রাফির বয়স মাত্র সাত। ছোট্ট একটা গ্রাম, মাটির ঘর, উঠানের একপাশে শিউলি গাছ আর পুকুরপাড়ে দোলনা, এই ছিল তার পৃথিবী। তবে তার পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জিনিসটা কোনো গাছ, পুকুর বা খেলনা নয়। সেটা হলো মায়ের হাসি।
রাফির মা ছিলেন একদম স্নিগ্ধ ভোরের মতো। চোখে মমতা, কণ্ঠে কোমলতা আর মুখে সবসময় একটা শান্ত হাসি। সেই হাসিটাই রাফির সবচেয়ে বড় ভরসা। স্কুল থেকে ফিরেই তার প্রথম কাজ- মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখা, আজ হাসছেন কি না!
মায়ের মুখে হাসি থাকলে রাফির মন যেন পাখির মতো উড়ে বেড়ায়। আর যদি মুখটা গম্ভীর, চিন্তিত হয়ে থাকে, তাহলে ছোট্ট বুকটা ভারী হয়ে যায়।
‘মা কষ্টে আছেন?’ এই ভাবনা তাকে সারাক্ষণ চিন্তায় রাখে।
এক দিন স্কুলে শিক্ষকরা একটি নতুন খেলা শেখালেন, ছোট্ট জাদু। লাল রুমালটা হঠাৎ করে গায়েব করার খেলা।
রাফি খেলাটা খুব ভালো করে শিখল। মনে মনে ভাবল, ‘আজ মাকে একদম চমকে দেব! হাসি আসবেই!’
বাড়ি ফিরে মায়ের কাছে গিয়ে বলল,
‘মা, দেখো! আমি এখন জাদুকর!’
তারপর ব্যাগ থেকে লাল রুমালটা বের করেই হঠাৎ যেন সেটা হাওয়ায় মিলিয়ে গেল।
মা অবাক হয়ে তাকিয়ে বললেন,
‘এইটা কোথায় শিখলি রে তুই?’
রাফি চোখ টিপে বলল,
‘জাদুকরের রাজ্য থেকে! এটা গোপন!’
মা হেসে ফেললেন, আর রাফির ছোট্ট হৃদয়টা সেই হাসিতে ভরে গেল আলোয়।