যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ৪০ দিন ধরে চলা অচলাবস্থা বা শাটডাউনের কারণে বন্ধ সরকারি দপ্তরগুলো খোলার লক্ষ্যে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কয়েকজন সিনেটরের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছেন রিপাবলিকানরা। ওই সমঝোতা অনুযায়ী, রবিবার মার্কিন সিনেটে একটি পদ্ধতিগত ভোটে শাটডাউন বন্ধসংক্রান্ত প্রস্তাব পাসও হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা বিবিসি, রয়টার্স।
তবে এর পরও বিলটিকে মার্কিন কংগ্রেসের দুই কক্ষে বেশ কয়েকটি ধাপ পার হতে হবে, তারপর তা যাবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে। তিনি স্বাক্ষর করলেই মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ এ শাটডাউনের ইতি ঘটবে। এ পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে আরও কয়েক দিন লাগবে। ডেমোক্র্যাট পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বসহ বেশির ভাগ সিনেটর সমঝোতার বিরোধী হওয়ায় তাঁরা চাইলে বিলটি পাসের প্রক্রিয়া আরও শ্লথ করে দিতে পারেন। নিউ হ্যাম্পশায়ারের দুই ডেমোক্র্যাট সিনেটর ম্যাগি হাসান ও জন শাহিন এবং মেইনে থেকে স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচিত অ্যাংগাস কিংয়ের মধ্যস্থতায় হওয়া এ সমঝোতা শেষ পর্যন্ত সব বাধা অতিক্রম করলে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারি দপ্তরগুলোর জন্য বরাদ্দ অর্থ ছাড় হবে। এর বিনিময়ে ডিসেম্বরেই অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্টের আওতায় স্বাস্থ্যসেবাসংক্রান্ত ভর্তুকির মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে ভোট দিতে হবে, রয়টার্সকে এমনটাই বলেছেন বিল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা সম্পর্কে জ্ঞাত এক ব্যক্তি। শাটডাউন নিয়ে চলা রাজনৈতিক লড়াইয়ে ডেমোক্র্যাটরা এ স্বাস্থ্যসেবা ভর্তুকিকেই হাতিয়ার বানিয়েছেন। প্রস্তাব গৃহীত হলে শাটডাউন চলাকালে ট্রাম্প প্রশাসন যে গণছাঁটাই করেছে, তার মধ্যে কিছু অংশ চাকরি ফেরত পাবেন। আগামী এক বছর সম্পূরক পুষ্টিসহায়তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ থাকবে। ‘সামরিক বাহিনীর ও কোস্টগার্ডের সদস্য, ক্যাপিটল পুলিশের কর্মকর্তা, সীমান্তে টহল দেওয়া এজেন্ট, পরিবহন নিরাপত্তা প্রশাসনের (টিএসও) পরিদশর্ক, বিমান ট্রাফিক নিয়ন্ত্রকসহ সব ফেডারেল কর্মী তাঁদের বকেয়া বেতন পাবেন,’ বলেছেন সিনেট অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস কমিটির চেয়ার রিপাবলিকান সিনেটর সুসান কলিনস। বেশ কয়েকজন ডেমোক্র্যাট রিপাবলিকানদের সঙ্গে সমঝোতায় গেলেও সিনেটের ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। এদিকে ৪০ দিন ধরে চলা কেন্দ্রীয় সরকারের সর্বস্তরে শাটডাউনের (অচলাবস্থা) কারণে বন্ধ সরকারি দপ্তরগুলো খোলার লক্ষ্যে ডেমোক্রেটিক পার্টির ৯ সিনেটরের সঙ্গে রিপাবলিকানদের একটি সমঝোতা হলেও বাংলাদেশিসহ ৪ কোটি আমেরিকান খাদ্যসংকটে পড়েছে। খাদ্য ভর্তুকির অর্থ নিয়েও অনিশ্চয়তা কাটেনি। এমনকি আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীবাহী বিমান চলাচলেও যে হ-য-ব-র-ল অবস্থা চলছে। -রয়টার্স ও সিএনএন
৪০ দিন ধরে চলা শাটডাউনের কারণে বহু সরকারি কর্মীর চাকরি ঝুলে আছে, প্রভাব পড়েছে খাদ্যসহায়তা, পার্ক ও ভ্রমণেও। বিমান ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কর্মীর ঘাটতি চলতি মাসের শেষ দিকে থ্যাঙ্কসগিভিংয়ের ছুটির ব্যস্ত সময়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে যাতায়াতব্যবস্থায় ভয়াবহ বিঘ্ন ঘটাতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।