বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

ভারতের স্বাস্থ্য শিক্ষাসহ মন্ত্রিসভায় বড় পরিবর্তন

নয়াদিল্লি ও কলকাতা প্রতিনিধি

ভারতে মন্ত্রিসভায় বড় রকমের রদবদল ঘটেছে। গতকাল সন্ধ্যায় এ রদবদল ঘটানো হয়। এ সময় নতুন ৪৩ জন মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। এর আগেই মন্ত্রিসভা থেকে ১০ জনেরও বেশি হ্যাভিওয়েট মন্ত্রী পদত্যাগ করেন এবং কয়েকজন ইস্তফা দেন।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থতার কারণে বরখাস্ত করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. হর্ষবর্ধনকে। মোট ১১ জন মন্ত্রীকে বরখাস্ত করেন মোদি। যার মধ্যে আইন ও আইটি মন্ত্রী রবি সংকর প্রসাদ, তথ্যমন্ত্রী ওম প্রকাশ জাওড়েকরও  রয়েছেন। এরপরই তিনি মন্ত্রিসভায় রদবদলের উদ্যোগ নেন। সে অনুযায়ী মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ হিসেবে এসেছেন ৩৬ জন। এ নিয়ে এখন মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা দাঁড়াল ৭৭ জনে।

গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মোদি মন্ত্রিসভার মেগা পরিবর্তন ঘটানোর কাজ শুরু হয়। এর আগে মন্ত্রিসভা থেকে গুরুত্বপূর্ণদের মধ্যে ইস্তফা দেন দেবশ্রী চৌধুরী, বাবুল সুপ্রিয় প্রমুখ। এদিন ৪৩ জন নতুন মন্ত্রীর নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়, যার মধ্যে জায়গা পেয়েছেন বাংলার চার নেতাও। প্রসঙ্গত, দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রিসভায় এ রদবদল আনলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মন্ত্রিসভার যে আট হেভিওয়েট মন্ত্রী বাদ পড়েছেন তার মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন, রবিশঙ্কর প্রসাদের মতো নেতারাও। প্রথমবারের মতো এবার মোদি মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন শোভা করন্ডলাজে। নতুন মন্ত্রিসভায় শপথ পাঠ করিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। নতুন মন্ত্রী হিসেবে এদিন শপথ নিয়েছেন ভানুপ্রতাপ সিং বর্মা, ডি বি জরদোস, মিনাক্ষী লেখি, পঙ্কজ চৌধুরী, অনুপ্রিয়া সিং প্যাটেল, এস পি সিং বাঘেল, কর্ণাটকের রাজীবপ্রন্দ্রশেখর, পশুপতি কুমার পারস, কিরেন রিজিজু, রাজকুমার সিং, হরদীপ সিং পুরী, মনসুখ মান্ডবিয়, ভূপেন্দ্র যাদব, পুরুষোত্তমর খোড়াভাই রুপালা, গঙ্গাকিষেণ রেড্ডি, অনুরাগ সিং ঠাকুর, রামচন্দ্র প্রসাদ সিং, অশ্বিনী বিষ্ণু, ড. বীপ্রন্দ্র কুমার, সর্বানন্দ সোনওয়াল, নারায়ণ রানে।

প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, শপথ গ্রহণের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন মণিপুরের বিজেপি সংসদ সদস্য রাজকুমার রঞ্জন সিংহ, বাঁকুড়ার বিজেপি সংসদ সদস্য সুভাষ সরকার, পশ্চিম ত্রিপুরার বিজেপি সংসদ সদস্য প্রতিমা ভৌমিক। হিমাচল প্রদেশের সংসদ সদস্য অজয় ভট্টসহ বানোয়ারিলাল বর্মা, অজয় কুমার, দেবু সিংহ চৌহান, ভগবন্ত খুবা, মোরেশ্বর পাতিল, কৌশল কিশোর, কর্ণাটকের কে নারায়ণস্বামী, ঝাড়খন্ডের অন্নপূর্ণা দেবী, নয়াদিল্লির বিজেপি সংসদ সদস্য আইনজীবী মীনাক্ষী লেখি, সুরাতের দর্শনা বিক্রম জরদৌশ, উত্তর প্রদেশের ভানুপ্রতাপ সিংহ বর্মা, ইয়েদুরাপ্পা অনুগামী হিসেবে পরিচিত শোভা করন্দলাজে, কর্ণাটক থেকে রাজ্যসভার সংসদ সদস্য রাজীব, বিজেপির সহযোগী আপনা দলের সভানেত্রী অনুপ্রিয়া পটেল, উত্তরপ্রদেশ থেকে পঙ্কজ চৌধুরী, হিমাচল প্রদেশের হামিরপুরের অনুরাগ ঠাকুর, সেকেন্দ্রাবাদ থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য হওয়া জি কিষাণ রেড্ডি, আগের মন্ত্রিসভার কৃষি প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি, গুজরাত থেকে পুরুষোত্তম রুপালা, রাজস্থান থেকে ভূপেন্দ্র যাদব, গুজরাত থেকে মনসুখ মান্ডবিয়া, উত্তরপ্রদেশ থেকে রাজ্যসভার সাংসদ হরদীপ সিংহ পুরী, ইউপিএ আমলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব থাকা রাজকুমার সিংহ, অরুণাচল পশ্চিমের কিরেন রিজিজু, অটল বিহারি বাজপেয়ির সচিব অশ্বিনী বৈষ্ণব, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন কোচবিহারের বিজেপি সংসদ সদস্য নিশীথ প্রামাণিক, জন বার্লা, শান্তনু ঠাকুর, মণিপুরের বিজেপি সাংসদ রাজকুমার রঞ্জন সিংহ, আগরা থেকে সত্যপাল সিংহ বাঘেল। মন্ত্রিসভা রদবদলের আগে ইস্তফা দেন ১২ জন। নতুন মন্ত্রিসভায় পদোন্নতি পেয়েছেন সাতজন। প্রধানমন্ত্রী নপ্রন্দ্র মোদির পরামর্শের ভিত্তিতে ১২ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এ মন্ত্রীরা হলেন সদানন্দ গৌড়া, রবিশঙ্কর প্রসাদ, থবর চন্দ গহলৌত, রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক, ড. হর্ষবর্ধন, প্রকাশ জাভড়েকর, সন্তোষ কুমার গাঙ্গওয়ার, বাবুল সুপ্রিয়, ধোত্রে সঞ্জয় শামরাও, রতন লাল কাটারিয়া, প্রতাপ চন্দ্র সারঙ্গী ও দেবশ্রী চৌধুরী। এদিকে বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হলেন শান্তনু ঠাকুর, জন বার্লা, নিশীথ প্রামাণিক ও সুভাষ সরকার। এদিকে প্রচার থাকলেও মন্ত্রিসভায় নাম যুক্ত হয়নি দিলীপ ঘোষের। অথচ চলতি বছরের নভেম্বরেই রাজ্য সভাপতির মেয়াদ শেষ হচ্ছে তার। দুবার রাজ্য সভাপতি পদে থাকার পর বিজেপির দলীয় নীতি অনুসারেই তিনি আর রাজ্য সভাপতি পদে থাকতে পারবেন না।

শপথ অনুষ্ঠানের আগে মোদি মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেন বাংলার দুই সংসদ সদস্য বাবুল সুপ্রিয় ও দেবশ্রী চৌধুরী। বিজেপি নেতৃত্বের এ পদক্ষেপের সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রদবদলকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘কী কারণে মন্ত্রিসভার রদবদল হচ্ছে, তা বলতে পারব না। এটা তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তবে বিনাশকালে বুদ্ধিনাশ হয়, বিজেপিও তাই এখন বিভেদকামী শক্তিকেই খুঁজছে।’

সর্বশেষ খবর