সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

রাজাকারের আগে দরকার অনুপ্রবেশকারীর তালিকা

সরকারের বড় বড় পদে তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজাকারের আগে দরকার অনুপ্রবেশকারীর তালিকা

আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী

প্রখ্যাত সাংবাদিক-ভাষাসৈনিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে জামায়াতের অনুপ্রবেশকারী রয়েছে। তারা সরকারের বড় বড় পদে রয়েছেন, তাদের কথা বললে হয়তো আমাকে আর দেশে আসতে দেওয়া হবে না। রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করার আগে এসব অনুপ্রবেশকারীর তালিকা প্রকাশের প্রয়োজন ছিল। জানি না কোনো রাজাকারের হাত দিয়েই ‘রাজাকারের তালিকা’ হচ্ছে কিনা। মনে রাখতে হবে, শেখ হাসিনাকে তারা সরিয়ে দিতে পারলে তাসের ঘরের মতো আওয়ামী লীগ শেষ হয়ে যাবে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘সম্প্রীতি, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশে বিজয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, অনেক রাজাকার আছে, যাদের জিয়াউর রহমান ও এরশাদ সম্মান দিয়েছিলেন। যেমন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ফারুক। তাকে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সেই ফারুককে পরে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। এখনো রাজাকার আছে। অনেক রাজাকার আছে। এমনকি আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনার আশপাশেও আছে।... তাদের নাম বললে আমার আর ঢাকায় আসা হবে না। তাই আমি নাম বলতে চাই না। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, রাজাকারদের তালিকা করলে দেখা যাবে, রাজাকাররাই সেই তালিকা তৈরি করছে। ওই তালিকায় মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার, রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যাবে। কাদের মোল্লাকে শহীদ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এর আগেও ওই পত্রিকা মোনায়েম খানকে শহীদ বলে আখ্যায়িত করেছে। মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, বাকশালের সময় আওয়ামী লীগ দাঁড়াতে পারেনি। কারণ, বাকশাল গঠনের তিন মাসের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলো। তাই বাকশাল ভালো-মন্দ যাচাইয়ের সুযোগ ছিল না। আমার ধারণা, বাকশাল থাকলে আজকের বাংলাদেশের দুর্নীতি, সন্ত্রাস এত ব্যাপক হতো না। হয়তো এত চাকচিক্যময় রাস্তাঘাটও হতো না। বর্তমান রাষ্ট্রীয় নেতৃত্ব প্রসঙ্গে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, আমার ধারণা, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখা না হলে বাংলাদেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে। বাংলাদেশ আফগানিস্তানে পরিণত হবে। এখানে মৌলবাদী নেতৃত্ব এসে যাবে। আওয়ামী লীগকে এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। অনুষ্ঠানে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতি বাংলাদেশে থাকবে। কেউ বুদ্ধিজীবীদের নাম মুছে ফেলতে পারবে না। দৈনিক সংগ্রাম প্রসঙ্গে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, একজন জল্লাদ, একজন আত্মস্বীকৃত যুদ্ধাপরাধী, যার আদালতের বিচারের মাধ্যমে ফাঁসির রায় হয়েছে, রায় কার্যকর হয়েছে, একটি পত্রিকা তাকে শহীদ নামে উল্লেখ করেছে। এর বিচার শুরু হয়েছে। আমরা কেউ থেমে নেই। এই পত্রিকার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা তথ্য মন্ত্রণালয়ের নেবে। সভাপতির বক্তব্যে সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যার বিচার এখনো শেষ হয়নি। এই হত্যাকান্ডে র আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রয়োজন। এর জন্য আগামী এক বছর সম্প্রীতি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গণস্বাক্ষর কার্যক্রম চালানো হবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডে  নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাংবাদিক হারুন হাবিব, সাবেক সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ, ডা. নুজহাত চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সর্বশেষ খবর