মঙ্গলবার, ৭ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক হতে হবে

মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী

পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক হতে হবে

ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী বলেছেন, আগামীতে কালো টাকা ও পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। তিনি বলেন, গত বছর ইসির সংলাপে বলেছি, নির্বাচন কমিশনকে কারও প্ররোচনায় নয়, বিচার-বিবেচনার নিরিখে নির্বাচনে ভোটের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, নির্বাচনকালে প্রার্থী ও ভোটাররা যাতে শ্বাসরুদ্ধকর এবং বিভীষিকাময় পরিস্থিতির শিকার না হন সেদিকে নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। নির্বাচনে অনৈতিকভাবে জয়ের প্রয়াসকে প্রতিহত করতে হবে। আবুল হাসানাত আমিনী বলেন, পোলিং বুথে সব প্রার্থীর এজেন্টদের নির্ভয়ে কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি কেন্দ্রের ফলাফল জনসমক্ষে ঘোষণা করতে হবে এবং প্রত্যেক প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের সার্টিফিকেট ইস্যু বাধ্যতামূলক করতে হবে। স্পর্শকাতর এলাকায় সেনাবাহিনী নিয়োগ করতে হবে। প্রার্থীদের জন্য অভিন্ন পোস্টার, নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন, রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচন কমিশন থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। ইসলামী দলগুলো প্রসঙ্গে আবুল হাসানাত আমিনী বলেন, দলগুলো দ্বাদশ নির্বাচন সামনে রেখে সংগঠন গোছানোর কাজ করছে। পাশাপাশি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও পর্যবেক্ষণ করছে। ইসলামী ঐক্যজোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইসলামী ঐক্যজোট স্বতন্ত্র পথে চলছে। কোনো জোটে নেই। তবে আমরা ইসলামী দলগুলোর ঐক্যের পক্ষে। দেশজুড়ে পরিকল্পনামাফিক স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। স¯প্রতি দলের মজলিসে শূরার বৈঠকে দেশব্যাপী ইসলামী ঐক্যজোটের সাংগঠনিক ভিত্তি গতিশীল ও বেগবান করার সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং চলতি বছরই কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করে দলকে ঢেলে সাজানো হবে ইনশা আল্লাহ। তিনি বলেন, ইসলামী ঐক্যজোট নির্বাচনমুখী দল। তবে ২০১৪ সালে অংশগ্রহণ করিনি। ২০১৮ সালে দলীয় সরকারের অধীনে সব দল অংশগ্রহণ করেছিল। আমরাও অংশ নিয়েছিলাম। এবারের নির্বাচন নিয়েও আমরা দেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। দলের মজলিশে শূরার সদস্যদের সিদ্ধান্ত ছাড়া এ ব্যাপারে চূড়ান্ত মন্তব্য করা মুশকিল। দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনৈতিক সংঘাত, খাদ্য ও জ্বালানি সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ভূমিকম্প, বন্যা, খড়াসহ দুর্যোগের কারণে বিশ্ব এক কঠিন সময় অতিক্রম করছে। অন্যদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত বিশ্বকে নতুন করে সংকটে ফেলে দিয়েছে। ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কমে গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। বিদ্যুৎ, গ্যাস, সার ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষের ওপর চাপ বিপুল বেড়েছে। তিনি বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সার্বিকভাবে ভালো বলা যায় না। দুর্নীতি, চুরি-ডাকাতি, খুন, অবৈধ দখল, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস-নৈরাজ্য-দখলদারিত্ব চলছেই। চলমান মেগা প্রজেক্টগুলোর অর্থ সংকট কাটাতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তবে প্রজেক্টগুলোতে বরাদ্দকৃত অর্থের সদ্ব্যবহার হচ্ছে কি না, নাকি দুর্নীতির মাধ্যমে সিস্টেম লস হচ্ছে। পরিকল্পনা কমিশনকে এ বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে। জনগণের এ কষ্টার্জিত টাকার অপব্যবহার যেন না হয় এটা নিশ্চিত করা সময়ের দাবি। সরকারের সফলতা ও ব্যর্থতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের সফলতা-ব্যর্থতা দুটোই আছে।

সর্বশেষ খবর