রবিবার, ৩০ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রযুক্তির অপব্যবহারেই বাড়ছে অপরাধ

সাখাওয়াত কাওসার ও আলী আজম

প্রযুক্তির অপব্যবহারেই বাড়ছে অপরাধ

প্রযুক্তির অপব্যবহারেই বাড়ছে অপরাধ। বহুমাত্রিক এসব অপরাধের কারণে বেড়েই চলেছে সামাজিক ও পারিবারিক অস্থিরতা। নিরাপত্তাহীনতা বেড়ে চলেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। ২০১৯ সালে বিটিআরসি ‘প্যারেন্টাল গাইডেন্স সুবিধা’ নিশ্চিতে ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নির্দেশনা জারি করলেও তা কাগজে-কলমেই রয়ে গেছে। এর মধ্যে গত কয়েক বছরে কিশোর গ্যাংয়ের ব্যাপকতা বেড়ে গেলেও দীর্ঘমেয়াদি কোনো পরিকল্পনায় যাচ্ছেন না নীতিনির্ধারকরা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো কিছুদিন ঘন ঘন অভিযান চালিয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় উঠে আসছে, প্রযুক্তির অপব্যবহার থেকেই উদ্ভব হয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের। বরগুনার রিফাত হত্যা, রাজধানীর কলাবাগানে স্কুলছাত্রী আনুশকা হত্যা, ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি কিশোরী গ্যাংরেপের মতো ঘটনাগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে কোন পথে যাচ্ছে তরুণসমাজ। অপরাধ ও সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের ব্যাপারে কঠোর নীতিমালা তৈরির সময় এসেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিরাপদে রাখতে আইন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়সসীমা নির্ধারণ করে দিতে হবে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘অ্যাসিড নিক্ষেপ, বাল্যবিয়ে ও যৌতুক ঠেকাতে সরকার যেভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে, প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে এমনই সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে এনজিওর সহায়তা নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপে এসব উদ্যোগ নেওয়া অতীব জরুরি হয়ে পড়ছে। অভিভাবকদের সচেতন করার কোনো বিকল্প নেই। প্রয়োজনে রেলের আইনটিও ভেবে দেখতে পারেন নীতিনির্ধারকরা। সে আইনে রেললাইনের ওপর কোনো অপ্রাপ্তবয়সী শিশুর অপরাধের দায় নিতে হয় অভিভাবককে।’ ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের বিষয়ে পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘ডিজিটাল ডিভাইসের বিষয়ে পারতপক্ষে শিশুদের নিরুৎসাহ করার উদ্যোগ নেওয়াতে হবে বাবা-মায়ের মাধ্যমে। তবে ডিভাইস ব্যবহার করলেও তার ওপর নজরদারির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ আজকের শিশু-কিশোররাই তো আগামীতে দেশের হাল ধরবে। আরেকটা বিষয় হলো, যত সময় যাচ্ছে সামাজিক অবকাঠামোর পরিবর্তন হচ্ছে, পারিবারিক বন্ধন ক্ষীণ হয়ে আসছে। একটা বিষয় ভুলে গেলে চলবে না, নৈতিক শিক্ষা সাধারণত পরিবার থেকেই শিশুরা পেয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। এ বিষয়টিও নীতিনির্ধারকদের ভাবনায় আসা উচিত।’ অনুসন্ধান বলছে, প্রতিটি আবিষ্কারের ভালো ও খারাপ দিক আছে। বর্তমানে তরুণসমাজ সবচেয়ে বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। কিন্তু এর অপব্যবহারের কারণে দ্রুত ধ্বংসের পথে এগিয়ে যাচ্ছে তারা। বাবা-মার উৎসাহ বা অবহেলার কারণে শিশুরা খুব কম বয়সে বিভিন্ন গেমে আসক্ত হচ্ছে। করোনাকালে কিশোরদের অপরাধপ্রবণতাসহ গ্যাং কালচারের আসক্তি বেড়েছে। লকডাউনে অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে শিশু-কিশোরদের অপরাধের ধরনও অনেকটা বদলেছে। এ সময় অপরাধের সঙ্গে নতুন মাত্রা দিয়েছে প্রযুক্তি। অলস সময়ে এই বয়সী কিশোরদের যৌনতার প্রতি আগ্রহও বেড়েছে। শিশু-কিশোররা অনলাইন ঘেঁটে শুধু শিক্ষামূলক কনটেন্টই দেখছে এমন নয়। সামাজিক প্রেক্ষাপটে যায় না এমন অনেক অনৈতিক কনটেন্টও সার্চ করছে। নিজেদের জীবনেও তার প্রয়োগ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কিশোররা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সংঘবদ্ধ হয় ঘরে বসেই। ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, ইমোর বিভিন্ন গ্রুপে পরিকল্পনা হয় গ্যাং কালচারের। কোথায় কখন আড্ডা হবে, কতগুলো বাইক/গাড়ি থাকবে, কোন এলাকায় অবস্থান নিতে হবে, এমনকি কোথায় বসে কোন ধরনের মাদক গ্রহণ করবে, তা-ও ঠিক করে ফেলছে ঘরে বসে এসব গ্রুপে। অভিভাবক এবং আইন প্রয়োগাকারী সংস্থার সদস্যরাও টের পান না তাদের এসব পরিকল্পনার।

অন্যদিকে দেশে ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ার উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে প্রযুক্তির অপব্যবহারকে দায়ী করেছেন অনেক বিশ্লেষক। তারা এটাও বলছেন, করোনাকালে ডিভাইস-নির্ভরতা, পারিবারিক বন্ধন কমে যাওয়া এবং সন্তানদের প্রতি বাবা-মায়ের দায়িত্ববোধের অভাব বাড়িয়ে দিয়েছে সামাজিক অপরাধ। কিশোর গ্যাং তো সাইবারের সৃষ্টি। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবে শৈশব থেকে অনাকাক্সিক্ষত ওয়েবসাইট বা অ্যাপের প্রতি আসক্তি বাড়ছে নতুন প্রজন্মের। পরবর্তী সময়ে তারাই সহিংস হয়ে উঠেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সম্প্রতি শিশু-কিশোরদের ওপর আমি নিজেই এমন একটি সমীক্ষা চালিয়েছিলাম। এই সমীক্ষায় দেখা যায়, বর্তমানে কিশোর-কিশোরীরা স্মার্টফোনকেন্দ্রিক ইন্টারনেটের সুযোগকে অপব্যবহার করছে। তাই অন্তত এইচএসসি পর্যন্ত কিশোর-কিশোরীদের কাছে স্মার্টফোন না দেওয়া যেতে পারে। এর জন্য প্রয়োজনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাহায্য নিতে হবে।’

সমাধানের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষের উচিত হবে, শিশু-কিশোরদের জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক একটি কমিটি গঠন করা। এই কমিটিতে শিক্ষক, চিকিৎসক, সমাজকর্মী, মনোবিজ্ঞানী, পুলিশ, প্রশাসন একই সঙ্গে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণ থাকবে। তারা ওই এলাকার শিশু-কিশোরদের ব্যাপারে তথ্য রাখবেন। গত ২৬ মে রাজধানীর ধানমন্ডি ও লালমাটিয়া থেকে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাদমান সাকিব ওরফে রুপল ও আসহাব ওয়াদুদ ওরফে তূর্য এবং ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র আদিন আশরাফকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা ফেসবুক আইডি ও মেসেঞ্জার গ্রুপের মাধ্যমে ভয়ংকর এলএসডি সেবন ও বিক্রির সিন্ডিকেট তৈরি করেছিলেন। তাদের ফেসবুক আইডির নাম ‘আপনার আব্বা’। আর মেসেঞ্জার গ্রুপের নাম ‘বেটার ব্রাউনি অ্যান্ড বেয়ন্ড’। এই গ্রুপের ১ হাজার সদস্য রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার বিভাগের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান তাদের কাছ থেকে এলএসডি সংগ্রহ করে ঈদের পরদিন ১৫ মে ক্যাম্পাসের কার্জন হলে বসেই সেবন করেন বলে তথ্য মিলেছে। পরে ডাব বিক্রেতার দা নিয়ে নিজের গলায় আঘাত করে মারা যান হাফিজ। এক বছর ধরে রুপল গ্রুপ নেদারল্যান্ডস থেকে এলএসডি সংগ্রহ করে বিক্রি করে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র, ব্যাংকারসহ প্রতিষ্ঠিত পরিবারের কিছু সন্তান তাদের চক্রে জড়িত। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ভারতে এক তরুণীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় বাংলাদেশি যুবকের জড়িত থাকার প্রমাণ পায় পুলিশ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণী ও অভিযুক্ত সবাই রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকার ‘টিকটক হৃদয় বাবু’ গ্যাং গ্রুপের সদস্য। ভারতীয় পুলিশ তাদের গ্রেফতার এবং ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায়, প্রায় ২০-২২ বছর বয়সী একটি মেয়েকে বিবস্ত্র করে ৩/৪ জন যুবক শারীরিক ও যৌন নির্যাতন চালাচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের কেরালায়। পরে টিকটক হৃদয় সেই ভিডিও ভারতের বিভিন্ন বন্ধুদের কাছে শেয়ার করেন। এরপর সেই ভিডিও মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পুলিশ বলছে, এরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে নারীদের সঙ্গে প্রতারণা করত। একই সঙ্গে বিদেশে মানব পাচারেও এরা জড়িত। গত ৭ জানুয়ারি রাজধানীর কলাবাগানে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল মাস্টারমাইন্ডের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকা নূর আমিন ওরফে শাহনূরী হত্যাকান্ড সাধারণ মানুষের বিবেককে নাড়িয়ে দেয়। তদন্তে উঠে আসে, গ্রেফতার ইফতেখার ফারদিন দিহান ইন্টারনেটের মাধ্যমে  পর্নোগ্রাফি দেখে সেক্স ফ্যান্টাসিতে আসক্ত হয়ে পড়ে। আনুশকার সঙ্গে বিপজ্জনক বিকৃত যৌনাচারে ফরেন বডি বা সেক্স টয় ব্যবহার করে সে। এর আগে গত বছরের মে মাসে ‘ওয়েড লাভারস’ বা ‘গাঞ্জাপ্রেমী’ নামে একটি ফেসবুক আইডির সন্ধান পায় র‌্যাব-২ এর সদস্যরা। ওই গ্রুপে ১৫ হাজার সদস্য রয়েছে। এই গ্রুপের দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। এই গ্রুপে প্রকাশ্যে গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সেবন ও বিক্রির প্রচার চালানো হচ্ছিল। গ্রুপের মাধ্যমেই মাদক কেনাবেচা করত সংঘবদ্ধ চক্রটি। কোথায় কীভাবে মাদক পাওয়া যাবে এবং এর হোম ডেলিভারি কীভাবে হবে তার বিস্তারিত সেখানে বলা হয়। এরপর মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করে মাদক মোটরসাইকেলের মাধ্যমে পৌঁছে দেয় ওই সিন্ডিকেট। আর মাদকের টাকা নেওয়া হয় অনলাইন ব্যাকিংয়ের মাধ্যমে। সাইবার বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানভীর জোহা খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক কেন্দ্রিক অপরাধ যেভাবে দিন দিন বাড়ছে, সেখানে ফেসবুকের ‘এডিটিং প্যানেল’ বাংলাদেশে নিয়ে আসা খুবই জরুরি। সরকারের উচিত হবে দ্রুততর সময়ের মধ্যে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এর বাস্তবতা তুলে ধরে তা আদায় করা। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও ফেসবুক এডিটিং প্যানেল রয়েছে। তিনি বলেন, বিটিআরসির উচিত হবে তাদেরই তৈরি ‘প্যারেন্টাল গাইড লাইন’ সংক্রান্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নের দিকে যাওয়া। এতে করে শিশু ও কিশোররা প্রযুক্তির অপব্যবহার করতে একটু ভয় পাবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন থেকে ‘প্যারেন্টাল গাইডেন্ট সুবিধা’ প্রদান সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়। পরিচালক (লাইসেন্সিং) এম এ তালেব হোসেন স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান, আইএসপি (বিটিসিএল), আইপিটিএসপি, সেলুলার মোবাইল ফোন অপারেটর, বিডব্লিউএ প্রতিষ্ঠানকে এ-সংক্রান্তে ৮টি সুবিধা সংবলিত ‘প্যারেন্টাল গাইডেন্স সুবিধা’ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিতকরণের জন্য সরকার নির্দেশনা দিয়েছে। ওই দিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে এ-সংক্রান্তে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করে তা কমিশনের এলএল বিভাগে অবহিত করার নির্দেশনা দেওয়া হলো। অন্যথায় ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কমিশন অপারেশন কার্যক্রম বন্ধসহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ঢাকা মহানগর পুলিশের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ সর্বদা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে। এ ধরনের অপরাধগুলো সচরাচর হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে সামাজিক অবক্ষয়। বাবা-মায়ের অনুশাসনেও ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। অনেক বাবা-মা লক্ষ্য করছেন না তার সন্তান আসলে মোবাইল বা ইন্টারনেট ব্যবহার করে কী করছে। উত্তরণের ক্ষেত্রে পরামর্শ হিসেবে তারা বলছেন, ১৮ বছরের নিচে সন্তানদের স্মার্ট ফোন দেওয়া ঠিক হবে না। প্রয়োজনে অভিভাবকদের স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করবেন সন্তানরা। বাসায় ডেস্কটপে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ করে দেওয়া। তবে সেই ডেস্কটপ কিংবা ল্যাপটপ রাখতে হবে খোলামেলা স্থানে। যেখানে অভিভাবকদের যাতায়াত থাকে।

ডিএমপির সিটি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশেনের এডিসি মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘প্রযুক্তি অপরাধ নিয়ে আমরা কাজ করছি। এ ছাড়া সিআইডি ও র‌্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। দেশের ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট যেভাবে হচ্ছে, প্রযুক্তির অপরাধগুলোও সেভাবে আসছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। পাশাপাশি কেউ অভিযোগ করলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ ডিএমপির সাইবার সংশ্লিষ্ট তথ্যে জানা গেছে, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, পর্নোগ্রাফি আইন, আইসিটি আইন টেলিকমিউনিকেশন অ্যাক্ট আইনে সারা দেশে ২০১৫ সালে ৬৩৮টি, ২০১৬ সালে ৯২৩টি, ২০১৭ সালে ১০৪৫টি, ২০১৮ সালে ১১৬৫টি, ২০১৯ সালে ১৫০৭টি এবং ২০২০ সালে ১৪৫৯টি মামলা হয়। প্রযুক্তি অপব্যবহার ক্রমেই বেড়ে যাওয়ায় এই মামলাগুলোর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

২০২০ সালে ডিএসপির সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশনের এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ১৮ বছর বয়সী ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ৭ শতাংশ, ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সী ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ৩৪ শতাংশ, ২৬ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ৩৬ শতাংশ, ৩৬ থেকে ৫৫ বছর বয়সী নারী-পুরুষের মধ্যে ২০ শতাংশ এবং ৫৫ থেকে বেশি বয়সী নারী ও পুরুষের মধ্যে ৩ শতাংশ তথ্য-প্রযুক্তির অপব্যবহার করে অপরাধে জড়াচ্ছে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর এ ৯ মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৯৭৫ জন নারী। এর মধ্যে একক ধর্ষণের শিকার ৭৬২ জন, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ২০৮ জন নারী।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর