সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
গণমাধ্যমকে অর্থমন্ত্রী

আজিজের দুর্নীতির বিচার করবে সেনাবাহিনী

সাবেক আইজিপির ব্যাপারে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

আজিজের দুর্নীতির বিচার করবে সেনাবাহিনী

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানো ও রাজস্ব আহরণ বাড়ানোই প্রধান চ্যালেঞ্জ। আমাদের অর্থনীতিতে বেশ কিছু অসুবিধা রয়েছে, সেগুলো ওভারকাম করতে হবে এবং আগামী বাজেটে সেজন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের দুর্নীতির বিচার সেনাবাহিনী করবে। সাবেক আইজিপির ব্যাপারে তদন্তে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। তিনি বলেন,  ক্ষমতাধর সাবেক পুলিশ প্রধানের মতো ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঋণখেলাপি যতই প্রভাবশালী  হোক তাদের ধরা হবে। এর আগে গতকাল নিজ দফতরে আইএমএফের নির্বাহী পরিচালক (বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও ভুটান) ড. কৃষ্ণমূর্তি ভি সুব্রামানিয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। সাক্ষাৎ শেষে তিনি বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার একটা প্রতিফলন বা প্রতিচ্ছবি থাকবে। আমাদের মূল লক্ষ্য অর্থনীতি অন-ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনা। একই সঙ্গে নিত্যপণ্য যাতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে এগুলো নিশ্চিত করা। মানুষের জীবনযাত্রার মান এটাও যেন সীমার মধ্যে থাকে সেটায় আমরা নজরে রাখছি। সর্বোপরি মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার একটা প্রতিফলন বা প্রতিচ্ছবি দেখতে পাবেন আগামী বাজেটে। একই সঙ্গে সরকার যে নির্বাচনি ইশতেহার দিয়েছিল, সেটার একটা রিফ্লেকশন (প্রতিফলন) দেখাতে চাই। তিনি বলেন, আমাদের অনেক অসুবিধা আছে, সেগুলো ওভারকাম করতে হবে। আমরা আশা করব আস্তে আস্তে এগুলো থাকবে না। মানে নির্বাচনি ইশতেহারে মানুষকে যে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে সেটার একটা প্রতিক্রিয়া থাকবে। কিন্তু অনেক বাধা আছে, সেটা অতিক্রম করতে হবে। এরই মধ্যে অনেক কাজ হচ্ছে। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ প্রশ্ন রাখেন দেশের অর্থনীতি দুর্যোগের মধ্যে পড়েছে- এটা কি আপনি স্বীকার করেন? জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ বলতে উনি কী বোঝাতে চেয়েছেন আমি বুঝলাম না। বিরুদ্ধে বললেই কি সে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল? আসলে তারা তো বিরোধীপক্ষের লোক। কিছুই হয়নি, সব নষ্ট হয়ে গেছে, এগুলো কী? সরকারবিরোধী কথা বললেই কী তিনি বিরোধী পক্ষ হয়ে যাবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, না তা হবে না। তবে তাঁর টোনটা দেখতে হবে। কেউ কিছু বললেই দেশের অর্থনীতি শেষ হয়ে যাবে না। এটাও বুঝতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ তো অবশ্যই আছে। যেমন- মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ, রাজস্ব আদায়। ডলারের মূল্য বৃদ্ধি আগে ছিল এখন আর নেই। আমরা সঠিক ট্র্যাকে আছি। তবে এখন আমরা ঋণখেলাপিদের ধরব। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বাড়ানো হবে। এ খাতের ভালো পরিবর্তন দেখতে পারবেন বলে আশা করছি। বাজেট ব্যয় সংকোচনমূলক হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংকোচনমূলক তো এরই মধ্যে হয়েছে। ওটা পার হয়ে যাচ্ছি আমরা। সংকোচন থেকে আমরা ফেরত আসব। কীভাবে এক্সপানশন (সম্প্রসারণ) করা যায় সেটাই চেষ্টা করছি। এ বাজেট থেকেই সেটি চেষ্টা করব। আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী জুনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি ছাড় করবে। আইএমএফ আমাদের খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে। আমরা সে অনুযায়ী ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আমি ঋণখেলাপিদের ধরতে চাই। ঋণখেলাপিরা অনেক শক্তিশালী। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আপনি পারবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেখা যাক পারা যায় কি না। এরপর তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখছেন পুলিশের সাবেক প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তার কি ক্ষমতা কম ছিল?’ এ ছাড়া সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে কোনো অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য থাকলে, তার বিচারও সেনাবাহিনী করবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

সর্বশেষ খবর