শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

মাচু পিচু

মাচু পিচু

ইনকা সভ্যতার সবচেয়ে মূল্যবান নিদর্শন মাচু পিচু শহরটি। অনেককাল মানুষের অজানা থাকলেও এটি নিয়ে সম্প্রতি আলোচনা ও গবেষণা চলছে পুরোদমে। ইনকা সভ্যতার নিদর্শন বলেই শুধু নয়, মানব ইতিহাসে অনন্য সভ্যতা আর সংস্কৃতির সম্মিলন ঘটেছে এখানে। মাচু পিচু পৃথিবীর হারিয়ে যাওয়া রহস্যময় স্থানগুলোর একটি। এটি কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের পূর্বে ইনকাদের শহর। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ২৪০০ মিটার। এটি পেরুর উরুবাম্বা উপত্যকার ওপরে একটি পর্বত চূড়ায় অবস্থিত। মাচু পিচুই সম্ভবত ইনকা সভ্যতার সবচেয়ে পরিচিত নিদর্শন। কোনো কোনো ঐতিহাসিকের মতে, এটি এমন একটি উপনিবেশ যা বিজিত অঞ্চলসমূহের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হতো। আবার কেউ কেউ মনে করেন, এটি একটি জেলখানা হিসেবে ভয়ঙ্কর অপরাধীদের রাখার জন্য নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু দুজন ইংরেজ গবেষক জন রো ও রিচার্ড বার্গারসহ আরও অনেকের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে মাচু পিচু কোনো প্রতিরক্ষামূলক আশ্রয়স্থল নয়, বরং এটি ইনকা সম্রাট পাচাকুতিকের একটি অবকাশযাপন কেন্দ্র ছিল।

মাচু পিচু ঐতিহ্যবাহী ইনকা বাস্তুুকলার এক অনুপম নিদর্শনও। পালিশ করা পাথর নির্মিত এই শহরের প্রধান স্থাপনাগুলো হচ্ছে সূর্য স্তূপ, সূর্য মন্দির ও তিন জানালা ঘর ইত্যাদি। পুরাকীর্তিবিদদের কাছে মাচু পিচুর পবিত্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত অংশে এ স্থাপনাগুলো অবস্থিত। এটি ১৪৫০ সালের দিকে নির্মিত হয়। কিন্তু এর প্রায় ১০০ বছর পর ইনকা সভ্যতা যখন স্পেন দ্বারা আক্রান্ত হয় তখন এটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। আবার এমনটাও ধারণা করা হয়, স্পেনীয় অভিযাত্রীদের আগমনের আগেই এই শহরের অধিকাংশ অধিবাসী গুটিবসন্তে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

এ শহর নিয়ে বহু মিথ ছড়িয়ে আছে। পৃথিবীর অগোচরে কয়েকশ বছর থাকার পর ১৯১১ সালে হাইরাম বিংম নামে এক মার্কিন ঐতিহাসিক এটিকে আবার পুরো বিশ্বের নজরে আনেন। তারপর থেকে মাচু পিচু পর্যটকদের কাছে একটি দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে। এটিকে ১৯৮১ সালে পেরুর সংরক্ষিত ঐতিহাসিক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ১৯৮৩ সালে ইউনেস্কো এটিকে তাদের বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। এটি বর্তমান বিশ্বের সাতটি নতুন বিস্ময়ের একটি। ২০০৩ সালে এখানে আগত পর্যটকের সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়িয়ে যায়।

 

 

সর্বশেষ খবর