শুক্রবার, ৫ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

এক ডিস্ট্রিবিউশন থেকেই ৪৬ কোটি টাকা হুন্ডি

সিআইডির মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘বিকাশ’ এর ডিস্ট্রিবিউটর চট্টগ্রামে অবস্থিত মেসার্স আল-কাদের অ্যান্ড কোম্পানি থেকে মোট ৪৬ কোটি ২ লাখ ১৭ হাজার ১২৫ টাকা হুন্ডি করে পাচারের তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ ঘটনায় গতকাল চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় ১৩ ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান হিসেবে মেসার্স আল-কাদের অ্যান্ড কোম্পানির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে সংস্থাটি। মামলাটি করেন সিআইডির পরিদর্শক কে এম রাকিবুল হুদা। মামলায় আসামি ১৩ ব্যক্তি হলেন- খোন্দকার আশফাক হোসেন কাদেরী, সুশান্ত নাথ, জালাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল নোমান, শিমুল উদ্দিন, আতিকুর রহমান, রাসেদুল হক রাসেল, সজিব, শিকাদার বনি আমীন, মেরাজুল ইসলাম, আবু খায়ের নয়ন, কামরুল হাসান মজুমদার এবং হারুন। মামলার এজাহারে বলা হয়, মেসার্স আল-কাদের অ্যান্ড কোম্পানির বিভিন্ন ব্যাংকের ৭টি অ্যাকাউন্টে ২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে গত বছরের ৪ আগস্ট পর্যন্ত ১ হাজার ৮৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা জমা হয় এবং প্রায় সমপরিমাণ টাকা উত্তোলন করা হয়। এ ছাড়া ওই ডিস্ট্রিবিউটরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাচারের উদ্দেশে ৪৬ কোটি ২ লাখ ১৭ হাজার ১২৫ টাকা জমা হয়। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন শাখা থেকে ২০২১ সালের ৪ আগস্ট থেকে গত বছরের ৪ আগস্ট পর্যন্ত আসামি জালাল হোসেনের হয়ে তার কর্মচারী শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ৪ কোটি ৩২ লাখ ৬ হাজার ৮০০ টাকা, আতিকুর রহমানের হয়ে তার কর্মচারী বাবুল আহমেদ ১ কোটি ৯৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা, আবদুল্লাহ আল নোমানের হয়ে তার কর্মচারী ওমর ফারুক ১ কোটি ২৭ লাখ ৩৭ হাজার টাকা এবং আরেক কর্মচারী মানিক মিয়া ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, রাসেদুল হক রাসেল ও সজিবের হয়ে কাউয়ুম ৩৫ লাখ এবং ৫৮ লাখ টাকা, শিমুল উদ্দিন ১ কোটি ৫০ লাখ ১৪ হাজার টাকা, শিকদার বনি আমীন ১ কোটি ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মেরাজুল ইসলাম ১১ কোটি ৬০ লাখ টাকা, মাসুদ মীরের হয়ে তার কর্মচারী উজ্জ্বল মিয়া ২৬ লাখ টাকা, আশরাফুল আলমের হয়ে তার কর্মচারী সাজ্জাদ হোসেন ৩ কোটি ৪ লাখ টাকা, আলাউদ্দিন আবিদ ৫০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, রাহাত কবিরের হয়ে তার কর্মচারী সুবর্ণ আহমেদ ১৫ লাখ ৯১ হাজার ৫০০ টাকাসহ মোট ২৭ কোটি ২২ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ টাকা জমা করে। ওয়ান ব্যাংকের চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লা শাখায় ২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে গত বছরের ৪ আগস্ট পর্যন্ত ৩৭৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা জমা হয় এবং সমপরিমাণ টাকা উত্তোলন করা হয়। ঢাকার বিভিন্ন শাখা হতে সেখানে আসামি জালাল হোসেনের হয়ে তার কর্মচারী শাহাদৎ হোসেন ১ কোটি ৯৪ লাখ ৯৯ হাজার ৮৫০ টাকা এবং এনামুল হক ৩ কোটি ৫৪ লাখ ১৯ হাজার ৭৭৫ টাকা, কামরুল হাসান মজুমদার ৩ কোটি ৩২ লাখ ১১ হাজার টাকা, সৌদি প্রবাসী হারুনের হয়ে তার কর্মচারী আবুল এহসান ৪ কোটি ৬১ হাজার ৯২৫ টাকা, একরাম উদ্দিন ৩ কোটি ৬৬ লাখ ১১ হাজার ৬৩৫ টাকাসহ মোট ১৬ কোটি ৪৮ লাখ ৪ হাজার ১৮৫ টাকা জমা করে। দি সিটি ব্যাংকের চট্টগ্রাম চকবাজার শাখায় ২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে গত বছরের ৪ আগস্ট পর্যন্ত ১৮০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা জমা হয় এবং সমপরিমাণ টাকা উত্তোলন করা হয়। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন শাখা থেকে আবুল খায়ের নয়নের হয়ে তার কর্মচারী সৈয়দ জাকির হোসেন ১ কোটি ১৮ লাখ ৪৭ হাজার ২৪০ টাকা, মৃত ইব্রাহিমের হয়ে তার কর্মচারী মাইন উদ্দিন ১ কোটি ১২ লাখ ৯৬ হাজার ৪০০ টাকাসহ মোট ২ কোটি ৩১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৪০ টাকা জমা করে। ওইসব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এসব টাকা জমা করে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে মামলার এজাহারে জানিয়েছেন সিআইডির পরিদর্শক কে এম রাকিবুল হুদা।

সর্বশেষ খবর