মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বিএনপির ২৭ দফা রূপরেখা

♦ সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন ♦ নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা ♦ নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন বাতিল ♦ জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন ♦ প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন ♦ সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের বিচারে মিডিয়া কমিশন গঠন ♦ সংবিধান মোতাবেক ন্যায়পাল নিয়োগ ♦ অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন গঠন ♦ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ২৭ দফা রূপরেখা

টানা দুই মেয়াদের বেশি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন না থাকা, সংবিধান সংস্কারে কমিশন গঠন ও দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনসহ বেশকিছু নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ দিয়েছে বিএনপি। গতকাল বিকালে রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ২৭ দফা রূপরেখা ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষনেতা, বিশিষ্ট নাগরিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবীসহ নানা শ্রেণি-পেশার নেতারা অংশ নেন।

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ঘোষিত এই রূপরেখার মধ্যে রয়েছে- ‘বিতর্কিত’ সংশোধনী বাতিলে সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন বাতিল, জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন, প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন, সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের বিচারে মিডিয়া কমিশন গঠন, সংবিধান মোতাবেক ন্যায়পাল নিয়োগ, অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন গঠন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা এবং টানা দুই মেয়াদের বেশি এসব পদে না থাকা, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার প্রচলন, প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে সব মত ও পথের সমন্বয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বৈষম্যহীন ‘রেইনবো নেশন’ প্রতিষ্ঠা এবং জাতীয় সমঝোতা কমিশন গঠন, জাতীয় সংসদে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি সংবিধান সংশোধন করে গণভোটের ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন, প্রশাসনিক সংস্কারে কমিশন গঠন, রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন আইনের সংস্কার, স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বাতিল, জাতীয় সমঝোতা কমিশন গঠন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের তালিকা তৈরি, বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি সন্ত্রাসবাদের চর্চা বন্ধ করা, বেকার ভাতা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি। শুরুতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে রূপরেখার সারমর্ম উপস্থাপন করেন। পরে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ২৭ দফা রূপরেখা বিশদ বর্ণনাসহ ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে যথাসময়ে অন্যান্য বিষয়ভিত্তিক সংস্কার প্রস্তাব প্রকাশ করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের পরিচালনায় এতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা ইসলাম, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শামসুজ্জামান দুদু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, বরকতউল্লাহ বুলু, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, আমান উল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন-নবী খান সোহেল, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, জহির উদ্দিন স্বপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া গণফোরামের মোস্তফা মোহসীন মন্টু, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এলডিপির ড. রেদোয়ান আহমেদ, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, গণঅধিকার পরিষদের ড. রেজা কিবরিয়া, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে ছিলেন, অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক তাজমেরি এস ইসলাম, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার, সৈয়দ আবদাল আহমদ প্রমুখ। এর আগে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে রাষ্ট্র গড়ে তুলেছিল, সেই রাষ্ট্রের মালিকানা আজ তাদের হাতে নেই। বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকার বাংলাদেশ রাষ্ট্র কাঠামোকে ভেঙে চুরমার করে ফেলেছে। এই রাষ্ট্রকে মেরামত ও পুনর্গঠন করতে হবে। দেশের জনগণের হাতেই দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে জয়লাভের পর বর্তমান সরকার হটানোর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে একটি ‘জনকল্যাণমূলক জাতীয় ঐকমত্যের সরকার’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। ওই ‘জাতীয় সরকার’ নিম্নলিখিত রাষ্ট্র রূপান্তরমূলক সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর