম্ভব। লোকসানের আশঙ্কাও কম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছরের সব সময়েই কমবেশি লাভ হবেই এই ধরনের লেবু চাষে। বাণিজ্যিকভাবে এই লেবু চাষে অনেকে নিজের ভাগ্য বদলিয়ে দিয়েছেন। 

এরকমই একজন লেবু চাষি গৌতম দাস। তিনি নিজেদের পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে তিনি সবার কাছে উদাহরণ হয়েছে। গৌতমের বাড়ি দিনাজপুর সদরের চকরামপুর বাজার এলাকায়। তিনি চাকুরি করার পাশাপাশি এই লেবুর বাগান গড়ে তুলেছেন। লেবু চাষের পাশাপাশি তিনি এখন লেবুর কলম চারাও বিক্রি করেন। তার ওই সফলতায় প্রতিদিনই অনেকে চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
 
লিচু কিংবা আম বাগান, ধানের ক্ষেতের চারপাশে সীমানা বেড়া দেয়ার জন্য এই সিডলেস ও এলাচি জাতের বারোমাসি লেবু চাষ করলে অনায়সে তুলনামূলক কম খরচে অধিক লাভবান হতে পারবে যে কেউ। সংশ্লিষ্টদের দাবি, কেউ ২৪ শতক জমিতে শুধু এই লেবু চাষ করলেই কমপক্ষে খরচ বাদেই বছরে ১ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন। এই চাষে ঝামেলা কম। খরচ নাই বললেই চলে। অধিক ফলনের জন্য বছরে ৩ বার সার প্রয়োগ করলেই হয়। একবার করলেও চলবে। আর পাতা মুড়ানিসহ রোগ নিরাময়ে মাসে পারলে একবার স্প্রে করলেই হবে। এরপর বছরের সব সময় লেবু বিক্রি করে আয় করা যাবে। এমনটাই বললেন গৌতম দাস।  

এ ব্যাপারে গৌতম দাস বলেন, ‘৬বছর আগে আমাদের লিচু বাগানের চারিপাশে বাউন্ডারি বেড়া দেয়ার জন্য ২০টি সীডলেস ও এলাচি জাতের বারোমাসি লেবুর চারা লাগাই। পরে আরও ১২০টি চারা আনি। চারাগুলো আমাদের ৭২ শতক লিচুর বাগানের চারপাশে বাউন্ডারি বেড়া দেওয়ার মতো করে রোপণ করি। এরপর বছরে কমপক্ষে ২ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করছি। বর্তমানে লেবু পাইকারি প্রতিটি ৩ টাকা থেকে ৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই লেবু চাষে লোকসান নেই বরং সারা বছর লাভবান করা যায়। লেবু ছাড়াও মানুষের মাঝে চাহিদা বাড়ায় চারাও বিক্রি শুরু করেছি। বর্তমানে গুটি কলম চারা প্রতিটি ৩০ টাকা এবং লেবুসহ চারা গাছ প্রতিটি ৫০টাকায় বিক্রি করছি।’
 
তিনি আরও বলেন, ‘আমার লেবু বাগানে এখন সাড়ে পাঁচশ’ গাছ রয়েছে। লেবু বারোমাস ফলন পাওয়া গেলেও এখন ফলন একটু কম হয়। তাই বর্তমানে লেবুর দাম বেশি। কিন্তু আর কিছুদিন পর এই জাতের এত লেবু ধরে যে তখন ১ টাকা প্রতিটি বিক্রি করতে হয়। তাই সরকার যদি এই লেবু বিদেশে রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি করে দেয় তাহলে আমার মতো অনেক কৃষক আরও লাভবান হতে পারবে। আবার বেকারত্ব দূরীকরণে এই চাষে ঝুঁকবে যুবকরাও।’ 

দিনাজপুর সদরের কৃষি অফিসের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সেলিম জানান, বারোমাসি সিডলেস ও এলাচি জাতের লেবু চাষ করলে যে কেউ লাভবান হবেন। কারন এই লেবু চাষে সমস্যা কম। খরচ কম, লাভ বেশি। এই চাষে লাভজনক করতে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হয়। 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল