বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

রাখাইনে তিন দিনে ৮০ সেনা হত্যার দাবি আরাকান আর্মির

২৩ দিন পর খুলল সীমান্তের পাঁচ স্কুল - আতঙ্কে শিক্ষার্থী কম

নিজস্ব প্রতিবেদক

মিয়ানমারে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষের জেরে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্ত এলাকার পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সীমান্ত পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হওয়ায় টানা ২৩ দিন বন্ধের পর গতকাল স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রথম দিনে শিক্ষার্থী উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম।

স্থানীয়রা বলছেন, মিয়ানমারের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একের পর এক মর্টার শেল ও গুলি ছুটে আসে। মর্টার শেলের আঘাতে বাংলাদেশে দুজনের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। আহত হন কয়েকজন। বিধ্বস্ত হয় অনেক ঘরবাড়ি। পরিস্থিতি এখন কিছুটা শান্ত হলেও মাঝেমধ্যেই গোলাগুলির শব্দ আসছে। তাই মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যে কোনো সময় আবার গোলাগুলির আশঙ্কায় অনেকেই বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে সাহস পাচ্ছেন না।

মিয়ানমারের জান্তাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের সংঘাতের কারণে গত ৫ ফেব্রুয়ারি ঘুমধুম সীমান্ত এলাকার পাঁচটি স্কুল বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। স্কুলগুলো হলো বাইশপারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাজা বনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিমকুল তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি। গতকাল স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হয়।

গতকাল সকালে মিয়ানমারের তুমব্রু রাইট ক্যাম্পের ঠিক বিপরীতে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হয়েছেন। শ্রেণি কক্ষগুলোর অনেক বেঞ্চই ফাঁকা। তবে যারা স্কুলে এসেছে, তাদের বেশ হাসিখুশি অবস্থায় ক্লাস করতে দেখা গেছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতের সময় অনেক গুলি এই স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে পাওয়া যায়।

তুমব্রু পশ্চিমকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেলাল উদ্দিন বলেন, ২৩ দিন স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি পোষাতে আমরা আমাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। তবে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ পড়বে।

বান্দরবানের ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, দীর্ঘদিন পর স্কুল খুললেও প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি শতভাগ হয়নি। স্কুল খোলার বিষয়টি অনেকে এখনো জানে না। আশা করি, আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে শিক্ষার্থীরা শতভাগ স্কুলে ফিরবে।

এদিকে মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, মিয়ানমার জান্তা ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে চলমান লড়াই তীব্র হয়েছে। উপকূলীয় শহর রাখাইন রাজ্যের রামরিতে তিন দিনের লড়াইয়ে প্রায় ৮০ জন সেনাকে হত্যার দাবি করেছে আরাকান আর্মি। স্থানীয় সময় গত শনিবার চারটি সামরিক হেলিকপ্টারে ১২০ জন সেনাকে রামরি শহরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য। তাদের মধ্যে ৮০ জনকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। আরাকান আর্মি বলেছে, গত শনিবার যুদ্ধের সময় প্রায় ৬০ জন সেনা নিহত হয়েছে। সোমবার আরও ২০ জন সেনা নিহত হয়েছে।

সর্বশেষ খবর