বৃহস্পতিবার, ১ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

সংক্রমণের নতুন রেকর্ড

২৪ ঘণ্টায় করোনায় প্রাণ গেল ৫২ জনের

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংক্রমণের নতুন রেকর্ড

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারায় ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড রোগী শনাক্ত হয়েছে গত এক দিনে। মোট মৃত্যু ছাড়িয়ে গেছে নয় হাজার। গত বুধবার ৫ হাজার ৩৫৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে আরও ৫২ জনের। এক দিনে শনাক্ত রোগীর এই সংখ্যা দেশে মহামারী শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ। রোগী বাড়ায় করোনা টেস্টে ভোগান্তি বেড়েছে।

নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৬ লাখ ১১ হাজার ২৯৫ জনে। আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ৫২ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট ৯ হাজার ৪৬ জনের মৃত্যু হলো। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট ২২৪টি ল্যাবে ২৬ হাজার ৯৩১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪৬ লাখ ৭০ হাজার ৫৭৬টি নমুনা।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৯ শতাংশ।

শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৫ লাখ ১৭ হাজার ১১৩টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১১ লাখ ২৬ হাজার ৬৩২টি। গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৩৮ জন পুরুষ আর নারী ১৪ জন। তাদের প্রত্যেকেই হাসপাতালে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৩০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৮ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৮ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৫ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল। মৃতদের মধ্যে ৩৪ জন ঢাকা বিভাগের, ৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩ জন রাজশাহী বিভাগের, ৩ জন খুলনা বিভাগের, ২ জন সিলেট বিভাগের এবং ১ জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৮ হাজার ৯৯৪ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৮১২ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ২৩৪ জন নারী।

তাদের মধ্যে ৫ হাজার ৬০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এ ছাড়া ২ হাজার ২৩৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১ হাজার ১৯ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৪৪৯ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৭৮ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬৭ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৮ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম। মৃতদের মধ্যে ৫ হাজার ১৫২ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৬৪০ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৫০৪ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৮২ জন খুলনা বিভাগের, ২৭৩ জন বরিশাল বিভাগের, ৩২০ জন সিলেট বিভাগের, ৩৭৪ জন রংপুর বিভাগের এবং ২০১ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

করোনা পরীক্ষায় আবারও ভোগান্তি : এক মাস আগেও করোনা পরীক্ষার বুথগুলোতে অনেকটা অলস সময় কাটিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। অনেক বুথে সারা দিনে নমুনা দিতে আসতেন ১০-১৫ জন। মাসের ব্যবধানে সেই বুথগুলোতে এখন লম্বা লাইন। সংক্রমণ উপসর্গ নিয়ে দুই-তিন দিন ঘুরেও নমুনা দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন অনেকে। আবার গাদাগাদি করে নমুনা দিতে পারলেও ফলাফল পেতে পেরিয়ে যাচ্ছে সপ্তাহ। আবার যেসব হাসপাতাল নমুনা পরীক্ষার জন্য অনলাইন নিবন্ধন চালু করেছে, সেখানে দিনের শুরুতে ৫-১০ মিনিটের মধ্যেই শেষ হয়ে যাচ্ছে পরের দিনের নির্দিষ্ট কোটা। করোনা মহামারীর এক বছর পরও নমুনা পরীক্ষা করাতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে দেশের মানুষকে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারে নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১ হাজার ৯২৯টি। গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা করা হয়েছে ৩ হাজার ২৬৯টি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যে দেখা গেছে, প্রতিদিন যত নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে পরীক্ষা হচ্ছে তার চেয়ে কম বা বেশি।

গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬ হাজার ৬৭১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ২৬ হাজার ৯৩১টি। সংগৃহীত নমুনার চেয়ে ২৬০টি নমুনা বেশি পরীক্ষা করা হয়।

অর্থাৎ, এই নমুনাগুলো আগে সংগ্রহ করা হলেও নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা করা হয়নি। প্রতিদিনের সংগৃহীত নমুনা ওই দিনই পরীক্ষা না করায় অনেকের রিপোর্ট পেতে দেরি হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর