২১ অক্টোবর, ২০২১ ০৯:৪৮

সাকিবদের ‘সুলতান’ হওয়ার দিন

মেজবাহ্-উল-হক, মাস্কাট থেকে

সাকিবদের ‘সুলতান’ হওয়ার দিন

ফাইল ছবি

প্রতিপক্ষ পাপুয়া নিউগিনি। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ছয় নম্বর দলটির বিরুদ্ধে আজ বৃহস্পতিবার খেলতে নামবে পনেরো নম্বর দলটি। শুনতেই যেন হচ্ছে- এমনে এক অসম লড়াই। হ্যাঁ, বাংলাদেশ বনাম পিএনজি লড়াইটা একটু অন্যরকমই বটে। এই ম্যাচ পিএনজির জন্য অনেক বড় কিছু। যদি তারা বাংলাদেশ হারিয়ে দিতে পারে সেটা তাদের ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয় হবে। সেরা প্রাপ্তিও। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য?

বাংলাদেশের জন্যও এই ম্যাচটি মহাগুরুত্বপূর্ণ। সেটা প্রতিপক্ষ পিএনজি বলে নয়। বিশ্বকাপের টিকে থাকার লড়াই। সুপার টুয়েলভে যেতে হলে টাইগারদের জয়ের বিকল্প নেই। অবশ্য জয়-পরাজয়ের প্রসঙ্গটিও আসতো না, যদি না প্রথম ম্যাচে স্কটিশদের বিরুদ্ধে হারতো বাংলাদেশ। তখন হয়তো ওয়ার্মআপ ম্যাচের মুডেই খেলতে পারতেন ক্রিকেটাররা। কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও তার রিজার্ভ বেঞ্চ ঝালিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেতেন। উল্টো সেই ম্যাচটি এখন হয়ে গেছে ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ। হোক না প্রতিপক্ষ ‘পুঁচকে’ পাপুয়া নিউগিনি!

টি-২০ ক্রিকেটে যেকোনো সময় ‘অঘটন’ ঘটে যেতে পারে, তা বাংলাদেশের চেয়ে ভালো আর কে জানে! স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি হারই টাইগারদের অনেক বড় শিক্ষা দিয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুই সিরিজ জয়ের পর বাংলাদেশের স্বপ্নের ফানুসটা (আত্মবিশ্বাস) যেন অস্বাভাবিকভাবে বড় হচ্ছিল, প্রথম ম্যাচে হারার পর ফুটো হয়ে মুহূর্তেই চুপসে যায়! ঘরের মাঠে পারফরম্যান্স আর বিশ্বকাপের ভেন্যুতে পারফরম্যান্স যে এক নয় সেই বাস্তবতাটাও বুঝে গেছেন টাইগাররা। 
যদিও ওমানের উইকেটের সঙ্গে বাংলাদেশের উইকেটের আহামরি কোনো তফাৎ নেই।

মাহমুদুল্লাহরা হেরেছিলেন তাদের অতি আত্মবিশ্বাসের জন্য। তবে স্কটিশদের বিরুদ্ধে পরাজয় টাইগারদের জন্য ইতিবাচকও হতে পারে। কারণ ওই ম্যাচের পরই ক্যাপ্টেন মাহমুদুল্লাহ বুঝে গেছেন তার জাহাজ ঝড়ের কতটা তেজ সহ্য করতে পারবেন আর একই সঙ্গে দলের শক্তিমত্ত্বা সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। সবচেয়ে বড় লাভ হয়েছে ভুলগুলোও সামনে চলে আসায়।

১. পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ খুবই দুর্বল।
২. ওপেনিংয়ে সমস্যা। 
৩. পেস বোলিংয়ে নেই ধার।
৪. যাচ্ছেতাই ফিল্ডিং।
৫. স্লগ ওভারে দ্রুত রান তোলার মতো পাওয়ার হিটার নেই।

শেষের সমস্যাটি আগে থেকেই জানা। বাংলাদেশ দলে তো আর গেইল, পোলার্ডের মতো ব্যাটসম্যান নেই যে স্কোর বোর্ডে তোলপাড় করিয়ে ছাড়বেন। তবে এই সমস্যার একটা সমাধানও বের করেছিলেন ক্যাপ্টেন। সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘আমাদের পাওয়ার হিটার নেই, সে কারণে স্কিল হিটারেই মনোযোগী হতে হবে।’ কিন্তু প্রথম দুই ম্যাচে সেখানেও ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। তবে পাপুয়া নিউগিনির বিরুদ্ধে আজকের ম্যাচটি হতে পারে ভুল শোধরানোর ম্যাচ। নিজেদের ফিরে পাওয়ার ম্যাচ। 

আজ একদিকে যেমন টাইগারদের সামনে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি, অন্যদিকে এখান থেকেই নতুন করে শুরুর প্রত্যয়। কেননা, স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারের পর টাইগারদের মানসপটে যে ক্ষতের তৈরি হয়েছে, তা আজই শুকিয়ে যেতে পারে। ওমানের বিরুদ্ধে জয়ের পর যদিও অনেকটাই চাঙ্গা হয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু তারপরও পুরোপুরি প্রথম ম্যাচের কষ্টটা ভুলতে পারেননি ক্রিকেটাররা। 

আজ ওমানের এই আল আমিরাতে পাপুয়া নিউগিনির বিরুদ্ধে বড় জয় পেলে হয়তো সব কষ্টই দূর হয়ে যেতে পারে। আজকের ম্যাচটি তাই লাল-সবুজের নতুন করে জেগে ওঠার দিন। আজ আসলে ‘সুলতানাত ওমানে’ সাকিবদের ‘সুলতান’ হওয়ার দিন।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর