শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা
মানব পাচার

ইউরোপে পাঠানোর নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছে ওরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর শান্তিনগর থেকে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তাদের বিরুদ্ধে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে লোভনীয় চাকরির প্রলোভনে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের মাহবুব উল হাসান (৫০) ও রাজশাহীর রাজাপাড়ার মাহমুদ করিম (৩৬)। বৃহস্পতিবার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৫২১টি পাসপোর্ট, বিদেশে চাকরির জন্য ৬৫টি ভুয়া কোর্সের সনদ, ৩০০টি ভুয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট এবং ২২৫টি ভুয়া কভিড ভ্যাকসিনেশন সার্টিফিকেট উদ্ধার করা হয়।  রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, মাহবুব উল হাসান ওই দলের মূলহোতা। মাহবুব ও মাহমুদ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দালালের মাধ্যমে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যেতে আগ্রহীদের পাসপোর্ট সংগ্রহ করতেন। দুই বছরে তারা ৫২১টি পাসপোর্ট সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু কাউকেই বিদেশে পাঠাননি। তাদের হেফাজত থেকে সৌদি, ইরাক, কুয়েত, দুবাই, রোমানিয়া, কানাডা ও কম্বোডিয়ায় চাকরির ভুয়া চুক্তিপত্র, ভুয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট, টাকা নেওয়ার তিনটি রেজিস্ট্রার বই, ১৫টি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, রোমানিয়ার জাল ভিসা, জালিয়াতিতে ব্যবহৃত মনিটর, সিপিইউ, কি-বোর্ড, মাউস, স্ক্যানার এবং প্রিন্টার উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব কর্মকর্তা আরিফ বলেন, যারা মধ্যপ্রাচ্যে যেতে চান তাদের কাছ থেকে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা নেওয়া হতো। আর ইউরোপ যেতে আগ্রহীদের কাছ থেকে ৬-৭ লাখ টাকা করে নেওয়া হতো। বহু দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে তারা ‘কোটি কোটি টাকা’ হাতিয়ে নিয়েছেন। টাকা যারা দিতেন তাদের চাকরির নিয়োগপত্র, মেডিকেল সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন কাগজপত্র দেখিয়ে বিদেশ যাত্রার নিশ্চয়তা দিত চক্রটি। কিন্তু সব কাগজপত্রই ছিল ভুয়া।

র‌্যাব-৩ অধিনায়ক বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া প্রায় ৩ কোটি টাকা নিয়ে বিদেশে পালানোর পরিকল্পনা ছিল মাহবুবের। এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করা মাহবুব ১৯৯৩ থেকে ৯৮ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় ছিলেন। তিনি দেশে ফিরে প্রথমে কৃষিকাজ করতেন। পরে ২০০০ সালে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় একটি ট্র্যাভেল এজেন্সির মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানো শুরু করেন তিনি। ২০১৪ সালে ওই এজেন্সির সঙ্গে কাজ বাদ দিয়ে নিজেই একটি রিক্রুটিং এজেন্সি খুলে ব্যবসা শুরু করেন। ওই এজেন্সিরও কোনো লাইসেন্স নেই বলে আমরা জানতে পেরেছি। এদের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়া অনেকেই কাজ না পেয়ে দেশে ফিরে এসেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর