শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঝুমকার ঝলক

ঝুমকার ঝলক

♦ মডেল : তরী ♦ ছবি : ফ্রাইডে

নারীর সাজে গহনা আভিজাত্যের প্রতীক। প্রাচীনকাল থেকে নারী সৌন্দর্যের অংশ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে গহনা। তন্মধ্যে নারী হৃদয়ে ঝুমকার প্রতি ভালোবাসাও অনেক। খুব সহজে পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায়।

মেয়েদের সাজে পূর্ণতা আনে মানানসই এক জোড়া কানের দুল। সোনা-রুপা বা ইমিটেশন; এক জোড়া কানের দুল খুব সহজেই জয় করে নেয় নারী মন। কলেজপড়ুয়া থেকে অফিসের কর্মী; সব বয়সী নারীর মনে দিব্বি ঠাঁই করে নিয়েছে এই অনুষঙ্গ।

 

 

গহনা, ছন্দময় ছোট্ট একটি শব্দ। গহনার সাজে প্রকাশ পায় নারীর সৌন্দর্য। তাই যুগের পর যুগ ধরে নারীর সাজের ক্যানভাসে থাকে নানা গহনা। কিন্তু এই গহনা ছাড়া নারী সাজ অসম্পূর্ণ। আবার কানের দুল (ঝুমকা) ছাড়া গহনার দিকটাও অসম্পূর্ণ। নারী ফ্যাশনে বড় অংশ জুড়ে আছে গহনা। আর গহনার বেশ অংশ জুড়ে আছে কানের দুল এবং ঝুমকা। কলেজ পড়ুয়া থেকে অফিসের কর্মী, সব বয়সী নারীর মনে দিব্বি ঠাঁই করে নিয়েছে এই অনুষঙ্গ। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই অনুষঙ্গে পরিবর্তন আসলেও বর্তমানে এটি যে কোনো ভূষণের সঙ্গে সহজে মানিয়ে যায়। ফুটে ওঠে আভিজাত্য।

 

কানের দুল ব্যবহারের ইতিহাস আজকের নয়। প্রাচীনকাল থেকেই নারী সৌন্দর্যের এই অনুষঙ্গটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রাচীন সভ্যতায় চোখ ফেরালে দেখা যায়, গৃহচিত্র থেকে শুরু করে হাজার বছর ধরে নানা ধরনের শিল্পে গহনার ব্যবহার হয়েছে। আর সেই গহনার ভিড় ঠেলে নারীদের সাজের অনুষঙ্গ হয়েছিল কানবালা। পরবর্তী সময়ে যুগে যুগে অলংকারশিল্পের পরিবর্তন ঘটে। আর সেই প্রাচীন কানবালা-ই আজকের দিনের কানের দুল ও ঝুমকা।

 

গহনার ফ্যাশনে অনেকখানি অংশজুড়ে আছে এই কানের দুল। এখন সোনা, রুপা ছাড়াও বিভিন্ন উপাদান দিয়ে তৈরি হচ্ছে কানের দুল। ফ্যাশনপ্রিয় নারীরা বেশ আগ্রহের সঙ্গেই বেছে নিচ্ছেন এসব দুল। একটা সময় কেবল শাড়ির সঙ্গে কানের দুল বা ঝুমকা পরা হতো। বর্তমানে সেই ধারাতে এসেছে পরিবর্তন। রুচি আর অভিব্যক্তির মিশ্রণে কানের সৌন্দর্যের এই অনুষঙ্গটি তার জায়গা করে নিয়েছে নারীর সাজের যে কোনো ভূষণে। গহনায় নানা পরিবর্তন হলেও কেবল মাত্র কানের দুল আর ঝুমকাতেই রয়েছে আধিপত্য থেকে শুরু করে রাজকীয় সাজ।

 

মেটাল, বিডস, পিতল, বাঁশ, কাঠ, হাড়গোড়, মাটি, সুতা, ধাতু, পালক, নারকেলের মালা, ঝিনুক, শামুকের খোলাসহ নানা উপকরণ দিয়ে তৈরি এসব কানের দুলের নকশায় করা হচ্ছে নানা রকম এক্সপেরিমেন্ট। নকশাতে এখন আদিবাসী থিমও চলছে বেশ। কানপাশা, মিনা করা ঝুমকা, নকশার ঝুমকা, মাকড়ি, কলকা, চুড়, ঘণ্টিসহ নানা ডিজাইন রয়েছে এসব কানের দুলে। টিনএজ ফ্যাশনের সঙ্গে মিলিয়ে এখন বাজারে এসেছে হালকা ও হেভি মেটালের আর কানের দুল। এতে ফুটে উঠেছে এন্টিক ও ট্রাইভাল লুক। টপস, ফতুয়া, জিন্স, ক্যাপ্রি, শার্ট কিংবা স্কার্টসহ শাড়ির সঙ্গেও চমৎকার লাগবে এগুলো, আবার দামটাও কম। বিভিন্ন ডিজাইনের মেটালের ওপর স্টোন বসানো, স্টোনের, সিলভারের ওপর পলিশ করা আর আর্টিফিশিয়াল মুক্তার ছোট বড় দুলের চাহিদা বরাবরই। একটু দামের মধ্যে কিনতে চাইলে রুবি, পান্না, আনকাট ডায়মন্ডের কানের দুল কিনতে পারেন।

 

যারা খুব কম সাজে নিজেকে উপস্থাপন করতে চান তাদের জন্য ঝুমকা হতে পারে সঠিক নির্বাচন। এটি খুব সহজে যেমন পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায়, তেমনি এর  আকৃতির পরিবর্তন আর ডিজাইনেও রয়েছে বৈচিত্র্যতা। আমাদের দেশে ঝুমকার ব্যবহার নতুন নয়। এর ব্যবহার চলে আসছে অনেক আগে থেকেই। আর সেই সময় থেকে সোনা, রুপা, তামায় নানা ডিজাইনে নিজেকে ফুটিয়ে তুলেছে ঝুমকা। ঝুমকা একটি সময় কেবল এক তারের বেষ্টনীতেই আবদ্ধ করে পরা হতো। বর্তমানে এতে যুক্ত হয়েছে নানা ডিজাইন। এ ছাড়াও তামা, পিতল, কাঁসা, সোনা, রুপা থেকে শুরু করে গোল্ড প্লে­টের ওপর নানা ডিজাইন করে তৈরি করা হয় এক একটি ঝুমকা। এর সঙ্গে আরও আছে নানা নকশাও। পাতা-লতা ছাড়া জ্যামিতিক নকশা, ফুল পাখির কারুকাজ যেন ঝুমকার সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তুলে শতগুণ। এ ছাড়া এতে থাকে পাথরের কাজ, পুঁতির কাজ আবার কখনো স্টোনের কাজও। কিছু ঝুমকাতে থাকে চেইন; যা খোঁপা কিংবা মাথার চুলের সঙ্গে আটকিয়েও পরা যায়। আবার কিছু ঝুমকাতে ছোট-বড় নানা আকৃতির চেইন আর তাতেও ঝুমকা বসিয়ে  তৈরি করা হয়। এ ছাড়া গোল আকারের ঝুকমাতে অনেক ছোট ছোট আকৃতির পাথর আর রুপার কাজ করা ঝুমকা বসিয়েও তাকে দেওয়া হয়েছে নান্দনিকতা। অন্যদিকে গোল আকৃতির ঝুমকা ছাড়াও রয়েছে চারকোনা, ত্রিকোনা আর বক্স আকৃতির নানা ধরনের ফ্যাশনেবল ঝুমকা।

 

লম্বাটে মুখ হলে লম্বাকৃতির দুলে মুখ আরও লম্বা দেখাবে। আবার গোলমুখের কেউ গোলাকৃতির দুল পরলে তার মুখ আরও গোল মনে হবে। লম্বাটে মুখের অধিকারী টপ, ছোট ঝুমকা কিংবা রিং পরলে ভালো দেখাবে। যাদের মুখ চৌকো চৌকোনা রিং, পাশাবা বেশি ছড়ানো দুল তাদের না পরাই ভালো। যাদের মুখ গোলাকৃতির তারা ঝুলন্ত, চৌকোনাদুলে নিজেকে ফুটিয়ে তুলবেন ভালো। আর যাদের মুখের আকৃতি পানপাতার মতো তাদের যে কোনো আকৃতির দুলেই ভালো লাগবে।

 

কোথায় পাবেন

যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা সিটি, নিউমার্কেট-গাউছিয়া, রাপা প্ল­াজা, মেট্রোশপিংমল, রাজধানীসহ দেশের যে কোনো শপিংমলে একটু খুঁজলেই পেয়ে যাবেন পছন্দসই ঝুমকা। মাদুলি, আড়ং, পিরান, বিবিয়ানা, অঞ্জনস, রঙ বাংলাদেশ, বিশ্বরঙ, দেশাল, রঙসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসেও পেয়ে যাবেন পছন্দের ঝুমকা। এ ছাড়াও অনলাইন শপগুলোতে পাবেন।

 

দরদাম

এসব ঝুমকা আকার-আকৃতির ওপর নির্ভর করে ৫০০ থেকে শুরু করে ৫ হাজার ৫০০ টাকায় পাওয়া যাবে।

 

লিখেছেন- ফেরদৌস আরা

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর