২০০ টাকা হারে ১০০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ এস্কেভেটর দিয়ে সমাপ্ত করে শ্রমিকদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। নেত্রকোনার মদন উপজেলার গোবিন্দ্রশ্রী ইউনিয়নে কর্মসৃজন প্রকল্পে স্থানীয় নারী ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠে।
স্থানীয়রা জানান, কদমশ্রী হাওরের সড়কে দরিদ্রদের জন্য ১০০ দিনের কর্মসূচিতে কাজ দেওয়ার নামে শ্রমিকদের নিকট থেকে নেওয়া হয়েছে উৎকোচ। অতিদ্ররিদ্র স্থানীয় লোকজনকে দিয়ে কাজ করানোর কথা থাকলেও বেশিরভাগ স্থানে মাটি কাটা হয়েছে এস্কেভেটর দিয়ে।
অপরদিকে হতদরিদ্রদের নিকট থেকে উৎকোচ নিয়েও কাজ দেওয়ার কথা বলে স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য কাজ দেয়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকদের দৈনিক ২০০ টাকা হারে ভাতাও আত্মসাৎ করারও অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ করলেও উল্টো চাঁদাবাজি মামলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
এদিকে, শ্রমিকরা অনিয়মের প্রতিবাদ জানিয়ে ইতোমধ্যে নিজ গ্রামে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। হতদরিদ্রদের এই কর্মসৃজন প্রকল্পের অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি করেছেন তারা।
কদমশ্রী গ্রামের শাহানা, রজ্জতুচ্ছেনা, শাহীনুর আক্তার, কল্পনাসহ কয়েকজন নারী শ্রমিক জানান, আমরা ১ হাজার করে টাকা দিয়েছি মাটি কাটার কাজে নাম তোলার জন্য এবং এ কাজে আমাদেরকে দৈনিক ২০০ টাকা করে মুজুরি দেওয়ার কথা। বেশ কিছু দিন মাটি কাটার পর ৯ হাজার টাকা বিল হয়েছে। পরে টাকা তুলে ৪ হাজার টাকা কেটে রেখে ৫ হাজার টাকা করে আামাদেরকে দিয়েছেন মেম্বার মালা। পরে আমাদের দিয়ে মাটি না কাটিয়ে ভ্যাকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটিয়েছে এবং তা নিজের পছন্দের লোক দেখিয়ে মাটি কাটার কাজের টাকা নিয়ে গেছে। বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানানোর পরও কোন প্রতিকার পাননি বলে জানান তারা।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য লতিফা আক্তার মালা বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আমার কাছে সাংবাদিকসহ কয়েকজন টাকা নিতে এসেছিল দিইনি বলে ষড়যন্ত্র করে অভিযোগটি করেছে। তদন্তে আসলে কিছুই পাবে না। সব মিথ্যা প্রমাণ হবে।
গোবিন্দ্রশ্রী ইউপি’র চেয়ারম্যান এ কে এম নুরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, কাজ তো হয়েছেই। গোবিন্দ্রশ্রী হাওরের ২৫২৯ মিটার মাটি কাটার কাজ হয়েছে। কর্মসৃজনে যারা আছে তারাও করেছে ভেকু দিয়েও কিছু করা হয়েছে। তারাও টাকা পেয়েছে ভেকুকেও কিছু দিয়েছে। এতে তো কোনও সমস্যা নেই।
মদন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়ালীউল হাসান বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং পিআইওকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/কালাম