মঙ্গলবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কারিকুলাম চ্যালেঞ্জিং বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে করতে হবে

আকতারুজ্জামান

কারিকুলাম চ্যালেঞ্জিং বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে করতে হবে

অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, কারিকুলাম পরিবর্তনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। প্রস্তাবিত নতুন কারিকুলামে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কারিকুলাম বোঝেন এমন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সমন্বয় করে কারিকুলাম করতে হবে। গতকাল এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

এই শিক্ষাবিদ বলেন, কারিকুলামে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণিতে কোনো পরীক্ষা হবে না- এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। তবে ধারাবাহিক যে মূল্যায়ন হবে সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেসব শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষের মূল্যায়নে খারাপ করবে তাদের জন্য নিরাময়মূলক ব্যবস্থা থাকতে হবে। এ ব্যবস্থা না থাকলে মূল্যায়নের কোনো গুরুত্ব থাকবে না। প্রাথমিক সমাপনী না থাকলে শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ, পরীক্ষাভীতি কমবে। অষ্টম শ্রেণির জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষাও অপ্রয়োজনীয়। এগুলো বাতিল করার উদ্যোগ প্রশংসনীয়। নবম-দশম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন না রেখে একমুখী করার প্রস্তাব আনা হয়েছে। এ ব্যবস্থা কিন্তু ১৯৬২ সালের আগে ছিল। ১৯৬২ সাল থেকে একাদশ শ্রেণিতে এসে বিভাগ বিভাজন শুরু হলো। বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড গঠন করার পর নবম শ্রেণি থেকে বিজ্ঞান, মানবিক, বাণিজ্যের বিভাজন আনা হলো। নতুন কারিকুলামে আগের পদ্ধতি চালু করার কথা বলা হচ্ছে। কারিকুলাম করতে হবে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে, যারা কারিকুলাম বোঝেন তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে। দেশ-বিদেশের নানা বিষয় ও বাজারের চাহিদা সম্পর্কে যারা ওয়াকিবহাল তাদের সমন্বয়ে যুগোপযোগী কারিকুলাম প্রবর্তন করতে হবে। তিনি বলেন, নবম ও দশম শ্রেণিতে কারিগরির একটি ট্রেড কোর্স নতুন করে সবার জন্য অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এটি অনেক ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ হবে। বর্তমানে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে তথ্য ও প্রযুক্তি (আইসিটি) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আইসিটি রিলেটেড নানা সরঞ্জাম আছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয়। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ের যেভাবে ক্লাস হওয়ার কথা সেভাবে হচ্ছে না। আইসিটির বেশির ভাগ প্রাকটিক্যাল। কিন্তু অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে পুরো নম্বর দিয়ে নামে মাত্র প্রাকটিক্যাল করানো হয়। আইসিটি বিষয় নিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। অনেক ছাত্রছাত্রী এ বিষয়ে জিপিএ-৫ পাচ্ছে কিন্তু বাস্তবে তেমন কোনো জ্ঞান নেই। একইভাবে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ের প্রাকটিক্যালে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ নম্বর পাচ্ছে, যারা তৃতীয় বিষয়ে ভালো করতে পারছে না। আসলে প্রাকটিক্যালে টাকা নিয়ে নম্বর দেওয়া হয় ৯০ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। টেকনিক্যালের বিষয় অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘বিক্রয় উপযোগী দক্ষতা (সেলঅ্যাবল স্কিল)’ তৈরি হয়। তাই অত্যন্ত সতর্কতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে এ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এমন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যেন নবম-দশম শ্রেণিতে পড়েই একজন শিক্ষার্থী একটি বিষয়ে দক্ষ হতে পারে। এটি নিয়ে অধিকতর গবেষণা করার প্রয়োজন রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর