২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৭:১১
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

ভিসি’র রুটিন দায়িত্বে রেজিষ্ট্রার, সংক্ষুব্ধ শিক্ষকরা

শেকৃবি প্রতিনিধি

ভিসি’র রুটিন দায়িত্বে রেজিষ্ট্রার, সংক্ষুব্ধ শিক্ষকরা

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার পদের মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শীর্ষ তিনটি পদই শূন্য হওয়ায় প্রশাসনিক জটিলতা নিরসনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক আদেশে রেজিষ্ট্রারকে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাদ দিয়ে এমন আদেশের প্রেক্ষিতে সংক্ষুব্ধ হয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়।

জানা যায়, গেল মাসের ১৩ তারিখে শীর্ষ ৩ পদ ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারারের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের মেয়াদ শেষ হয়। যথার্থ একাডেমিক কার্যক্রমসহ স্থবির ছিল পুরো বিশ্ববিদ্যালয়। শীর্ষ এ তিনটি পদের মধ্যে বিশেষত উপাচার্য (ভিসি) শূন্য থাকায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আগস্ট মাসের বেতন দেওয়া সম্ভব হয়নি। এ সম্পর্কে রেজিষ্ট্রার শেখ রেজাউল করিম বলেছিলেন, বেতন প্রদানে উপাচার্যের স্বাক্ষরের বাধ্যবাধকতা আছে বিধায় এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।

পরে গত ২০ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব নীলিমা আফরোজের স্বাক্ষরিত এক আদেশে ভিসি পদটি শূন্য থাকায় পরবর্তী ভিসি নিয়োগ না হওয়া সাপেক্ষে শেকৃবি’র রেজিষ্ট্রার শেখ রেজাউল করিম’কে বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি’র রুটিন দায়িত্ব প্রদান করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক থাকার পরেও রেজিষ্ট্রারকে এমন গুরু দায়িত্বে আসীনে সংক্ষুব্ধ হয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। এর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ইতোমধ্যে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ও শেকৃবি শিক্ষক সমিতি।

বাকৃবি শিক্ষক সমিতি প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘শেকৃবির রেজিষ্ট্রার যিনি শুধুমাত্রই একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা উনাকে ভিসির দায়িত্ব পালন করার আদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও স্বায়ত্তশাসনের পরিপন্থী। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবিলম্বে এই আদেশ প্রত্যাহার করে অতিসত্বর একজন স্বনামধন্য প্রফেসরকে উপাচার্য নিয়োগ প্রদানের জোর দাবি জানাচ্ছি।’ 

জবি শিক্ষক সমিতি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন তাঁর বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও নিরলস পরিশ্রমে দেশকে বিশ্ব দরবারে সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছেন ঠিক তখন একটি মহল তাঁর অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ও অসাধু উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এধরনের নিয়োগ প্রদানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অস্থিতিশীল  করবার অপচেষ্টায় লিপ্ত। অবিলম্বে এ নিয়োগাদেশ বাতিলপূর্বক প্রত্যাহার করে প্রতিথযশা অধ্যাপকগণের মধ্যে শূন্য তিনটি পদে নিয়োগের জোর দাবী জানাচ্ছি।’ 

শেকৃবি শিক্ষক সমিতি বিবৃতিতে বলেন, ‘গত ১৪ আগস্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হলে শিক্ষক সমাজের চাহিদা মোতাবেক শিক্ষক সমিতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ও শিক্ষামন্ত্রী বরাবর পত্র প্রেরণ করে যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী অধ্যাপকগণের মধ্য থেকে গুরুত্বপূর্ণ এ পদ তিনটিতে নিয়োগ প্রদান করা হয়।

কিন্তু শেকৃবি রেজিষ্ট্রার শেখ রেজাউল করিমকে ভিসির রুটিন দায়িত্ব পালনের আদেশ দেওয়া হয়। এতে চলমান সমস্যার আংশিক সমাধান হলেও প্রকৃত সমস্যা সমাধান হয়নি বরং শিক্ষকরা বিব্রতবোধ করেছেন।’ ভবিষ্যতে আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এরূপ আদেশ প্রদান না করার জোর দাবী জানান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এ সংগঠনগুলো।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর