গাছে গাছে ঝুলছে তরমুজের মতো বড় সুস্বাদু ফল রক মিলন বা সাম্মাম ফল। বাইরে খসখসে ভিতরে পেঁপে রঙের এই সাম্মাম ফল খেতে মিষ্টি, রসালো আর পুষ্টিগুণে ভরপুর। এটি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ঝিনাইদহের চুটলিয়া গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা ও ফ্রিল্যান্সার তরিকুল ইসলাম রনি প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেছেন এই সাম্মাম চাষ। প্রথমবারের মতো নতুন জাতের এই ফল চাষে সাড়া ফেলেছেন রনি। তিনি অর্থনীতি থেকে মাস্টার্স পাস করেছেন। মাত্র ২০ শতক পতিত জমিতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিদেশি প্রযুক্তির মোটা পলিথিন ব্যবহার করে তৈরি করেছেন শেড। আর সেখানেই হয়েছে এই সাম্মাম ফল। এলাকার মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে ফলটি। ব্যাপক চাহিদা থাকায় পাকার সঙ্গে সঙ্গে সেট থেকে রসালো ফলটি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। কৃষিতে ভিন্ন কিছু চাষ করার আশায় মূলত একটি কোম্পানি থেকে সাম্মামের বীজ সংগ্রহ করেন রনি। এরপর শেডের ভিতরে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে এই ফল চাষ করেন তিনি। মরু অঞ্চলের সুস্বাদু ও মিষ্টি জাতের ফল এই সাম্মাম। দেখতে অনেকটা বেল কিংবা বাতাবি লেবুর মতো হলেও ভিতরের অংশ দেখতে পেঁপের মতো। সাম্মাম ফলের গাছে সামান্য সার ও কীটনাশক দিলে তেমন কোনো রোগবালাই হয় না। চাষের জন্য শেড করে দিলেই মাত্র দেড় মাসের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে গাছে। সাম্মাম ফল সাধারণত দুই কেজি থেকে আড়াই কেজি বা পাঁচ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। প্রতি কেজি সাম্মাম খুচরা থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়। খরচের তুলনায় এই ফলের দামও বেশি। তাই লাভও বেশি।
বর্তমানে সাম্মাম চাষের পাশাপাশি নিজের ফার্মেও চারা উৎপাদন করছেন তিনি। তরুণ উদ্যোক্তা তরিকুল ইসলাম জানান, ‘যখন চাষাবাদে আসার কথা চিন্তা করি তখন মনে করি কৃষিতে ভিন্নধর্মী কিছু করার। সেই থেকে অনেক ঘাঁটাঘাঁটি করার পর যখন দেখলাম উচ্চমূল্যের ফসলের ভিতরে রকমিলন বা সাম্মাম ফল চাষ মোটামুটি ভালো। তারপর একটি কোম্পানি থেকে বীজ সংগ্রহ করি। এরপর শেডের ভিতরে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে এ চাষ করেছি। দেড় মাসের মধ্যেই গাছে ফল আসতে শুরু করে। তিন মাসের মধ্যেই পরিপক্ব হয় সাম্মাম। এ পর্যন্ত কয়েক লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছি।’ ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ষষ্টি চন্দ্র রায় বলেন, কৃষির নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছেন তরুণ উদ্যোক্তা রনি। তার এই সাম্মাম ফলের চাষ বেশ আলোড়ন তৈরি করেছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই