আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের অন্যতম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির ফলে দেশে কৃষি উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। স্বাধীনতার পর যেখানে ১ কোটি ১০ লাখ টন চাল উৎপাদন হতো, সেটি প্রায় ৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে এখন ৩ কোটি ৮৭ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। সরকারের এখন লক্ষ্য হলো এই অর্জনকে টেকসই করার পাশাপাশি সকলের জন্য পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা দেয়া।
শনিবার সকালে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর মুশুদ্দি রেজিয়া কলেজ থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) ‘গবেষণা অগ্রগতির বার্ষিক কর্মশালার’ উদ্বোধনী বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশের শিক্ষিত তরুণরা নিজের উপর নিরর্ভশীল হতে পারবে। বাকৃবি রিসার্চ সিস্টেমকে কার্যকর গবেষণা পরিচালনার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কৃষি উন্নয়নে যে বিস্ময়কর সাফল্য অর্জিত হয়েছে। সেটিকে আমরা সামনে এগিয়ে নিতে চাই। টেকসই করতে চাই।
জনসংখ্যা বৃদ্ধি, চাষযোগ্য জমি হ্রাসসহ নানা কারণে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখতে প্রয়োজন আরও উন্নত, আরও উৎপাদনশীল জাতের ধান, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসল। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাকৃবির শিক্ষক ও গবেষকদেরকে অংশীদার হতে হবে। কার্যকর গবেষণা করে ধান, বিভিন্ন শাকসবজি, ফলমূল, পোল্ট্রি ও প্রাণিসম্পদের উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার গবেষণার ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করবে। আমরা আশা করব, আপনারা গবেষণা করে হাঁস-মুরগী, গরু ছাগলের আরও উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করবেন। ধান, শাকসবজি, ফলমূল ও অন্যান্য অর্থকরী ফসল যা বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিতে বিপ্লব এনেছেন। সব রকমের সহযোগিতা দিয়ে কৃষকের পাশে রয়েছেন। তাঁর লক্ষ্য শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনই নয়, বরং কৃষির উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষকের জীবনমানকে উন্নত করা; গ্রামকে শহরে রূপান্তর করা। কৃষি নিয়ে এখন তাঁর স্বপ্ন হলো, সারা পৃথিবীতে আমরা শাকসবজি, ফলমূল, মাছ, মাংস, হাঁস-মুরগী রপ্তানি করব।
বাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক আবু হাদী নূর আলী খানের সভাপতিত্বে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেসবাহুল ইসলাম, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম, বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফুল হাসান, বাউরেসের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক মাহফুজুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় অনলাইনে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষক, গবেষক ও অংশগ্রহণকারী সংযুক্ত ছিলেন।
দুই দিনব্যাপী কর্মশালায় ২০২০ সালে সম্পন্ন হওয়া বাকৃবির বিভিন্ন অনুষদের সর্বমোট ৪৭৭টি গবেষণা প্রকল্পের ফলাফল উপস্থাপন করা হবে। কর্মশালায় মোট ১৯টি টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হবে।
পরে কৃষিমন্ত্রী টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে নিজ গ্রামে মুশুদ্দি রেজিয়া কলেজে কম্পিউটার ল্যাব উদ্বোধন করেন। এ সময় মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার তরুণ সমাজের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছে। তরুণ যুবসমাজকে শিক্ষিত, দক্ষ ও আতœনির্ভশীল করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফলে আজকে প্রত্যন্ত গ্রামেও কম্পিউটার ল্যাব স্থাপিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে আমরা যদি তরুণ সমাজকে প্রশিক্ষণ দিতে পারি তাহলে ভবিষ্যতে এদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আমাদের তরুণেরা আউটসোর্সিংয়ে আরও দক্ষতা অর্জন করতে পারবে ও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হবে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত