শিরোনাম
১৬ জুন, ২০২১ ২২:১৮

মুক্তিযোদ্ধাদের ‘গার্ড অব অনারে’ নারীর বিকল্প প্রস্তাব বাতিলের দাবি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

মুক্তিযোদ্ধাদের ‘গার্ড অব অনারে’ নারীর বিকল্প প্রস্তাব বাতিলের দাবি

মুক্তিযোদ্ধাদের ‘গার্ড অব অনারে’ নারীর বিকল্প প্রস্তাব বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন।

মৃত্যুর পর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী ইউএনও’দের বাদ দিয়ে বিকল্প খুঁজতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির প্রস্তাব বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি’র ব্যানারে এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এই দাবি জানান সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। এসময় প্রস্তাবের প্রতি তীব্র নিন্দাও জানান তারা।

সমাবেশে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, এটি শুধু তিন-চার লাইনের সুপারিশ নয়, এটার মধ্যে অনেক বিষয় ও অনেক গভীরতা আছে, তা বুঝে আমাদের এর বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। আজকে প্রশাসনে থাকা সকল নারীরা আমরা রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনে সহিংসতার শিকার হয়েছি। যারা এই সুপারিশ দিয়েছেন তারা আমাদের প্রশাসনকে ধর্ষণ করতে চেয়েছে, তারা সহিংসতার শিকার করতে চেয়েছে। এর বিরুদ্ধে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, প্রশাসনকে সচেতন হতে হবে।

এমন সুপারিশকে সংবিধানের ২৮ নম্বর অনুচ্ছেদের পরিপন্থী উল্লেখ করেন ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেন, যারা সমান নারী-পুরুষ অধিকারের পরিপন্থী কাজ করেছেন, তারা অসাংবিধানিক কাজ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিকশিত করা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে গবেষণা করা। আজ মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে অনেক দূরে চলে যাচ্ছে। এসময় তিনি বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণকারীদের শাস্তির দাবি জানান।

পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘গার্ড অব অনারে’র এই রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানকে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সাথে জড়িত করাটা এক ধরনের উসকানির পায়তারা। এই সুপারিশের মধ্যে অবশ্যই কম করে হলেও তিনটি দিক আছে, সাম্প্রদায়িকতার পক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে ও সংবিধানের বিরুদ্ধে। এগুলো করতে গেলে অবশ্যই বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পদ্ধতির বাইরে যাবে। সাংসদদের আরও দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানান তিনি।

মানবন্ধনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলমের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সদস্য রাখী জামান, উই ক্যান বাংলাদেশের সদস্য সুরাইয়া পারভীন, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের সদস্য সেলিনা পারভীন প্রমুখ। মানববন্ধনে সংহতি জানায় আদিবাসী যুব পরিষদ।

উল্লেখ্য, সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা যাওয়ার পর তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানায় সংশ্লিষ্ট জেলা/উপজেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক বা ইউএনও সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে সেখানে থাকেন। কফিনে সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী কর্মকর্তা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এক বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা ওঠার পর গার্ড অব অনার দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী ইউএনওদের বিকল্প খুঁজতে সরকারের কাছে সুপারিশ রাখা হয়।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর