কভিড-১৯-এর ঝুঁকি এড়াতে যত বেশি পরীক্ষা করা হবে, ততই মানুষের মুক্তি বয়ে আনবে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, পরীক্ষা, পরীক্ষা আর পরীক্ষা। শুরুতেই বাংলাদেশ পরীক্ষায় নিয়ন্ত্রণ আনে। এটা উচিত হয়নি। এখনো পর্যাপ্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়নি। এ জন্য গবেষকরা এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাংলাদেশকে চরম ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, কভিড-১৯ মোকাবিলায় সারা বিশ্বই এখন ‘স্টে হোম’ নীতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশকেও এটা কঠোরভাবে পালন করতে হবে।
গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনালাপে ড. মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন। সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিশেষ করে আমরা যারা বার্ধক্যে তাদের নানা কারণেই এখন আর বাইরে থাকার সুযোগ নেই। বাসায় অবস্থান করেই এ ঝুঁকি এড়ানো অনেকটাই সম্ভব। তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, নানা প্রতিকূল পরিবেশেও সবাই ঘরে থাকুন। বাইরে গেলে মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করুন। চিকিৎসকদের দেওয়া পরামর্শ মেনে চলুন। বাসাবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। সামনে আরও কয়েকদিন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এই কয়েকদিন সবাই বাসাবাড়িতে থাকুন। আশা করি, বাংলাদেশ করোনা মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, সরকার শুরু থেকেই রোগী নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। কম টেস্ট করেছে। এটা মোটেও ঠিক হয়নি। সরকারের উচিত ছিল, যে কোনে মূল্যে রোগ নিরূপণের চেষ্টা করা। এ জন্য বেশি বেশি টেস্ট করা উচিত ছিল।
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, আরব আমিরাতে সব জনগণকেই করোনাভাইরাসের জন্য পরীক্ষা করানো হচ্ছে। উন্নত বিশ্বগুলো এখন এই নীতিতেই যাচ্ছে। সেখানে আমাদের এখন পর্যন্ত সব বিভাগীয় শহরগুলোতেও টেস্ট করানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আইইডিসিআরের মতো একটি সংস্থার ওপরই শুধু নির্ভর করা হয়েছিল। এটাও ঠিক হয়নি। মার্চের শেষ দিক পর্যন্ত যে হারে মানুষের নমুনা সংগ্রহ করা হয় এটা ছিল খুবই নগণ্য। এটা আরও বৃহৎ পরিসরে হওয়া উচিত ছিল। ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, করোনার ভয়াবহতা দেখছে সারাবিশ্ব। বাংলাদেশও অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। সরকার শুরু থেকেই প্রস্তুত ছিল না। তাহলে ঝুঁকি অনেকটা এড়ানো সম্ভব হতো। তারপরও সবাই মিলে মরণঘাতী করোনোভাইরাস মোকাবিলা করতে হবে। তিনি জানান, এ পরিস্থিতিতে দলীয় সব কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। সবাইকে বাসায় থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে সিনিয়র নেতারা সবাই বাসায় থাকবেন এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পার্টি অফিসও এখন বন্ধ। সারা দেশে লকডাউন হয়ে যাওয়ায় শুধু হতদরিদ্র ও দুস্থদের মধ্যে ত্রাণ ও অন্য উপকরণ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম চলছে।