বিদেশের বিভিন্ন ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শনের পর এবার দেশের প্রেক্ষাগৃহে আগামীকাল মুক্তি পাচ্ছে মেহজাবীন চৌধুরী অভিনীত সিনেমা ‘সাবা’। অসুস্থ মাকে নিয়ে সাবার জীবনসংগ্রামের গল্প পর্দায় তুলে এনেছেন নির্মাতা মাকসুদ হোসাইন। আর এই সিনেমা ‘সাবা’র নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মেহজাবীন চৌধুরী। সাবা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে মেহজাবীনের সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
অবশেষে সাবা দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে। মেহজাবীনের সাবা হয়ে ওঠার জার্নি কেমন ছিল?
এটা একটা মেয়ের গল্প, যে মধ্যবিত্ত এক পরিবারের সন্তান। যার বাবা নেই। মা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বিছানায়। হুইলচেয়ার ছাড়া চলতে পারেন না। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বনই মেয়ে সাবা। সাবা আসলে ২৫ বা ২৬ বছর বয়সি। এই বয়সে কিছু নিজস্ব চাওয়াপাওয়া থাকে। কিন্তু পরিবার আর মায়ের সেবায় ক্যারিয়ার গুছিয়ে উঠতে পারে না সাবা।
নতুন একটি কাজ করেছেন বলে শুনেছি...
আমি এটি বিলিভ করি, বলার সময় যখন হবে তখন আমি বলব। আমার কাজ আমার কথা বলবে। কতটুকু ভালো করেছি না করেছি, এটা সেপারেট ডিসকাশন। আমি বেশি বেশি কথা বলব, অনেক কিছুই বলব যে এই করেছি, ওই করে ফেলেছি-এইগুলো সব পরিকল্পনা। যেখানে বসে কথা বলছি, সেখান থেকে বের হয়ে আমি রাস্তাতেই মারা যেতে পারি। কখন কী হবে, কেউ জানি না। তো, অনেক লম্বা বা অনেক দূরের চিন্তা আমি করতে অনেক ভয় পাই। করতেও চাই না। কিন্তু সামনে আমি চাই, যেহেতু সিনেমা শুরু করেছি, সামনেও সিনেমা করব। বিভিন্ন জনার সিনেমা করব। যদি ভালো গল্প থাকে, আমার চরিত্র যদি ভালো লাগে আমি তো কাজ করতেই চাই। সবকিছুই কিন্তু কন্ট্রাকচুয়াল। আপনারা মনে করেন, কিছুই বলছে না। আর্টিস্টরা সবকিছুই লুকায়, তা কিন্তু না।
ক্যারিয়ারের সব কাজের মধ্যে কোন কাজকে সবার সামনে রাখবেন?
অবশ্যই ‘বড় ছেলে’। ‘বড় ছেলে’র পর মূলত আমার ক্যারিয়ার সামনের দিকে এগিয়ে গেল। আমি যে অভিনয় করতে পারি, সেটাও ডিরেক্টর, ভক্তদের নজরে এলো। এরপর তো ভিকি জাহেদের ‘চিরকাল আজ’। যেটা আমার কাছে অন্যরকম একটি কাজ। তবে ভিকির সঙ্গে করা ‘পূর্ণজন্ম’ নিয়ে দেশ-বিদেশ থেকে যথেষ্ট প্রশংসা এখনো পাই। সিনেমার কথা বললে, প্রিয় মালতীর কথাই বলব।
নিজের জীবনী নিয়ে ছবি বানালে কি নাম দেবেন?
‘ভালোবাসা’। আসলে যতটুকু আমি ভালোবাসা পেয়েছি এতটুকু আমি পাওয়ার যোগ্য কিনা! নিজেকে প্রশ্ন করলে আমার মনে হয়, না। কারণ আমি একটা বাইরের দেশ থেকে আসা একটা মেয়ে। যে কিছুই জানত না। কোনোভাবেই এন্টারটেইনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে জড়িত না। ফ্যামিলি-রিলেটিভদের মধ্যে কেউ জড়িত নয়। আমি একটি বিউটি প্রেজেন্টে যাই। কীভাবে কীভাবে যেন জিতে যাই। এরপর সবাই জানে যে, মেয়েটি বাংলায় পড়তে পারে না। তখন অনেকেই বলেছে, অভিনেত্রী হিসেবে সে অনেকদূর যেতে পারবে না। কিন্তু আজকে ২০২৫ এ এসে আমার কাছে মনে হয়, আমি অনেক কাজ করেছি। যতটুকু ডিজার্ভ করি, তার চেয়ে বেশি সুযোগ পেয়েছি।
কাজহীন বললে সাংবাদিকদের প্রতি ক্ষোভও ঝাড়ছেন। এ ক্ষোভ প্রকাশ কতখানি যৌক্তিক?
ক্ষোভ নয়! আপনাদের আমার প্রতি থাকতে পারে কিন্তু আমার আপনাদের প্রতি কোনো ক্ষোভ নেই। কারণ আমি যাই করেছি, তা বড় বা ছোট। আমি ভালো করলে আপনারা ভালো বলেছেন। যখন অতিরিক্ত হয়ে গিয়েছিল, তখনো বলেছিলেন-সেটা অবশ্যই ভালো। যখন একটা কনস্ট্রাক্টিভ ক্রিটিসিজম আসে, তখন সেটা আমি ভালোভাসেই গ্রহণ করি। যদিও উপর উপর একটু ভাব দেখাই যে তা আমাকে কোনো টাচ করছে না। কিন্তু ভিতরে ভিতরে আমি অবশ্যই চিন্তা করি, আমি যা করছি তা ঠিক করছি কিনা। ঠিক হলেও তো এটা নিয়ে কেউ অন্যরকম চিন্তা করত না। বা নেগেটিভ কোনো কমেন্ট আসত না। একটা সময় অনেক কাজ করা হয়েছে। সেসময় এমনও বলা হয়েছে, সিন্ডিকেট। সব কাজ দুই-তিনজন মিলেই করে ফেলছে, নাটকের ইন্ডাস্ট্রি ডমিনেট করছে। আসলে ডমিনেট তো সবাই করতে চায়। আমি এ সুযোগ পেলে কেন করব না!
আপনার প্রিয় অভিনেত্রী কে?
জয়া আহসান আমার ফেভারিট। তার পাশে বসে থাকাও মনে হয়, আমি একটি ইনস্টিটিউটের পাশে বসে আছি।