বরিশাল সিটি ভোটে না থেকেও আলোচনায় বিএনপি। বিএনপি নেতারা তাদের নেতাকর্মীদের ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে তাদের বিশাল সমর্থক গোষ্ঠী কোনো না কোনোভাবে কেন্দ্রে যাবে বা কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের কেন্দ্রে নিয়ে যাবে বলে ধারনা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিএনপি’র এই সমর্থক গোষ্ঠীর ভোট যে দিকে যাবে সেদিকে পাল্লা ভারি হতে পারে বলে ধারনা করছেন বিশ্লেষকরা। এদিকে দলের নির্দেশনা উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগ সমর্থক এক কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক মজনু বেপারীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বরিশাল সিটি নির্বাচনে বিএনপি নেই। তবে তাদের দলের সাবেক ও বর্তমান ১৯ জন নেতা এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে অংশ নেয়ায় মেয়র পদে ছাত্রদল কেন্দ্রিয় কমিটির সাবেক সদস্য কামরুল আহসান রূপন এবং কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী আরও ১৮ জনকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। তারপরও থেমে নেই বিএনপি নিয়ে আলোচনা। তাদের অনেক নেতা ওয়ার্ড পর্যায়ে বিভিন্ন কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। এমনকি আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থীর কাছ থেকে বিএনপি’র অনেক নেতা নগদ অর্থ নিয়েছেন বলে গত শনিবার বরিশাল প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে অভিযোগ করেছেন বিএনপি থেকে আজীবন বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন। আবার বিএনপি’র অনেক নেতা তার (রূপন) সাথে আছেন বলেও তিনি দাবি করেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, বিএনপি তাদের নেতাকর্মীদের ভোট কেন্দ্রে যেতে বারন করেছে। বিএনপি’র বিভিন্ন কমিটির পদে আছেন এমন দেড় থেকে দুই হাজার নেতাকর্মী কেন্দ্রে না যেতে পারেন। কিন্তু তাদের বিশাল সমর্থক গোষ্ঠী কোন না কোনভাবে কেন্দ্রে যাবে। বিশেষ করে বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের কেন্দ্রে যেতে প্ররোচিত করবে। ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তারা মেয়র পদেও ভোট দেবেন। তাদের ভোট কার পক্ষে যায় সেটা দেখার বিষয়।
বরিশাল মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী আবুল কালাম আজাদ বলেন, নৌকা বিএনপি’র আজন্ম শত্রু। তাদের ভোটাররা নৌকায় ভোট দিতেই পারেনা। আবার ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখায়ও তারা ভোট দেবে বলে মনে হয় না। সে ক্ষেত্রে বিএনপি’র সাবেক মেয়র পুত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন কিংবা জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপসও বিএনপি’র সমর্থখগোষ্ঠীর ভোট পেতে পারেন।
টিআইবি’র আদলে গঠিত বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা বলেন, বিএনপি তাদের কর্মী-সমর্থকদের ভোট যেতে নিষেধ করেছে। তবে তাদের বিশাল সমর্থকগোষ্ঠী এই নির্দেশনা মানবে না। গত কয়েক দিনের মধ্যে প্রচার প্রচারনায় ভোটারদের মাঝে উৎসাহের সৃষ্টি হয়েছে। তারা ভোট কেন্দ্রে যেতে আগ্রহী। বিএনপি’র সমর্থক গোষ্ঠী নৌকায় ভোট দেবেনা- এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। সে ক্ষেত্রে তাদের বেশীরভাগ ভোট যেতে পারে ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা মার্কায়। জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস এবং বিএনপি’র প্রয়াত সাবেক মেয়র পুত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপনও বিএনপি সমর্থকদের ভোট পেতে পারেন বলে ধারনা করছেন তারা। বিএনপি’র সমর্থকগোষ্ঠীর ভোট যে প্রার্থী পাবেন তার জয়ের সম্ভাবনা তত বেশী বলে ধারনা রাজনৈতিক বিশ্লেষক শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শাহ সাজেদার।
যদিও আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাত নতুন বরিশাল গড়তে সব দলমতের ভোট প্রত্যাশা করেছেন।
জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমও বিভিন্ন গণসংযোগে বরিশালের উন্নয়নে দলমত নির্বিশেষে সবার ভোট চেয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপি থেকে আজীবন বহিষ্কৃত হয়েও বিএনপি’র সমর্থকগোষ্ঠীর ভোট প্রত্যাশা করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল