ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় দুইবারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য এনামুল হক জজ মিয়া মারা গেছেন। একসময়ের প্রতাপশালী এই সংসদ সদস্য বুধবার সকালে উপজেলার সালটিয়া ইউনিয়নের পুকুরিয়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
সালটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল হক ঢালী জানান, বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যাসহ দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন সাবেক এই সংসদ সদস্য। স্ত্রী-সন্তানদের নামে বাড়ি-ভিটা সব লিখে দেয়ার পর থেকে তার শেষ জীবন কাটে অত্যন্ত কষ্টে। বাড়ি ভিটা না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পাওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের বসবাস করতেন তিনি।
জাতীয় পার্টির হয়ে ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসন থেকে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। একসময় ঢাকা ও গফরগাঁও পৌর শহরে বিলাসবহুল বাড়ি ছিল জজের। পরবর্তীতে তার সব সম্পদ স্ত্রী ও সন্তানদের নামে লিখে দিয়েছিলেন।
শেষ জীবনের ক্রান্তিলগ্নে এসে গফরগাঁও পৌর শহরে ১২ শতাংশ জমি মসজিদের নামে লিখে দেয়ার পর গৃহহীন হয়ে পড়েন সাবেক সংসদ সদস্য জজ মিয়া। এরপর থেকেই এক কক্ষের ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি; মেঝেতেই ঘুমাতেন। পরে সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরটি তাকে উপহার দেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকরির সময় জজ মিয়ার সঙ্গে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদের
পরিচয় হয়। স্বাধীনতার পর এরশাদ তার পালিত মেয়ে নাজমা আক্তারকে জজ মিয়ার সঙ্গে বিয়ে দেন। পরে এরশাদের হাত ধরেই জজ মিয়া রাজনীতিতে যুক্ত হন। জাতীয় পার্টি থেকে পাওয়া মনোনয়নে দুবার গফরগাঁওয়ের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জজ মিয়া।
জজ মিয়ার পরিবার জানান, বুধবার (১১ জানুয়ারি) বাদ জোহর পুখুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাঠে তার প্রথম জানাজা ও বাদ আসর গফরগাঁও সরকারি কলেজ মাঠে মরহুমের দ্বিতীয় জানাজা হয়। পরে চর শিলাশী জামে মসজিদ কবরস্থানে সাবেক এই সংসদ সদস্যের দাফন সম্পন্ন হয়। তার মৃত্যুতে জাতীয় পার্টিসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য গভীর শোক প্রকাশ করেন।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত