ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের বিশাল জায়গা জুড়ে চীন প্রধান হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। চীনা সম্প্রসারণবাদের রুখে দিতে উদ্যোগ নিতে বাধ্য হচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমের ভারত থেকে উত্তর-পূর্বে জাপান পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ।
গত দুই দশকে চীনের প্রতিরক্ষা ব্যয় সারা বিশ্বের মধ্যে ষষ্ঠ থেকে দ্বিতীয় স্থানে পোঁছেছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউটের হিসাব অনুসারে, সহস্রাব্দের শুরু থেকে বেইজিং প্রতিরক্ষা ব্যয় ছয়গুণ বাড়িয়েছে। এর মাধ্যমে চীন পুরো ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল জুড়ে ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
চীনের এসব পদক্ষেপের জবাবে ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলোও তাদের সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে। জাপানের সামরিক বাহিনী তাদের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিসহ ও তাৎক্ষণিক হামলা পরিচালনায় সামর্থ্যের জন্য বিশ্বখ্যাত। চীনের এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার বিল্ডিং প্রোগ্রামের বিরুদ্ধে লড়াই করতে জাপান তাদের দুটি হেলিকপ্টারবাহককে ফিক্সড উইং বিমান বাহক হিসেবে রূপান্তর করেছে।
জাপানের ক্যারিয়ারগুলি চীনের ক্যারিয়ারগুলোর তুলনায় আকারে ছোট। তবে জাপানি পঞ্চম প্রজন্মের উন্নত প্রযুক্তির এফ -৩৫ স্টিলথ ফাইটার অনেক বেশি ক্ষমতাধর। চীনের সামরিক বাহিনীর শেনিয়াং জে -১৫ চতুর্থ প্রজন্মের ফাইটার এবং প্রযুক্তির দিক থেকেও এটি পিছিয়ে।
পূর্বে ভারতের সামরিক শক্তিকে চীনের সামরিক শক্তির তুলনায় পিছিয়ে বলে মনে করা হতো। কিন্তু পুরনো সেই ধারণায় এখন পরিবর্তন এসেছে। সামরিক শক্তিতে ভারতও এখন অন্যতম ক্ষমতাধর রাষ্ট্র। চীনের বিশাল সামরিক আধুনিকায়ন সত্ত্বেও হিমালয়ের সীমান্ত এখনও ভারতের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। চীনের সামরিক বাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) এর চেয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বড় প্রযুক্তিগত সুবিধা রয়েছে। ফরাসি রাফায়েল যুদ্ধবিমান, রাশিয়ান সুখোই এসইউ-৩০ স্কোয়াড্রনগুলির আধুনিকায়ন এবং সরবরাহের অপেক্ষা থাকা রাশিয়ান এস -৪০০ অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেমের ব্যবহার ভারতীয় বিমানবাহিনীকে শ্রেষ্ঠত্বের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়া নিজস্ব এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার এবং জেট ফাইটার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দেশটি ইতিমধ্যে বিশ্বের সামরিক ক্ষমতাধর দেশের তালিকায় নিজেদের স্থান করে নিয়েছে।
চীনের সম্প্রসারণ নীতিকে ঠেকিয়ে দিতে এখন যুক্তরাষ্ট্রকে এমন একটি সুরক্ষা কাঠামো ব্যবস্থা সরবরাহ করতে হবে যেন অন্যান্য দেশও সামরিক খাতে শক্তিশালী হয়ে উঠতে নিজস্ব প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে পারে। এটি কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ (কোয়াড) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হতে পারে। এর জন্য সংশ্লিষ্টদেশগুলোকে সমুদ্রসীমা রক্ষায় আরও মনোযোগী করতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/ অন্তরা কবির