মামলার রায় বা আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে অহেতুক বিলম্ব না করতে বিচার বিভাগকে তাগিদ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলন-২০১৫ এর উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, “একটি দরখাস্তের শুনানি সমাপ্ত হবার পর বা মোকদ্দমার যুক্তিতর্ক শুনানির পর আদেশ লাভে বা রায় প্রকাশিত হতে যাতে বিলম্ব না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রায় বা আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে অহেতুক বিলম্ব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
তিনি আরও বলেন, “মামলা পরিচালনায় সম্মানিত আইনজীবীদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। তাই অহেতুক বিলম্ব বা অত্যাধিক আর্থিক চাপের কারণে বিচার কার্যক্রম যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় এবং বিচারপ্রার্থীরা যাতে ন্যায় বিচার পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।”
দ্রুত মামলার রায় হলে বিচারকদের ওপর জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাবে বলে মন্তব্য করে আবদুল হামিদ আরও বলেন, “এতে বিচার বিভাগের প্রতি যেমন জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাবে, তেমনি আপনারাও বিবেকের নিকট স্বচ্ছ থাকবেন।... ‘জাস্টিস ডিলেইড, জাস্টিস ডিনাইড’- আমরা চাই না এ প্রবাদটি আমাদের বিচার ব্যবস্থায় প্রচলিত থাকুক।”
অনুষ্ঠানে বিচারক ও মামলার সংখ্যায় ভারসাম্য আনার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, “আমাদের বিচার ব্যবস্থার অন্যতম সমস্যা বিচারে বিলম্ব এবং মোকদ্দমার জট। এ বিলম্বের কারণ বহুবিধ। বিচার কার্যে কাঙ্ক্ষিত গতি আনয়নের জন্য পর্যাপ্ত বিচার কক্ষ, বিচারকের শূন্যপদে নিয়োগ এবং বিচারক ও মোকদ্দমার সংখ্যায় যুক্তিসঙ্গত ভারসাম্য রক্ষা করা আবশ্যক।”
পক্ষপাতহীনভাবে বিচার করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষের শেষ ভরসার স্থল আদালত। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সব ধরনের ভীতি ও প্রীতির উর্ধ্বে থেকে এবং সর্বোচ্চ নিষ্ঠা ও সততা বজায় রেখে বিচারকগণ পক্ষপাতহীনভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করবেন, এটাই সবার কাছে প্রত্যাশিত।”
অনুষ্ঠানে ২০০৫ সালে ১৪ নভেম্বর বোমা হামলায় নিহত ঝালকাঠি জেলা জজ ও দায়রা আদালতের সিনিয়র সহকারী জজ জগন্নাথ পাঁড়ে এবং মো. সোহেল আহমেদের পরিবারকে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে অনুদান দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ওই দু্ই বিচারকের স্ত্রীর হাতে দুই লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র তুলে দেন।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের সদস্য জ্যেষ্ঠ জেলা জজ মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার।
বিডি-প্রতিদিন/২৬ ডিসেম্বর, ২০১৫/মাহবুব