কেবল রাষ্ট্রের বস্তুগত উন্নয়ন নয়, উন্নত জাতি গঠনের ক্ষেত্রেও সাংবাদিকদের অপরিসীম ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়তে সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতে হবে। গতকাল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে ‘সাংবাদিকতার নীতিমালা, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন ও তথ্য অধিকার আইন অবহিতকরণ’ শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল চট্টগ্রামে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য এ কর্মশালার আয়োজন করে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে অনলাইনের পাশাপাশি দৈনিক ও টেলিভিশনের অনলাইন রয়েছে। অনলাইনকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হচ্ছে। অনলাইনগুলোকে শৃঙ্খলায় আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে সাংবাদিক ইউনিয়ন ও প্রেস ক্লাবগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ও প্রধান বাণিজ্যনগর। দেশের স্বাধিকার, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের আন্দোলনে চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের রয়েছে অনুস্মরণীয় ও অনুকরণীয় ভূমিকা। গণমাধ্যম রাষ্ট্র গঠন, নতুন প্রজন্মের মনন বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যে কোনো অনুসন্ধানী রিপোর্ট সমাজের তৃতীয় নয়নকে খুলে দেয়। তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যমগুলোতে অনুসন্ধানী রিপোর্ট আগের চেয়ে কমে গেছে। এ ধরনের রিপোর্ট বাড়াতে হবে। উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অনলাইনে অবাধ তথ্য সরবরাহের কারণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমস্যা হচ্ছে। নানা বিপদ সৃষ্টি হচ্ছে। দেশে ৮ হাজার অনলাইন পোর্টাল রয়েছে। সাংবাদিকদের নামে চাঁদাবাজি, অনৈতিকতা, হলুদ সাংবাদিকতা থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রকৃত সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে, সাংবাদিক নেতৃত্বকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সাংবাদিক কারা হবেন তা ঠিক করতে হবে। এটি ঠিক না করলে পেশার মর্যাদা ধরে রাখা যাবে না। সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক ও প্রেস কাউন্সিলের সদস্য নঈম নিজাম বলেন, সাংবাদিকদের মর্যাদার আসন ধরে রাখতে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে হবে। রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তিক মানসিকতা পরিহার করে একজন সাংবাদিককে সার্বক্ষণিক সংবাদকর্মী হতে হবে। সাহসের সঙ্গে গণমানুষের কথা বলতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও জাতীয় পতাকার পক্ষে থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
প্রেস কাউন্সিল সদস্য ও বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, সাংবাদিকতা মূর্খ লোকের পেশা নয়। এটা সব সময়ের জন্য আধুনিক পেশা। অতীতকে ধারণ করে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চিন্তা করতে হয় একজন সাংবাদিককে। সমগ্র বিশ্বে সাংবাদিকদের এখন বাঁকা চোখে দেখা হয়। উন্নত বিশ্বেও সাংবাদিকদের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে কোনো কোনো ক্ষেত্রে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হচ্ছে। তিনি ১৯৭৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের অর্ডিন্যান্সমূলে প্রতিষ্ঠানটি গঠনের দিনটিকে জাতীয় গণমাধ্যম দিবস ঘোষণার দাবি জানান। প্রেস কাউন্সিল সচিব মো. শাহ আলমের সঞ্চালনায় এবং চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ প্রমুখ।