শিরোনাম
- ভাড়া নিয়ে শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, ১০ বাস ভাঙচুর
- সিংড়ায় শীতের আগমনে লেপ–তোষকের দোকানে ভিড়
- মিরপুরে বিআরটিএ এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ
- ‘আগামী নির্বাচনে নোয়াখালীর ৬টি আসন বিএনপিকে উপহার দেওয়া হবে’
- হাতিরঝিলে ককটেল বিস্ফোরণ, মোটরসাইকেলে আগুন
- সোনারগাঁয়ে তাঁতী দলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা
- ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ জাবিতে রাত ১০টার পর যেকোনো অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ
- ‘ধানের শীষে ভোট দিয়ে দেশকে রক্ষা করুন’
- মোংলায় জামায়াতে ইসলামীর ওলামা সম্মেলন অনুষ্ঠিত
- কাতারের মধ্যস্থতায় শান্তিচুক্তির পথে কঙ্গো ও এম২৩ বিদ্রোহীরা
- বিশ্বনাথে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পেলেন দুই সহস্রাধিক মানুষ
- বারী সিদ্দিকীর জন্মদিনে কেক কাটলেন হিমু পাঠক আড্ডার সদস্যরা
- তফসিলের আগে লটারির মাধ্যমে মাঠ প্রশাসনকে আবারও ঢেলে সাজাবে সরকার
- দিনাজপুরে জামায়াত প্রার্থীর মোটরসাইকেল র্যালি
- সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধগুলো আজও পুনর্নির্মাণ হয়নি
- যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম নিয়ে মোংলা বন্দরে জাহাজ
- আগামী নির্বাচন বানচাল হলে দেশ ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে
- বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত ডব্লিউটিও’র
- রাজনীতিতে ফ্যাসিবাদ প্রত্যাবর্তনের সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিতে হবে : মামুনুল হক
- দুই শিরোপার নায়ক রাসেলকেই বাদ দিল কেকেআর!
একজন ব্যাংকারের ব্যাখ্যায় সিআরআর
রিয়াজুল হক
অনলাইন ভার্সন
মনজুরুল হক একটি ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। অত্যন্ত দক্ষ এবং পরিশ্রমী ব্যাংকার। পেশাগত কাজের বাইরেও ব্যাংকিং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিস্তর পড়ালেখা করে থাকেন। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং নিজের ব্যাংকের প্রয়োজনীয় সার্কুলার মোটামুটি মাথায় নিয়েই চলাচল করে। তার ছোট ভাই জহির বিবিএ শেষ বর্ষে অধ্যয়নরত। ব্যাংকিংয়ের একটি বিষয়ের উপর থিসিস করছে। একদিন রাতের খাওয়া শেষে জহির তার বড় ভাইকে জিজ্ঞেস করলো, ভাইয়া সিআরআর (CRR) কি জিনিস?
মনজুরুল : সাধারণ মানুষজন ব্যাংকে টাকা জমিয়ে রাখে, জানিস?
জহির : জানবো না কেন? তুমি কি আমাকে ছোট ভাবো।
মনজুরুল : কেউ হয়ত অল্প সময়ের জন্য ব্যাংকে টাকা জমা রাখে। যে কোন সময় টাকা তুলে নিতে পারে। সময়ের ভিত্তিতে এই দায়কে চলতি দায় বলে। আবার কোন গ্রাহক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য টাকা জমা রাখে। নির্দিষ্ট সময় পর গ্রাহক ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেয়। ব্যাংকের এই দায়কে মেয়াদী দায় বলে। আবার গ্রাহক যদি বিভিন্ন কারণে ব্যাংকের কাছে কিছু পাওনা থাকে, সেগুলোও ব্যাংকের দায় (যেমন, মেয়াদী আমানতের বিপরীতে গ্রাহককে সুদ দিতে হয়)।
জহির : দায় বলছো কেন?
মনজুরুল : গ্রাহক চাইলেই তো ব্যাংক থেকে টাকা উঠিয়ে নিতে পারে। এজন্যই দায় বলছি।
জহির : হুম, বুঝলাম।
মনজুরুল : একটি ব্যাংকের যে পরিমাণ মেয়াদি দায় এবং তলবী দায় থাকে, সেই দায়ের নূন্যতম ৩.৫% ( দ্বি-সাপ্তাহিক গড় ভিত্তিতে ৪%) নগদ টাকা প্রতিদিন বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখতে হয়, এটাকেই সিআরআর বলে।
জহির : বাংলাদেশ ব্যাংকে কি নগদ টাকাই জমা রাখতে হয়?
মনজুরুল : হুম, নগদ টাকা জমা রাখতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রতিটা ব্যাংকের হিসাব খোলা আছে।
জহির : সিআরআর রেট কি কখনো পরিবর্তন হয়?
মনজুরুল : পরিবর্তন হবে না কেন? কয়েকদিন আগেও সিআরআর (CRR)রেট ছিল দৈনিক ভিত্তিতে ৪.৫% এবং দ্বি-সাপ্তাহিক গড় ভিত্তিতে ৫% ছিল। কিন্তু করোনার এই সময় দেশের অর্থনীতিতে যেন ক্ষতিকর কোন প্রভাব না পড়ে এবং মুদ্রাবাজারে নগদ টাকার প্রবাহ যেন ঠিক থাকে, সে কারণে সিআরআর রেট দৈনিক ভিত্তিতে ৩.৫% এবং দ্বি-সাপ্তাহিক গড় ভিত্তিতে ৪% করা হয়েছে।
জহির : ‘মুদ্রাবাজারে নগদ টাকার প্রবাহ’ বিষয়টা একটু বুঝিয়ে বলো?
মনজুরুল : মন কর, আমার ব্যাংকের মেয়াদি দায় এবং তলবী দায়ের পরিমাণ ২০০ টাকা। এর উপর ৫% সিআরআর জমা রাখতে হলে ১০ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখতে হতো। এখন যদি সিআরআর ৩% করা হয়, তাহলে আমাকে ৬ টাকা জমা রাখতে হবে। সিআরআর রেট কমার কারণে আমার ব্যাংকের কাছে (১০-৬) বা ৪ টাকা বেশি থাকবে। এই ৪ টাকা আমি বাজারে বেশি বিনিয়োগ করতে পারব। অর্থাৎ মুদ্রা বাজারে নগদ টাকা বেশি থাকবে। আবার সিআরআর যদি বাড়িয়ে দেওয়া হয়, তাহলে মুদ্রা বাজারে নগদ টাকা কমে যাবে।
জহির : অনেক কঠিন কাজ।
মনজুরুল : কঠিন তো অবশ্যই। সিআরআর রেট নির্ধারণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালক করে থাকে। অনেক উপাদান বিশ্লেষণ করে যখন বাংলাদেশ ব্যাংক সিআরআর রেট পরিবর্তন আবশ্যক মনে করে, তখনই পরিবর্তন করে থাকে।
জহির : সিআরআর-এর টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে না রাখলে কি কোন ক্ষতি হতো?
মনজুরুল : সিআরআর আমানতকারীদের জন্য রক্ষাকবচও বলা যায়। আমানতকারীকে ঝুঁকিমুক্ত রাখার জন্যই এই ব্যবস্থা।
জহির : ব্যাংক যদি বাংলাদেশ ব্যাংকে একদিন সিআরআর এর টাকা জমা রাখতে ব্যর্থ হয়, তখন কি হবে?
মনজুরুল : যেদিন রাখতে পারবে না, সেদিনই বাংলাদেশ ব্যাংক জরিমানা করে থাকে। এই টাকা জমা রাখা বাধ্যতামূলক।
জহির : আচ্ছা, সিআরআর এর পূর্ণরূপ আরেকবার একটু বলবা?
মনজুরুল : সারারাত রামায়ণ পড়ে সকালে উঠে জিজ্ঞেস করিস, সীতা কার বাপ? সিআরআর পূর্ণরূপ হচ্ছে ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও।
জহির : আচ্ছা, গেলাম। তুমি সারাদিন ল্যাপটপে কি করো? চোখের একটু বিশ্রাম নাও।
মনজুরুল : যা, তোর রুমে যা।
লেখক : অর্থনৈতিক বিশ্লেষক এবং যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক
এই বিভাগের আরও খবর