মঙ্গলবার, ৯ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

দুর্নীতির কারণে নারীর ঝুঁকি বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতির কারণে নারীর ঝুঁকি বেশি

টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, দেশে সুশাসনের অভাব ও দুর্নীতির কারণে নারীর ক্ষমতায়ন কাক্সিক্ষত মাত্রায় অর্জন ব্যাহত হচ্ছে। আবার দুর্নীতির কারণে পুরুষের তুলনায় নারীর ঝুঁকি বেশি। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। তাই নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন  যেমন অসম্ভব, তেমনি নেতৃত্বে নারীর কার্যকর অংশগ্রহণ ছাড়া জেন্ডার সমতা ও সুশাসন নিশ্চিত করাও সম্ভব নয়। জেন্ডার অসমতা ও দুর্নীতি পরস্পর সম্পর্কিত। জেন্ডার অসমতা সুশাসন, টেকসই উন্নয়ন এবং দারিদ্র্যবিমোচনকে বাধাগ্রস্ত করে। বিভিন্ন গবেষণায়ও দেখা গেছে- দুর্নীতির কারণে নারীর ক্ষমতায়ন ব্যাহত হয়। গতকাল আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ- টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। চলমান কভিড-১৯ প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, করোনা অতিমারী থেকে উত্তরণে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও পুরুষের পাশাপাশি নারীরা সমানতালে নেতৃত্ব দিচ্ছে। বিশেষ করে সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে  কভিড-১৯ মোকাবিলায় স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের অবদান অনেক; সম্প্রতি কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শীর্ষ অনুপ্রেরণাদায়ী নারী নেতৃত্বের স্বীকৃতি তার প্রমাণ।

কিন্তু এমন সময়েও নারীদের প্রতি সহিংসতা কিংবা নারীদের অবদমনের প্রক্রিয়া বন্ধ নেই।

বিজ্ঞপ্তিতে টেকসই উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিতে নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা এবং সবক্ষেত্রে নারীর নেতৃত্ব প্রদানের মতো অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি। সংস্থাটি পরিচালিত জাতীয় খানা জরিপ-২০১৭ এর তথ্য অনুযায়ী, সেবাগ্রহণকারী হিসেবে ৩১ দশমিক ৮ শতাংশ নারী দুর্নীতির শিকার হয়েছে। আরেকটি গবেষণায় দেখা যায়, নারীর ওপর সুশাসনের ঘাটতি ও দুর্নীতির বহুমুখী প্রভাব রয়েছে। নারী যেমন দুর্নীতির শিকার হয়, তেমনি নারী দুর্নীতির মাধ্যম ও সংঘটক হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে। এমন বাস্তবতায় দুর্নীতির কার্যকর প্রতিরোধে নারীর ক্ষমতায়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায়, কভিড-১৯ অতিমারীকালে ৩০ দশমিক ৫৪ শতাংশ নারী শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, ২২ দশমিক ৯৯ শতাংশ নারী যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, ৭৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ নারীর দৈনন্দিন জীবনাচার নিয়ন্ত্রণ এবং ৩৫ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ নারী অর্থনৈতিকভাবে নীপিড়নের শিকার হয়েছেন। আর ৪৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ নারী শারীরিক ও যৌন উভয় ধরনের নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। পাশাপাশি এ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ থাকায় এবং পারিবারিক উপার্জন হ্রাস পাওয়ায় বাল্যবিবাহ এবং ঝরে পড়া নারী শিক্ষার্থীর হার বাড়ছে। অথচ টেকসই উন্নয়নের জন্য নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করে নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন জরুরি। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-৫ এ নারীদের সম-অধিকার এবং নারী ও কন্যাশিশুদের ক্ষমতায়নে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অভীষ্ট-১৬ তে দুর্নীতি প্রতিরোধ, সুশাসন, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। তাই সব পর্যায়ে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ, নেতৃত্ব এবং সমঅধিকার ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত না হলে টেকসই উন্নয়ন অর্জন অসম্ভব।

সর্বশেষ খবর