শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

দ্রৌপদী মুর্মু ভারতের নতুন রাষ্ট্রপতি

প্রতিদিন ডেস্ক

দ্রৌপদী মুর্মু ভারতের নতুন রাষ্ট্রপতি

ভারতের নতুন (১৫তম) রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন ঝাড়খন্ড রাজ্যের সাবেক রাজ্যপাল, ওড়িশা রাজ্যের বাসিন্দা দ্রৌপদী মুর্মু। প্রতিভা পাতিলের (২০০৭-২০১২) পর তিনিই হলেন প্রথম আদিবাসী এবং দ্বিতীয় নারী রাষ্ট্রপতি। আনন্দবাজার, এনডিটিভি, এএনআই।

নির্বাচনে দ্রৌপদী মুর্মু বিপুল ভোটে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী যশবন্ত সিনহাকে পরাজিত করেছেন। ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার পি সি মোদি জানিয়েছেন, প্রথম রাউন্ডের শেষে দেখা যায় দ্রৌপদীর প্রাপ্ত ভোট ৫৪০, অন্যদিকে বিরোধীদের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী যশবন্ত সিনহা পান ২০৮টি ভোট। দ্বিতীয় রাউন্ডের গণনাতেও একইভাবে আধিপত্য বজায় রাখেন দ্রৌপদীই। এরপর তৃতীয় রাউন্ডে দ্রৌপদী মুর্মু পেয়েছেন ২১৬১ ভোট এবং যশবন্ত সিনহা পেয়েছেন ১০৫৮ ভোট। সব মিলিয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর প্রাপ্ত ভোট ৫ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৭ এবং যশবন্ত সিনহার প্রাপ্ত ভোট ২ লাখ ৬১ হাজার ৬২। তৃতীয় রাউন্ডের শেষে মোট বৈধ ভোটের ৫০ শতাংশের বেশি পেয়েছেন দ্রৌপদী মুর্মু। প্রসঙ্গত, ২৪ জুলাই শেষ হবে বর্তমান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কার্যকালের মেয়াদ। পরের দিন অর্থাৎ ২৫ জুলাই শপথ নেবেন দেশের নতুন রাষ্ট্রপতি।

কে এই দ্রৌপদী মুর্মু : দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে প্রথম গণমাধ্যমে হইচই হয়েছিল ২০১৭ সালে। সেবার গুঞ্জন রটেছিল বিজেপি তাদের প্রেসিডেন্ট ?প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম বিবেচনা করছে। তিনি ওই সময় ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করছিলেন। ১৯৫৮ সালের ২০ জুন ময়ূরভাঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামে জন্মগ্রহণ করনে দ্রৌপদী মুর্মু। তিনি ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন এবং বৃহৎ আদিবাসী গোষ্ঠী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মেয়ে। একটি গ্রামের গ্রাম প্রধানের মেয়ে দ্রৌপদী রাজ্যের রাজধানী ভুবনেশ্বরের রামাদেবী উইমেন্স কলেজে লেখাপড়া করেছেন। ওড়িশা রাজ্য সরকারের একজন  কেরানি হিসেবে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি রাজ্যের কৃষি ও জ্বালানি অধিদফতরে একজন জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবেও কাজ করেছেন। ১৯৯৪-৯৭ সাল পর্যন্ত রাইরংপুরে অরবিন্দ ইনটেগরাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে শিক্ষকতাও করেছেন তিনি। দ্রৌপদীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হয় ১৯৯৭ সালে। সেবার তিনি রাইরংপুরে স্থানীয় নির্বাচনে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। বিজেপির হয়ে রাইরংপুর আসন থেকে তিনি ২০০০ ও ২০০৯ সালে দুবার বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০০-২০০৪ সালে তিনি রাজ্যের জোট সরকারের একজন মন্ত্রীও ছিলেন। প্রথমে বাণিজ্য ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করলেও পরে তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সামলান। ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি রাজ্য বিজেপির ‘পিছিয়ে পড়া আদিবাসী’ শাখার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ঝাড়খন্ড রাজ্যের প্রথম নারী রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর ২০১৫ সালে তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে বিদায় নেন। দ্রৌপদী ওড়িশার প্রথম আদিবাসী নেত্রী যিনি রাজ্যপালের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত টানা ছয় বছর তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। দ্রৌপদী মুর্মু বেশ সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর কার্যালয়ের দরজা সব সময় সব শ্রেণির মানুষের জন্য খোলা থাকত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর