প্রবাসীর স্ত্রী পিটানোর অপমান ও মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি সহ্য করতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের মালেঙ্গা গ্রামে। নিহত গৃহবধু জাহানারা (৪৫) বাহারাইন প্রবাসী আরফান আলীর স্ত্রী ।
জানা যায়, গত ২৫ মে প্রবাসী আরফান আলীর স্ত্রী চার সন্তানের জননী জাহানার বেগম (৪৫) এর সঙ্গে একই গ্রামের খালেকের স্ত্রী হাওয়া বেগমের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি নিয়ে ভাতিজা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য আজমত আলী (৪২) ক্ষিপ্ত হয়ে জাহানারা বেগমকে বেধড়ক মারধর করে তার দুই হাত ও বাম হাতের চারটি আঙুল ভেঙে দেয় এবং শরীরে বিভিন্ন অংশে রক্তাক্ত জখম করে। পরে জাহানারা বেগম গ্রামের মাতব্বরদের কাছে বিচার প্রার্থী হয়েও কোনো প্রতিকার না পেয়ে গত ২৭ মে সোমবার একটি মামলা দায়ের করেন ।
এতে আজমত আলী আরো ক্ষিপ্ত হয়ে জাহানারা বেগমকে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়ে নানা ভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে । পরে জাহানারা বেগম মাতব্বরদের বিচারের অবহেলা ও আজমত আলীর হুমকি সহ্য করতে না পেরে গত ৩০ মে বৃহস্পতিবার বিষপান করেন। পরে মুমুর্ষ অবস্থায় প্রথমে তাকে ঘাটাইল হাসপাতাল নেয়া হয়। সেখান থেকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার একটি ক্লিনিকে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে আওয়ামী লীগ কর্মী আজমত ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা শুক্রবার গভীর রাতে মৃতের বাড়িতে সালিশি বৈঠকের আয়োজন করে। সেখানে মাতব্বররা সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে লাশ দাফন না করে পুলিশকে খবর দিয়ে মর্গে পাঠিয়ে দেয়।
এলাকাবাসী জানায়, আজমত আলী আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তিনি এর আগেও একই গ্রামের জাহাঙ্গীর আক্তার ও আমান আলীর স্ত্রীকেও বেআইনিভাবে মারধর করেছেন।
দেওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাইনউদ্দিন তালুকদার (তারু) ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।ঘাটাইল থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মান্নান জানা, লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক