বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

তরুণদের আক্রান্ত হার ঊর্ধ্বমুখী মৃত ৫৬ শতাংশই ষাটোর্ধ্ব

জয়শ্রী ভাদুড়ী

তরুণদের আক্রান্ত হার ঊর্ধ্বমুখী মৃত ৫৬ শতাংশই ষাটোর্ধ্ব

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্তদের মধ্যে তরুণদের হার ঊর্ধ্বমুখী। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৭ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ৪ লাখই যুবক, যাদের বয়স ২১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। আর এ পর্যন্ত যে ১০ হাজারের বেশি মানুষ কভিড-১৯ রোগে মারা গেছেন, তাদের ৮ হাজারের বেশির বয়স ৫০ এর বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুবকরা বাইরে বের হচ্ছে বেশি, তাই সংক্রমিতও বেশি হচ্ছে। আর নানা শারীরিক জটিলতার কারণে বয়স্কদের মৃত্যুর হার বেশি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে গত বছরের মার্চে প্রাদুর্ভাবের পর গতকাল পর্যন্ত ৭ লাখ ৩২ হাজার ৬০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ১০ হাজার ৬৮৩ জন। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআরের ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আক্রান্তদের সবচেয়ে বেশি ৫৪ দশমিক ৭ শতাংশের বয়স ২১ থেকে ৪০ বছর। সংখ্যার হিসাবে তা ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৬৩৪ জন। এদের মধ্যে ২৭ দশমিক ৬ শতাংশের (১ লাখ ৯৪ হাজার ৭৫) বয়স ২১ থেকে ৩০ বছর। ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ২৭ দশমিক ১ শতাংশ বা ১ লাখ ৯০ হাজার ৫৫৯ জন। ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সের ১১ দশমিক ২ শতাংশ এবং ষাটোর্ধ্ব ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে যে ১০ হাজার ৬৮৩ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষই ৮১ শতাংশ অর্থাৎ, ৮ হাজার ৬৫৫ জন। মোট মৃত্যুর ৫৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ অর্থাৎ ৬ হাজার ৩৪ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৭ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ৪ লাখই যুবক, যাদের বয়স ২১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুবকরা বাইরে বের হচ্ছে বেশি, তাই সংক্রমিতও বেশি হচ্ছে। আর নানা শারীরিক জটিলতার কারণে বয়স্কদের মৃত্যুর হার বেশি। আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে, সারা বিশ্বেই বয়স্কদের মৃত্যুর হার বেশি। যাদের শারীরিক জটিলতা থাকে, তারা করোনাভাইরাসে বেশি সমস্যায় ভোগে। তাদের মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি। বাংলাদেশে বয়স্কদের অনেকে জানেই না তার ডায়াবেটিস আছে, হাইপারটেনশন আছে। এ কারণে আক্রান্ত হওয়ার পর বাসায়ই জটিলতা তৈরি হয়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর  কিছু করার থাকে না। তিনি আরও বলেন, ‘তরুণরা নানা কাজে বাসার বাইরে বের হয়। তারা সচল জনগোষ্ঠী, তাদের সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। বাসার বয়স্করা যারা এক দিনও বাইরে বের হয় না, তারাও আক্রান্ত হচ্ছে তরুণদের মাধ্যমে। তরুণরা জানেও না তাদের থেকে বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছে। এ কারণে যুবসমাজের চলাফেরায় সাবধানতা অবলম্বন করা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় আরও জোর দিতে হবে।’

সর্বশেষ খবর