চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজে শিক্ষার্থীদের দ্বারা নির্বাচিত ছাত্র সংসদ নেই। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনে এডহক কমিটি আছে। এসব কমিটিতে প্রাধান্য থাকে ছাত্রলীগের পদধারী নেতাদের। অভিযোগ উঠেছে, এসব পদধারী নেতারা ছাত্র সংসদে যুক্ত হয়ে নানা অপকর্ম করে বেড়ান ক্যাম্পাসজুড়ে। ভয়ে কেউ মুখ না খুললেও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে সংঘাত সংঘর্ষ নিয়মিত ঘটনা।
এবার ‘ভিপি’ পরিচয় দিয়ে কলেজটির ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাষ্টার্সের শিক্ষার্থীদের সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়ার নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্তের নাম তন্ময় তাশ গুপ্ত। তিনি কলেজ ছাত্রলীগের এডহক কমিটির সদস্য ও ছাত্র সংসদের দিবা শাখার সদস্য। কিন্তু তিনি নিজেকে ভিপি পরিচয় দিয়ে ঘুরে বেড়ান ক্যাম্পাসজুড়ে।
তবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সংবর্ধনা আর ক্রেস্টের নামে টাকা আদায় করলেও জানে না কলেজ প্রশাসন। এতদিন বিষয়টি নিয়ে কেউ মুখ না খুললেও ক্যাম্পাস ছাড়ার পর শিক্ষার্থীরা প্রকাশ করছেন তাদের অভিযোগ। তবে কলেজ অধ্যক্ষ বলছেন, অনার বোর্ডের জন্য টাকা নিয়েছে। অভিযোগ দিলেও অভিযোগকারীরা ছিলেন না কলেজে।
সিটি কলেজের অধ্যক্ষ সুদীপা দত্ত জানান, চলতি বছরের মে মাসে ভাইবা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে তন্ময় টাকা নিয়েছে। ওই সেশনের পক্ষ থেকে বিভাগের জন্য অনার বোর্ড করার জন্য টাকা নিয়েছে বলে সে স্বীকার করেছে। যদিও অনার বোর্ড এখনো করেনি, তবে তা করে দিবে। যাদের কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায় করেছে বলে অভিযোগ করেছে তারা স্বশরীরে কেউ এসে অভিযোগ দেয়নি। কারণ তারা যে যার মতো চাকরি করছে বিভিন্ন স্থানে। যার কারণে বিষয়টি বিভাগের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সরকারি সিটি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাষ্টার্স শেষ পর্ব ২০১৯-২০২০ সেশনের সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায় করেছেন তন্ময় দাশ গুপ্ত। বিভাগের শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট সেশনের পরিক্ষার্থীদের সম্মানননা প্রদানের জন্য প্রায় ৩৬৬ জন থেকে ২৫০ টাকা করে প্রায় ৯১ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করেছেন। এছাড়াও সংবর্ধনার নামে কলেজের আশেপাশের বিভিন্ন দোকান থেকেও লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করেছেন। এরপর কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ক্রেস্ট দিয়ে বাকি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে তন্ময় দাশ গুপ্ত বলেন, সবার সাথে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েই টাকা তুলেছি, এখানে টাকা আত্মসাতের বিষয় আসবে কেন। ৩৬৬ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নিলেও ৪শ জনকে ক্রেস্ট দিয়েছি। বাকি টাকা দিয়ে আমরা অনারবোর্ড করবো। আর ম্যাডামের কাছেও কোন অভিযোগ দেয়নি কেউ। তবে ভিপি পরিচয় দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ভিপি পরিচয় দিতে কোনো সমস্যা নেই।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল