নরেন্দ্র মোদি সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে ‘পাহাড়সম ভুল’ বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। আগামীকাল ৮ নভেম্বর (বুধবার) নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের এক বছর পূরণ হবে। তার আগে আজ মঙ্গলবার মোদির রাজ্য গুজরাটের আমেদাবাদে এক অনুষ্ঠান থেকে মোদি সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত এবং তড়িঘড়ি করে (জিএসটি) চালু করার বিরোধিতা করেছেন বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ। তাঁর অভিমত এই দুই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র ভারতের অর্থনীতিই নয়, দেশের গণতন্ত্রকেও বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দিয়েছে।
মনমোহন বলেন, ‘দেশের ইতিহাসে ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর একটি কালো দিন। সরকারের নোট বাতিলের ফলে দেশের অর্থ ব্যবস্থা এখন সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ছোট ও মাঝারি শিল্পে। এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির (জিডিপি) হার কমে গেছে। ফলে দেশের উৎপাদন কমেছে। আসলে নোট বাতিল একটি সংগঠিত লুট ও আইনসিদ্ধ পথেই ছিনতাই। জিডিপি যেভাবে কমেছে তা দেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় আশঙ্কার কারণ বলেও এদিন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কংগ্রেসের এই সিনিয়র নেতা।
তড়িঘড়ি করে গোটা দেশে এক কর ব্যবস্থা জিএসটি চালু করা নিয়ে মনমোহন সিং বলেন, জিএসটি’এর ফলে সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে ক্ষুদ্ধ শিল্পের। এই শিল্পের মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে। তিনি বলেন, সংসদে ও ব্যক্তিগত আলোচনায় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সরকারকে এনিয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল কিন্তু সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি। তাঁর দাবি, কর-সন্ত্রাস এখন ভারতীয় ব্যবসাকে পঙ্গু করে দিয়েছে।
তাঁর অভিমত মোদি সরকারের তরফে নেওয়া আর্থিক সংস্কারের এই সিদ্ধান্তের ফলে লাভবান হয়েছে চীন। কারণ ২০১৭-১৮ সালে চীন থেকে আমদানির পরিমাণ ২৩ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৬-১৬ আর্থিক বছরের প্রথম ছয় মাসে চীনা পণ্যের আমদানি ছিল ১.৯৬ লাখ কোটি রুপি। ২০১৭-১৮ সালে তা বেড়ে হয় ২.৪১ লাখ কোটি রুপি’।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ নভেম্বর মাঝরাত থেকে ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
বিডি-প্রতিদিন/০৭ নভেম্বর, ২০১৭/মাহবুব