শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
গল্প

পিপলুর মিষ্টি খাওয়া

সাদমান আহনাফ

পিপলুর মিষ্টি খাওয়া

মা রান্নাঘরে কাজ করছেন। এ ফাঁকে ফ্রিজের দরজা খুলে মিষ্টির প্যাকেটে হাত দিল শুভ। গতরাতে বাবা রসগোল্লা কিনে এনেছেন। মা বলেছেন, ‘যখন খেতে ইচ্ছে করবে আমাকে বলবে কিন্তু নিজে নিজে ফ্রিজ থেকে মিষ্টি বের করবে না।’ সে কথা মনে ছিল শুভর। তবু মায়ের কথা শুনল না সে। কারণ মাকে তো আর বলা যাবে না-‘মা, একটা রসগোল্লা দাও তো, পিপলুকে দেব।’ মা তখন হাজারটা প্রশ্ন করবে। পিপলুটা আবার কে? তোর বন্ধু? কোথায় থাকে? কোন ক্লাসে পড়ে...? অত প্রশ্নের উত্তর দিতে গেলে দিন পার হয়ে যাবে। মাকে ঘটনাটা বলা না হলেও বাবাকে সে পিপলুর কথা বলেছে। পিপলু হলো একটা লাল পিঁপড়া। বাসার বারান্দায় টবে কিছু গাছ লাগানো হয়েছে। ওখানেই কোনো একটা টবের নিচে সে থাকে। শুভ পিঁপড়াটির নাম রেখেছে পিপলু। প্রথম প্রথম পিপলু তাকে খুব ভয় পেত। ধরতে গেলেই কামড় দিত। এখন তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়েছে। ঘরে খাবার বাচলে শুভ লুকিয়ে লুকিয়ে পিপলুকে নিয়ে দেয়। পিপলু চুপচাপ খায়। সেদিন মুড়িমাখা দিয়েছিল, পিপলু তো একটা মুড়ি নিয়েই দৌড়! বাবাকে পুরো ঘটনা বলল সে। বাবা শুনে বললেন, ‘পিপড়ারা তো মিষ্টি খুব পছন্দ করে। পিপলুর ফেভারিট খাবার কী, জানো?’ শুভ মাথা নাড়ল। সে জানে না। বাবা পরদিনই রসগোল্লা কিনে আনলেন। আজ সেই মিষ্টিটা নিয়েই শুভ গেল বারান্দায়। পিপলু মিষ্টির ঘ্রাণ পেয়েই টবের নিচ থেকে বের হয়ে এলো। ‘তোমার কি মিষ্টি পছন্দ?’, প্রশ্ন করল শুভ। পিপলু কোনো কথা না বলে মিষ্টি খেতে শুরু করল। কিছুক্ষণ পর বলল, ‘হ্যাঁ’। শুভ বলল, ‘আরও খাবে? ফ্রিজে আরও মিষ্টি আছে।’ পিপলু বলল, ‘না। বেশি মিষ্টি খাওয়া ভালো না।’ ওদের কথার মাঝেই শুভর মা বারান্দায় চলে এলেন। মিষ্টির প্যাকেট আনায়, ঘরের মেঝেতে মিষ্টির রস পড়েছে। মা কড়া গলায় বললেন, ‘মিষ্টির প্যাকেট বের করে ঘরদোর মাখিয়ে ফেলেছিস দেখি।’ মায়ের গলা শুনে পিপলু দৌড়ে টবের নিচে কোথায় যেন লুকিয়ে পড়ল। যেতে যেতে বলল, ‘আজ আমার জন্মদিন ছিল। এ দিনে মিষ্টি খাওয়ানোর জন্য ধন্যবাদ তোমাকে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর