আজকাল পুরুষের আদর্শ ত্বক পরিচর্যার রুটিন নিয়ে গবেষণা করলে ২০ ধাপের কঠিন প্রক্রিয়া দেখতে পাবেন। নিশ্চয়ই একটি কার্যকর রুটিন এত জটিল হওয়ার কথা নয়! তবে এই তত্ত্বটি পরীক্ষা করার জন্য, ভোগ ম্যাগাজিন দুজন শীর্ষস্থানীয় চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের মতামত নেন। এখানে ড. ব্রেন্ডন ক্যাম্প এবং ড. নোয়া গ্র্যাচ পুরুষদের জন্য তাদের আদর্শ স্কিনকেয়ার রুটিন নিয়ে আলোচনা করেছেন যার মধ্যে অপরিহার্য ধাপগুলো আপনি কিছুতেই বাদ দিতে পারবেন না।
প্রথম ধাপ : ক্লিনজার : উভয় চর্মরোগ বিশেষজ্ঞই একমত যে, ত্বক পরিষ্কার করা যে কোনো দৈনিক রূপ-রুটিনে অপরিহার্য। ড. ক্যাম্প শুরুতে দিনে দুবার একটি ক্লিনজার ব্যবহারের পরামর্শ দেন। যা অতিরিক্ত তেল, ময়লা এবং দূষণ দূরীকরণে কার্যকরী। আপনি কী ধরনের ফেসওয়াশ ব্যবহার করবেন, তা ত্বকের ধরনের ওপর নির্ভর করবে। ড. গ্র্যাচের নিয়ম- ‘মৃদু, সালফেট-মুক্ত ক্লিনজার বেছে নিন, যা ত্বকের প্রয়োজনীয় তেল দূর করবে না।’
দ্বিতীয় ধাপ : এক্সফোলিয়েট : যদিও উভয় বিশেষজ্ঞই প্রতিদিন এক্সফোলিয়েটের পরামর্শ দেন না, তবে তারা নিয়মিত করার পরামর্শ দেন। ড. গ্র্যাচ বলেন, ‘সপ্তাহে অন্তত দুই বা তিনবার এক্সফোলিয়েট করা ভালো। কারণ, এটি মৃত ত্বকের কোষ দূর করে, লোমকূপের মুখ পরিষ্কার করে এবং চুলের বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে।’ যারা নিয়মিত শেভ করেন তাদের জন্য এটি আদর্শ। পণ্য হিসেবে তিনি স্যালিসিলিক অ্যাসিড বা গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের মতো উপাদানসহ রাসায়নিক এক্সফোলিয়েট ব্যবহারের পরামর্শ দেন। যা ত্বককে সহজে পুনরুজ্জীবিতকরণে সহায়তা করতে পারে।
তৃতীয় ধাপ : সিরাম : ক্লিনজিং এবং এক্সফোলিয়েশন করার পর, চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা সিরাম দিয়ে ত্বক প্রস্তুত করার পরামর্শ দেন। ড. গ্র্যাচ বলেন, ‘সিরাম হলো কনসেনট্রেটেড ট্রিটমেন্ট যা ত্বকের নির্দিষ্ট সমস্যা যেমন নিস্তেজতা, সূক্ষ্ম রেখা বা কালো দাগ দূর করে।’ একটি দারুণ সর্বজনীন সিরাম ভিটামিন সি, যা ত্বককে উজ্জ্বল করে এবং পরিবেশগত চাপ থেকে রক্ষা করে। ড. ক্যাম্পও এর উপকারিতার কথা উল্লেখ করে বলেন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এই উপাদানটির নিয়মিত ব্যবহার ত্বককে উজ্জ্বল করে এবং সূর্যের দাগের উপস্থিতি কমাতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি বা রেটিনলযুক্ত পণ্য কোলাজেন উৎপাদনকে উৎসাহিত করে এবং বলিরেখা কমায়।
চতুর্থ ধাপ : ময়েশ্চারাইজার : এটি সম্ভবত ত্বকের যত্নের সবচেয়ে সর্বজনীনভাবে পরিচিত ধাপ, ময়েশ্চারাইজিং ত্বককে হাইড্রেটেড এবং ভরাট রাখে। ড. ক্যাম্প নির্দেশ দেন, ‘একটি সিরাম বা ট্রিটমেন্ট প্রয়োগ করার পর, সক্রিয় উপাদানগুলো ধরে রাখতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।’ এমনকি যদি একটি সিরাম ব্যবহার না করেন তবে ত্বকের বাধা অখণ্ডতা বজায় রাখতে এবং ত্বকের হাইড্রেটেড থাকার ক্ষমতা উন্নত করতে একটি ফেস ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। ড. গ্র্যাচ যোগ করে বলেন, ‘তৈলাক্ত ত্বকের পুরুষদেরও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত, তবে একটি হালকা ও তেল-মুক্ত বিকল্প ব্যবহার করাই ভালো।
পঞ্চম ধাপ : এসপিএফ : সবশেষে উভয় চর্মরোগ বিশেষজ্ঞই রূপ-রুটিনে এসপিএফ দিয়ে শেষ করার পরামর্শ দেন। মনে রাখবেন, প্রতিদিন সানস্ক্রিন ব্যবহার করা আবশ্যক। ড. ক্যাম্প বলেন, ‘আপনার ত্বকের যত্নের রুটিনে প্রতিদিন এসপিএফ-মিশ্রিত ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন এবং সারা বছর ব্যবহার করুন। যা ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে এবং অকাল বার্ধক্যের ওপর ইউভি বিকিরণের প্রভাব কমাতে পারে। এর মধ্যে সূক্ষ্ম রেখা, বলিরেখা এবং কালো দাগ হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করে। ড. গ্র্যাচও একমত, অন্তত ব্রড-স্পেকট্রাম এসপিএফ ৩০ বা তার বেশি ব্যবহারের পরামর্শ দেন।