জাতীয় স্মৃতিসৌধে অজ্ঞাতনামা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবরে জুতা পায়ে দর্শনার্থীদের অবাধে বিচরণের ঘটনা ঘটলেও দেখার কেউ নেই। শনিবার মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে আশা দর্শনার্থীদের অনেককেই জুতা পায়ে কবরের উপর অবস্থান করতে দেখা গেছে। তবে তাদের সচেতন করতে সেখানে কোন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রহরী বা সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের দেখা যায়নি। এমনকি স্মৃতিসৌধ কর্তৃপক্ষও ছিল নীরব ভূমিকায়।
শনিবার প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা নিবেদনের পরপরই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় স্মৃতিসৌধ। এসময় দূরদুরান্ত থেকে ছুটে আশা দর্শনার্থীদের অনেকটা অসচেতনভাবেই এসব নাম না জানা মুক্তিযোদ্ধাদের কবরে হাঁটাহাঁটি করতে ও ছবি তুলতে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে।
জানা যায়, স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গনে মোট ১১টি স্থানে অজ্ঞাতনামা শহীদদের কবর রয়েছে। সরজমিনে ঘুরে প্রায় প্রতিটি কবরেই এমন দৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। নানান বয়সের এসব দর্শণার্থীদেরকে বিভিন্ন স্টাইলে কখনো গ্রুপ ফটো আবার কখনো সেলফি তুলতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে কয়েকজন দর্শনার্থীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তারা দুঃখ প্রকাশ করে বিষয়টি না জানার কথা স্বীকার করেন।
গণকবরের উপরে ছবি তুলছেন কেন জানতে চাইলে ঢাকা কলেজের রেজাউল করিম নামের এক ছাত্র বলেন, "না জেনে উঠে পড়েছি। তাছাড়া এখানে তো বলার মতো কেউ নেই, দেখলাম সবাই তুলছে তাই আমরাও ছবি তুলছি।"
অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টিকে এড়িয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা শুধু ফুল দিতে আসা রাজনৈতিক নেতৃৃবৃন্দের নিরাপত্তা রক্ষা করতেই দেখা গেছে। এছাড়া স্মৃতিসৌধ কর্তৃপক্ষকেও এব্যাপারে কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। অন্যান্য দিন স্মৃতিসৌধের কর্মচারীরা থাকলেও শনিবার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তাদের দেখা যায়নি।
স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসা সিরাজুল ইসলাম নামের এক মুক্তিযোদ্ধা এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, "এটা মেনে নেওয়া যায় না, এভাবে আমার শহীদ ভাইদের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করা করা হচ্ছে।"
এ ব্যাপারে যোগাযোগের চেষ্টা করেও স্মৃতিসৌধ সংশ্লিষ্ট অফিসে কোন কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৬ মার্চ, ২০১৬/ রশিদা