বৃহস্পতিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রয়োজন প্রশাসনের কঠোর নজরদারি

বদিউর রহমান

প্রয়োজন প্রশাসনের কঠোর নজরদারি

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান বদিউর রহমান বলেছেন, প্রশাসন ঢিলেঢালা হলে যা হওয়ার তা-ই হয়। প্রশাসনের নাকের ডগায় ই-কমার্সের নামে গ্রাহকের হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে দেয় কীভাবে? আমি মনে করি ই-কমার্সের নামে নানামুখী প্রতারণা ঠেকাতে প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও প্রশাসনের কঠোর নজরদারি। এখন যা হচ্ছে তার জন্য দায়ী প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ব্যর্থতা।

গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনে আলাপচারিতায় সাবেক এই সচিব এসব কথা বলেন।

এনবিআরের সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, টাকার নীতি হলো যার হাতে থাকবে টাকা তারই। এর যে কোনো ধরনের দালিলিক প্রমাণ থাকুক না কেন, টাকা যার মালিকানা তার। এখন ই-কমার্সের যারা টাকা মেরে দিয়েছেন তাদের শুধু শাস্তির আওতায় আনলেই চলবে না, গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সরকারকে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। তিনি বলেন, যুবক, ডেসটিনি, ইভ্যালি, ধামাকাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যাদের টাকা বিনিয়োগ হয়েছে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা লুট হয়ে গেল, তা-ও তো ফেরত পাওয়া যায়নি। যা গেছে গেছেই। যদি কেউ ছিটেফোঁটা কিছু পায় তা সৌভাগ্যই বলা যাবে। যখন এসব প্রতিষ্ঠান অনলাইনে বিজনেস শুরু করে তখন কোনো আইন তৈরি হয়নি। এখন আইন করার প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু আইন হলেই যে সব সমস্যার সমাধান হয় তা ঠিক নয়। ব্যাংকেরও তো অনেক কঠোর নীতিমালা আছে। তার পরও বছরের পর বছর এত ঋণখেলাপি হচ্ছে। ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে ব্যাংকের টাকা মেরে দিচ্ছে কীভাবে? সেখানে ই-কমার্সের নামে যত আইনই হোক, আর যা-ই হোক থাকতে হবে কঠোর পর্যবেক্ষণ। প্রশাসনিক নজরদারি বাড়াতে হবে। রাজনৈতিক সরকারের সদিচ্ছাও থাকতে হবে।

বদিউর রহমান বলেন, আবার গ্রাহককেও কোনো লোভনীয় অফার দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়া ঠিক হবে না। লোভ বিষয়টিই ক্ষতিকর। তার পরও যা-ই হোক, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সরকার মানবিক কারণে তাদের ক্ষতি পূরণ করে দিতে পারে। কিন্তু এর কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। তিনি বলেন, রাজনীতি যদি পচে যায় তখন মানুষের ভয়ভীতি কমে যায়। বিবেকের অনুশাসন থাকতে হবে। এটা না থাকলে আইনের অনুশাসন থাকতে হবে। সব মানুষই বিবেকের অনুশাসন অনুযায়ী কাজ করবে না, সেজন্যই আইন। এখন আইনের শাসনও যদি না থাকে তাহলে স্বাভাবিকভাবেই ভয়ভীতি চলে যাবে। ভয়ভীতি থাকে না এজন্য যে এক পক্ষ টাকা দিয়ে সবকিছুই ম্যানেজ করতে চায়। আরেক পক্ষ জানে ভোটের সময় তাকে সিল মারার কাজে লাগে। আরেক পক্ষ জানে রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় কোনো না কোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসবই। এ পরিস্থিতি যে কেউ দেখবে তার ভয়ভীতি কাজ করে না। এজন্য রাজনীতি পচে গেলে, প্রশাসন ঢিলে হলে গেলে যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে। তাই সবকিছুই প্রশাসনের নাকের ডগায় হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর