শিরোনাম
শনিবার, ২ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা কমাতে হবে

ডা. আবুল হাসনাৎ মিল্টন

বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা কমাতে হবে

ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি রাইটস অ্যান্ড রেসপনসিবিলিটিস (এফডিএসআর)-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবুল হাসনাৎ মিল্টন বলেছেন, করোনাকালে দুই বছর বিদেশযাত্রা সীমিত ছিল। তখন দেশের সব মানুষ তাদের চিকিৎসার প্রয়োজনে বাংলাদেশের চিকিৎসকদেরই শরণাপন্ন হয়েছেন। বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা কমাতে স্বাস্থ্য খাতে নজর দিতে হবে। গতকাল তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অনেক সীমাবদ্ধতা নিয়েও বাংলাদেশের চিকিৎসকরা করোনার মতো মহামারিও সাফল্যের সঙ্গে সামলেছেন। তারপরও বাংলাদেশের অনেক মানুষের মধ্যে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা কাজ করে, যা দুঃখজনক। চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার এই প্রবণতা অবশ্য নতুন নয়। করোনা মহামারির কারণে বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ বা সীমিত ছিল বলে অনেক দিন চিকিৎসার জন্য দেশের মানুষ বিদেশে যেতে পারেননি। এখন সীমান্ত খুলে যাওয়ায় অনেক মানুষ আবার বিদেশমুখী হয়েছে। এই আকস্মিক বৃদ্ধিটা তাই স্বাভাবিকই। 

ডা. আবুল হাসনাৎ মিল্টন বলেন, সামর্থ্য আছে তাই দেশের উচ্চবিত্ত শ্রেণির মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যান। তাদের অনেকে সামান্য অসুখ-বিসুখেও চিকিৎসা নিতে বিদেশে যান, যা একটা অপ্রয়োজনীয় বিলাসিতা বলেই মনে হয়। তারপরও তাদের নিয়ে আমার ভাবনা কম। আমার কষ্ট হয় যখন দেখি মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ তাদের সম্পত্তি বিক্রি করে বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণ করতে যায়, যা বাংলাদেশে অনেক কম খরচে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের চিকিৎসকরা পেশাগতভাবে অনেক দক্ষ। বিদেশে প্রচুর বাংলাদেশি চিকিৎসক সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছেন। তারপরও কেন বাংলাদেশের রোগীরা অধিক সংখ্যায় বিদেশে চিকিৎসার জন্য যান, তার প্রকৃত কারণগুলো উদঘাটন করা জরুরি। চিকিৎসকদের প্রতি রোগীদের আস্থার সংকট রয়েছে বলে যে অভিযোগটা প্রায়ই শুনি, সেটা বোধহয় সত্যি নয়। কারণ, দেশ থেকে যত রোগী চিকিৎসার জন্য বিদেশে যান, তার চেয়ে বহুগুণ রোগী দেশের ভিতরেই চিকিৎসা করান। আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় মনে হয়েছে, বাংলাদেশে চিকিৎসক এবং রোগীদের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে আরও কাজ করা প্রয়োজন। একজন মানুষ যখন অসুস্থ হয়ে চিকিৎসকের কাছে যান, তখন চিকিৎসকের একটু ভালো ব্যবহারও রোগীর কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। পাশাপাশি পুরো স্বাস্থ্য খাতেই সামগ্রিকভাবে ব্যবস্থাপনার মান উন্নত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আরেকটা ব্যাপার বেশ কয়েক বছর ধরে লক্ষ্য করছি। আশপাশের দেশগুলো থেকে নামমাত্র বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এনে অবৈধভাবে আয়োজিত হেলথ ক্যাম্পের মাধ্যমেও দেশ থেকে রোগী ভাগিয়ে বিদেশে নেওয়া হচ্ছে। বিদেশে রোগী ভাগানোর এই বেআইনি চর্চা বন্ধ করা জরুরি। কারণ, এর মাধ্যমে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগীরা প্রতারিত হন, অর্থনৈতিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হন। বিদেশে চিকিৎসার নামে প্রতি বছর যে পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা দেশ থেকে বৈধ-অবৈধ পথে পাচার হয়, তাতে দেশ অর্থনৈতিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সর্বশেষ খবর