রবিবার, ২১ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

ইদি আমিনের যত কাহিনি

শামছুল হক রাসেল

ইদি আমিনের যত কাহিনি
ইতিহাসের শিক্ষা হলো, ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না। দুনিয়ার অনেক শাসককে এ জন্য খেসারত দিতে হয়েছে। ক্ষমতায় থাকতে যারা ধরাকে সরা জ্ঞান করেছেন তারাই পড়েছেন করুণ পরিণতিতে। হতে হয়েছে নাজেহাল ও ইতিহাসের নির্মম শিকার। খেসারত দিতে হয়েছে তাদের ভবিষ্যৎ বংশধরকেও। এমনই একজন উগান্ডার স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট ও ফিল্ড মার্শাল ইদি আমিন

 

পশ্চিমাদের প্রতি অবজ্ঞা না পাগলামি!

এর আগে উগান্ডার ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল মূলত ভারতীয় ও ব্রিটিশদের অধীনে। ইদি আমিন রাতারাতি তার দেশ থেকে তাদের বের করে দেন। ঔপনিবেশিক আমলে ব্রিটিশরা উগান্ডাবাসীর ওপর যে অপমানজনক ব্যবহার করে, ইদি নানাভাবে তার বদলা নেন। তিনি একবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে তার জন্য জুতা সরবরাহের অনুরোধ করেন। পালকিতে করে তিনি শ্বেতাঙ্গদের ঘাড়ে চড়েও সুখ মেটাতেন
 

নিজেকে পৃথিবীর তাবৎ পশু ও সমুদ্রের মৎস্যকুলের অধিশ্বর বলে দাবি করতেন। দাবি করতেন, তিনিই আধুনিক যুগের প্রেসিডেন্ট। বিংশ শতাব্দীর সত্তর দশকে এমন হামবড়া ও বাচাল শাসকের আবির্ভাব ঘটেছিল আফ্রিকান দেশ উগান্ডায়। যার কথা বলছি তিনি আর কেউ ননÑ ইদি আমিন। বলা হয়, তিনি ছিলেন একজন স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট ও ফিল্ড মার্শাল।  এই শাসক নিজেকে ডক্টরেট ডিগ্রিধারী হিসেবেও দাবি করতেন। ইদির জম্ম সম্ভবত ১৯২০ সালে। ছোটবেলা থেকেই খুব ডানপিটে ও চতুর স্বভাবের ছিলেন। বয়স যখন ২৬ তখন তিনি যোগ দেন কিংস আফ্রিকান রাইফেলসে। এটি ছিল নেটিভদের নিয়ে গঠিত একটি আধা সামরিক বাহিনী। সাধারণ সৈনিক হিসেবেই ঢোকেন তিনি। সাঁতারু, রাগবি খেলোয়াড় এবং মুষ্টিযোদ্ধা হিসেবে ইদি সেনাবাহিনীতে প্রশংসা কুড়ান। ক্রীড়াক্ষেত্রে যোগ্যতার কারণে তিনি কিংস আফ্রিকান রাইফেলসের ‘সার্জেন্ট মেজর’ পদে উন্নীত হন। এটি ছিল সে সময় সামরিক বাহিনীতে কর্মরত আফ্রিকানদের জন্য সর্বোচ্চ পদ। ইদি আমিন মুষ্টিযোদ্ধা হিসেবে উগান্ডার লাইট হেভিওয়েট শিরোপাও লাভ করেন। সেনাপ্রধান  থাকাকালে কিংবা তার আগে থেকেই তিনি ছিলেন দেশের শীর্ষ দুর্নীতিবাজের একজন। কেউ কেউ বলেন, সোনা আর কফি চোরাচালান ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এই জেনারেল। প্রধানমন্ত্রী মিলটন ওবাটের এ সংক্রান্ত অপকর্মের সহযোগী ছিলেন তিনি। ইদি আমিন জনগণকে দুর্নীতিমুক্ত গণতান্ত্রিক দেশের স্বপ্ন দেখালেও তার উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন। উগান্ডায় তুঘলকি রাজত্ব কায়েমের উদ্দেশ্যেই অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেন এই জেনারেল। আগেই বলা হয়েছে, ইদি আমিন এক সময় ছিলেন হেভিওয়েট বক্সার। মেধার চেয়ে পেশিশক্তির ওপর তার নির্ভরশীলতার পেছনে এটা হয়তো কারণ হয়ে থাকবে। ক্ষমতায় এসে তিনি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর স্বদেশিদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন। এর আগে উগান্ডার ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল মূলত ভারতীয় ও ব্রিটিশদের অধীনে। ইদি আমিন রাতারাতি তার দেশ থেকে তাদের বের করে দেন। ঔপনিবেশিক আমলে ব্রিটিশরা উগান্ডাবাসীর ওপর যে অপমানজনক ব্যবহার করে, ইদি নানাভাবে তার বদলা নেন। তিনি একবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে তার জন্য জুতা সরবরাহের অনুরোধ করেন। পালকিতে করে তিনি শ্বেতাঙ্গদের ঘাড়ে চড়েও সুখ মেটাতেন। নারী লোলুপ হিসেবে ইদি আমিনের বদনাম ছিল দেশজুড়ে। তার স্ত্রীর সংখ্যা ছিল প্রায় এক ডজন। এক সুন্দরীকে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে বসান। তার প্রতি প্রেসিডেন্টের কুনজর পড়লে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে বাঁচেন।

স্বঘোষিত ফিল্ড মার্শাল ইদি আমিন ব্যবসা-বাণিজ্য জাতীয়করণ করে উগান্ডাবাসীর সমর্থন পেলেও পশ্চিমা বিশ্বের বিরাগভাজন হন। তারা প্রতিবেশী দেশগুলোকে দিয়ে উগান্ডায় বিদ্রোহের উসকানি দেয়। উগান্ডার এক ধর্মীয় নেতা বিদ্রোহীদের মধ্যে এমন কুসংস্কার ঢুকিয়ে দেন যে, তারা বিশ্বাস করতে শুরু করে, কেউ তাদের হত্যা করতে পারবে না। এ কুসংস্কার বিদ্রোহীদের অপ্রতিরোধ্য করে তোলে। তার পরিণতিতে ১৯৭৯ সালে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন ইদি আমিন। এক হালি স্ত্রী, ডজন খানেক সন্তান ও ব্যক্তিগত কর্মচারীদের নিয়ে তিনি আশ্রয় নেন সৌদি আরবে। সৌদি আরবের বন্দরনগরী জেদ্দায় ২০০৩ সালের ১৬ আগস্ট শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই স্বঘোষিত ফিল্ড মার্শাল। ইদি আমিন সত্যিকার অর্থেই ছিলেন একজন ব্যতিক্রমধর্মী নেতা। কেউ কেউ ইদির পাগলামিকে বলতেন, এটি ছিল পশ্চিমাদের প্রতি তার অবজ্ঞা। কারও মতে, তিনি ছিলেন আধ-পাগলা বা জোকার। অনেকে তাকে জঘন্য স্বৈরাচার হিসেবেও অভিহিত করেছেন। আবার কারও মতে ইদি আমিন ছিলেন সত্যিকার অর্থেই একজন জাতীয়তাবাদী নেতা। তিনি ভিন্ন ধর্মীয় উগান্ডাবাসীর কাছেও ছিলেন আস্থার প্রতীক। মৃত্যুর আগে ইদি আমিনের শেষ ইচ্ছা ছিল, তাকে যেন উগান্ডার মাটিতে কবর দেওয়া হয়। জানিয়েছিলেন তার এ দেশপ্রেমের কথা। ইচ্ছা পূরণে জেদ্দা হাসপাতালে ক্লিনিক্যাল ডেথ হওয়ার পরও দীর্ঘদিন তাকে   কৃত্রিম পন্থায় বাঁচিয়ে রাখা হয়। সে সময় পরিবারের পক্ষ থেকে উগান্ডা সরকারের কাছে আবেদন করা হয়,  সাবেক প্রেসিডেন্টকে যেন দেশের মাটিতে কবর দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু উগান্ডার মুসাভেনির সরকার এ আবেদনে কর্ণপাত করার প্রয়োজনবোধ করেনি। মৃত ইদি আমিনকেও তারা সম্ভবত ভয় পেয়েছিলেন।

ফলে জেদ্দায় তাকে কবর দেওয়া হয়।

 

উগান্ডা-তানজানিয়ার সেই যুদ্ধ

উগান্ডাকে বলা হয় পার্ল অব আফ্রিকা। দেশটির পূর্বে আছে কেনিয়া, উত্তর-দক্ষিণ সুদান, পশ্চিমে গণতান্ত্রিক কঙ্গো, দক্ষিণ-পূর্বে রুয়ান্ডা এবং দক্ষিণে তানজানিয়া। নীল নদের উৎসের দেশ হিসেবেও এর একটি পরিচয় আছে। তবে দেশটির পরিচিতি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে ইদি আমিন যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছিলেন। তার শাসনামলে প্রায় তিন লাখ লোক প্রাণ হারান। কারও কারও মতে এই সংখ্যা পাঁচ লাখের মতো। তার স্বৈরশাসনের ইতিহাস আজো এই অঞ্চলের মানুষের মনে দগদগে ক্ষত হয়ে আছে।

মূলত ইদি আমিনের শাসনামলের পতন ঘটে এক যুদ্ধের মাধ্যমে। সেই যুদ্ধটি হয় পার্শ্ববর্তী তানজানিয়ার সঙ্গে। সেই যুদ্ধে উগান্ডা পরাজিত হয় শোচনীয়ভাবে এবং ইদি আমিনের পতন ঘটে। এই যুদ্ধকে উগান্ডার স্বাধীনতা যুদ্ধও বলা হয়। ১৯৭৮-৭৯ সালের এই যুদ্ধে ইদি আমিনকে সহায়তা করেছিলেন লিবিয়ার একনায়ক কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফি এবং পিএলও। এই যুদ্ধের বিস্তারিত জানার আগে জানতে হবে একটু পেছনের কথা। ১৯৭১ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ইদি আমিন উগান্ডার ক্ষমতা দখল করেন। তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস নায়ারে উগান্ডার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মিলটন ওবাটেকে আশ্রয় দেন ২০ হাজার উদ্বাস্তুসহ। এক বছর পর তারা উগান্ডাকে আক্রমণের ব্যর্থ চেষ্টাও করেন। ইদি আমিন নায়ারেকে দোষারোপ করেন তার শত্র“কে সমর্থনের জন্য। এরই সূত্র ধরে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। ১৯৭৮-এর অক্টোবরের শুরুর দিকে কাম্পালাতে বিদ্রোহীরা ইদির বাসভবন আক্রমণ করে। তিনি হেলিকপ্টারে করে সপরিবারে পালিয়ে রক্ষা পান।

এদিকে ইদি আমিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মুস্তাফা আদ্রিসি সন্দেহজনক গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হন। আদ্রিসির অনুগত সৈন্যরা বিদ্রোহ করলে বিদ্রোহ দমন করা হয়। মুস্তাফা আদ্রিসির কিছু সৈন্য তানজানিয়ায় পালিয়ে যায়। বিদ্রোহ তানজানিয়াতে ছড়িয়ে পড়ে। আদ্রিসির সৈন্যরা মিলটন ওবাটের সৈন্যদের সঙ্গে মিলিত হয়ে ইদির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এদিকে ইদি আমিন তানজানিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। উগান্ডার সরকারি বাহিনী তানজানিয়ার কাগারা অঞ্চলের বিরোধপূর্ণ জায়গা দখল করে নেয়। নায়ারে তানজানিয়া পিপলস ডিফেন্স ফোর্সকে উগান্ডার আর্মির বিরুদ্ধে মোতায়েন করেন। কয়েক সপ্তাহের ভেতর ৪০ হাজার নিয়মিত সৈনিকের সঙ্গে ৬০ হাজার পুলিশ, মিলিশিয়া, কারারক্ষী যোগ দেন। উগান্ডার ইদি আমিন-বিরোধীরা উগান্ডান ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি গঠন করে নায়ারের সঙ্গে যোগ দেন। রাশিয়ান বিএম কাতুস্কা দিয়ে তানজানিয়ানরা উগান্ডার সেনাদের ওপর গোলাবর্ষণ করে। এতে উগান্ডা সেনাবাহিনী পিছিয়ে যায়। লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফি ২৫০০ সৈন্য, টি-৫৪, টি-৫৫ ট্যাংক, মিগ-২১, টু-২২ বিমান ও গোলা-বারুদ দিয়ে সাহায্য করেন। কিন্তু লিবিয়ানরা খুব দ্রুত টের পায় তারাই সম্মুখ যুদ্ধ করছে এবং উগান্ডান সেনারা পরিবহন ট্রাক দিয়ে তানজানিয়া থেকে লুটের মাল উগান্ডাতে নিয়ে যাচ্ছে। তানজানিয়া ও উগান্ডার বিদ্রোহীরা কাম্পালা অভিমুখে যাত্রা করে কিন্তু লুকাইয়া অঞ্চলে জলাভূমির কারণে থেমে যায়। তানজানিয়ার ২০১তম ব্রিগেড জলাভূমি পাড়ির সিদ্ধান্ত নেয়। এদিকে ২০৮তম জলাভূমির পশ্চিম দিক দিয়ে বিকল্প পথে অগ্রসর হয়। ১৯৭৯ এর ১০ মার্চ লিবিয়ানদের একটি ব্রিগেডের সঙ্গে সংঘর্ষে ২০১তম ব্রিগেড পিছু হঠে। কিন্তু ২০১ ব্রিগেড সুসংঘটিত হয়। তারা দক্ষিণ ও ২০৮ ব্রিগেড উত্তর দিক দিয়ে ১১-১২ তারিখের রাতে লিবিয়ানদের ওপর হামলা করে। লিবিয়ানদের প্রতিরোধ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। ওই দিন ২০০ লিবিয়ান ও ২০০ উগান্ডার সরকারি সৈন্য নিহত হয়। এর পরপরই শুরু হয় ইদি আমিন সাম্রাজ্যের পতনের সূচনা।

 

স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট ও ফিল্ড মার্শাল

১৯৭১ সালের ২৫ জানুয়ারি এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উগান্ডার ক্ষমতায় আসেন জেনারেল ইদি আমিন। কেনিয়ায় ব্রিটিশবিরোধী দমনে ভূমিকা রাখেন তিনি। এমনকি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশবাহিনীর সদস্য হিসেবে বার্মায় যুদ্ধও করেন। সেখানেও নিজের দক্ষতা ও সামরিক কৌশলের পরিচয় দেন তিনি। এসব কাজের পুরস্কার হিসেবে কিংস আফ্রিকান রাইফেলসের দুই পদস্থ কর্মকর্তা মিলটন ওবাটে এবং ইদি আমিনকে স্বাধীনতার প্রাক্কালে সার্জেন্ট মেজর থেকে ফার্স্ট লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ইদিকে ইংল্যান্ডে সামরিক প্রশিক্ষণে পাঠানো হয়। সেখান থেকে দেশে ফিরলে ১৯৬৪ সালে মেজর পদে উন্নীত হন। পরের বছর কর্নেল পদোন্নতি পান ইদি আমিন। উগান্ডা স্বাধীনতা লাভ করলে উগান্ডার রাজা অ্যাডওয়ার্ড মুনেভি মুতেসা (দ্বিতীয়) দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পান। ইদির বন্ধু মিলটন ওবাটে প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হন। ইদি আমিনের ভাগ্যে জোটে সেনাবাহিনী প্রধানের পদ। দুই উচ্চাকাক্সক্ষী মিলটন ওবাটে ও ইদি আমিন ষড়যন্ত্র করে ১৯৬৯ সালে প্রেসিডেন্ট মুতেসা দ্বিতীয়কে ক্ষমতাচ্যুত করেন। রাজপ্রাসাদে ইদি আমিনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে রাজা তথা প্রেসিডেন্টকে দেশ থেকে বের করে দেন। মিলটন ওবাটে প্রেসিডেন্ট পদে বসেন ইদি আমিনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায়। তবে দুই ষড়যন্ত্রীর মধুচন্দ্রিমা বেশি দিন টেকেনি। ১৯৭১  সালের ২৫ জানুয়ারি ওবাটে যখন কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছিলেন, তখন অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ইদি আমিন ক্ষমতায় আসেন। দুনিয়ার অন্যান্য সামরিক   জান্তার মতো ইদি আমিন ক্ষমতায় এসে ঘোষণা করেন তিনি সৈনিক, রাজনীতিক নন; কিন্তু পরবর্তীতে এ কথাটি আর ধরে রাখতে পারেননি স্বঘোষিত এই প্রেসিডেন্ট ও ফিল্ড মার্শাল।

কারণ ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না। দেশটির শীর্ষ সোনা এবং কফি চোরাচালান ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন এই জেনারেল। ক্ষমতায় এসে ইদি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বদেশীদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন। এর আগে ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করত বিদেশিরা।

 

 

ছ বি তে   ই দি  আ মি ন

 

ইদি আমিনের উপাধি

ইদি আমিন। তুঘলকি রাজত্ব কায়েমের উদ্দেশ্যেই অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেন এই জেনারেল। ইদি আমিন অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসার পর যে উপাধি গ্রহণ করেন তাতে তার মস্তিষ্কের সুস্থতা নিয়েও প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। উপাধিটি হলো ‘হিজ এক্সলেন্সি প্রেসিডেন্ট অব লাইফ, ফিল্ড মার্শাল আলহাজ ডক্টর ইদি আমিন বিসি, ডিএসও, এমসি, লর্ড অব অল দ্য বিস্টস অব দ্য আর্থ অ্যান্ড ফিসেস অব দ্য সি অ্যান্ড কনকুয়েরর অব দ্য ব্রিটিশ ইম্পিয়ার ইন আফ্রিকান জেনারেল অ্যান্ড উগান্ডা ইন পার্টিকুলার।’ যার অর্থ দাঁড়ায়, ‘উগান্ডা তথা আফ্রিকায় ব্রিটিশ আধিপত্য ক্ষুণ্নকারী, দুনিয়ার সব পশু এবং সাগরের মৎস্যকুলের অধীশ্বর মহামান্য আজীবন প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আলহাজ ডক্টর ইদি আমিন ভিসি,  ডিএসও এমসি। উপাধিই বটে!

 

শ্বেতাঙ্গদের ঘাড়ে পালকিতে চড়ে মনের সুখ মেটাচ্ছেন ইদি আমিন

 

শেষ স্ত্রী সারা কায়েলাভার সঙ্গে ১৯৭৫ সালে

 

লিবিয়ার লৌহ মানব কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির সঙ্গে

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর