রোজা প্রায় শেষের পথে। ঘরে ঘরে চলছে ঈদ উদযাপনের আয়োজন, চলছে কেনা কাটা। নতুন পোশাক কেনার ধুম। কিন্তু রাব্বির পরিবারের নেই সে আয়োজন। চুরির অপবাদে মিথ্যা বিচার সইতে না পেরে রাব্বির আত্মহত্যার পর গোটা পরিবার এখন শোকে মুহ্যমান।
ছেলে রাব্বির আত্মহত্যার বিষয়টি যেমন সহ্য করতে পারছে না তেমনি চুরির বিষয়টিও মেনে নিতে পারছেন না রাব্বির পিতা চেনির উদ্দীন। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কড়ুইগাছি গ্রামের কে এবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র রাব্বিকে সিগারেট চুরির অপবাদ দিয়ে গত ২১ মে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করে পান বিড়ির দোকানী কচিমদ্দীন।
পরে স্থানীয় সাবেক মেম্বর আব্দুল হান্নান ও ছাত্রলীগ নেতা হাসান রেজা সেন্টু সালিশি বসিয়ে জরিমানা আদায় করে। ওই দিনই রাব্বি নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। এ ব্যাপারে ৩ জনের নামসহ ৫ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামি করে বাবা চিনিরুদ্দীন গাংনী থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার একটি মামলা দায়ের করেন।
মূল মামলা থেকে বাদ পড়ে সালিশকারী সাবেক মেম্বর আব্দুল হান্নান ও ছাত্রলীগ নেতা হাসান রেজা সেন্টু। স্থানীয় প্রভাবশালীদের মদদে এদের নাম এজাহারে উল্লেখ করা হয়নি বলেও জানিয়েছেন চেনির উদ্দীন।
সরেজমিনে চেনির উদ্দীনের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে গোটা পরিবার এমনকি প্রতিবেশীরাও শোকে মুহ্যমান। রাব্বির আত্মহত্যাটি যেন কেউ মেনে নিতে পারছে না। মা সাহিদা খাতুন শয্যাগত। মোবাইল ফোনের স্ক্রীনে সন্তানের ছবি দেখছেন আর মূর্ছা যাচ্ছেন। বাবা সন্তান বিয়োগের পর থেকে কোন কাজে যাননি, বাকরুদ্ধ হয়ে পরেছেন। শুধু বিলোপ করে কাঁদেন। যে বয়সে দুষ্টমি আর দুরন্তপনায় মেতে থাকার কথা সে বয়সে জীবন দিতে হলো রাব্বিকে। সিগারেট চুরির অপবাদে গ্রাম্য সালিশে গাছে বেধেঁ নির্যাতনের কারণে ক্ষোভে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হয় তাকে।
এ দিকে সাবেক মেম্বর আব্দুল হান্নান ও ছাত্রলীগ নেতা হাসান রেজা সেন্টু রাব্বির পরিবারকে মামলা তুলে নেবার জন্য হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ। আগামী ৭ দিনের মধ্যে মামলা তুলে না নিলে সমগ্র পরিবারকে রাব্বির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা হাসান রেজা সেন্টু ও তার লোকজন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল